হতাশার প্রহর কাটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে পাক পেসার

Published: 18 January 2021

পোস্ট ডেস্ক : হতাশার প্রহর কাটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে পাকিস্তান দলে সুযোগ পেয়েছেন ডানহাতি মিডিয়াম ফাস্ট বোলার হাসান আলী। সিরিজে এই উদীয়মান পেসার কি নিজের জাত চেনাতে পারবেন? নাকি হতাশার চাদরে নিজেকে মুড়িয়ে রাখবেন?

হাসান আলীর ভক্তদের চাওয়া এই সিরিজে দূর্দান্ত পারফর্ম করে ক্রিকেটে নিয়মিত হবেন হাসান আলী।

পাকিস্তানের পেসারের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ দুটির প্রথমটি হচ্ছে – উইকেটপ্রাপ্তির পর অদ্ভূত উদযাপনের মাধ্যমে ইনজুরিতে পড়েন হাসান। অন্যটি আরও হাস্যকর। সেটি হলো – বিয়ের পর ক্রিকেটে মনযোগ হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।

সর্বশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলার পর এ দুই অভিযোগ খণ্ডনের সুযোগ হয়নি হাসানের। তবে সম্প্রতি পাকিস্তানের ঘরোয়া লিগ কায়েদ-ই-আজম ট্রফিতে অসাধারণ নৈপূণ্য দেখিয়ে সমালোচদের জবাব দিয়েছেন হাসান।

টুর্নামেন্টে বল হাতে নেন ৪৩ উইকেট। ব্যাট হাতে ২৭৩ রান করেন। ফাইনালে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তাক লাগিয়ে দেন। এমন নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখিয়ে ফের জাতীয় দলে স্থান করে নিয়েছেন হাসান।

মাঠের পারফরম্যান্স নিয়ে হাসান আলীর জবাব, বিয়ে করে খেলায় মনযোগ হারাননি। তার উইকেটপ্রাপ্তির উদযাপনও চোট বাধাতে পারেনি।

তবে ঘরোয়া আর আন্তর্জাতিকে বেশ ফারাক রয়েছে। এবার আন্তর্জাতিক পারফরম্যান্সে একই বার্তা দিতে প্রস্তুত ২৬ বছর বয়সী এ সুইং বোলার।

পাকিস্তানের একটি ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি সে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেন হাসান।

বললেন, লোকে বলে- আমি নাকি বিয়ের কারণে ক্রিকেটে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি। উদযাপন করে ইচ্ছা করে চোটে পড়ছি। হাস্যকর সব কথা। আমি জানাতে চাই- ওই লোকগুলোর কোনো ধারণাও নেই, ক্রিকেটারদের কতটা কঠিন সময়ের মধ্যে যেতে হয় এবং ক্যারিয়ারে কতটা ওঠা-নামা থাকে।

এমন অভিযোগকারীদের একহাত নেন হাসান।

তিনি বলেন, এ পৃথিবীতে দুই ধরনের লোক আছে। কেউ দুঃসময়ে পাশে থাকে, কেউ স্রেফ সমালোচনাই করে যায়। ক্রিকেটে সমালোচকদের আমি সবসময় স্বাগত জানাই। এতে নিজের পারফরম্যান্স বিষয়ে জাগ্রত থাকা যায়। কিন্তু অনেকে সেই সমালোচনার গণ্ডি মাঠ পেরিয়ে ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলেন। আমি বুঝি না, ব্যক্তিগত জীবনকে কেন সমালোচনার লক্ষ্য বানানো হয়!

এরপরও তো কয়েকবার ইনজুরিতে পড়েছেন সে প্রশ্নে হাসান বলেন, ওয়ার্কলোড অনেক বেশি হওয়াতেই এটা হচ্ছিল। আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর থেকেই টানা খেলার মধ্যে ছিলাম আমি। পাকিস্তানের হয়ে ৩ সংস্করণে খেলে যাচ্ছিলাম। কয়েকটি লিগেও খেলছিলাম পাশাপাশি। বিশ্রাম নিতেই পারছিলাম না । ম্যাচ বা ক্যাম্পের মাঝে তাই রিকভারির সময় ততটা পাইনি।

এরপর হাসানের পাল্টা প্রশ্ন, ফাস্ট বোলাররাও মানুষ। তারা তো মেশিন নয়। আমরা কেবল বোলিং করেই যাব এবং দিনের পর দিন ফিট থাকব, এতটা আশা করা উচিত?

অদ্ভূত উদযাপনের কারণে চোট বাধানোর অভিযোগের বিষয়ে হাসান বলেন, এটা হাস্যকর কথা। পিসিবির মেডিকেল টিম তো আমার উদযাপনে সমস্যা দেখে না। লোকে পছন্দ করুক আর না করুক, আমি এই উদযাপন চালিয়েই যাব।

এ পর্যন্ত ৯ টেস্ট খেলে ৩১ উইকেট শিকার করেছেন হাসান আলী। ৫৩ ওয়ানডেতে উইকেট পেয়েছেন ৮২টি। টি-টোয়েন্টিতেও চমৎকার পারফর্ম করেছেন এ সুইং বোলার। ৩০ ম্যাচে ৩৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি।