গোয়াইনঘাটে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে যেভাবে খুন করে হিফজুর
সিলেট অফিস :
গোয়াইনঘাটে স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে হত্যায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন স্বামী হিফজুর রহমান। রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে গোয়াইনঘাট আমল গ্রহণকারী হাকিম আদালতের বিচারক আলমগীর হোসেনের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ‘সেদিন স্বপ্নে অনেক মাছ ঘরে ঢুকেছে দেখেছিলেন। মাছ মনে করে বটি দা দিয়ে কুপিয়ে মাছ টুকরো টুকরো করেছেন। পরে বুঝতে পারেন স্ত্রী ও দুই সন্তানকে কুপিয়েছেন।’ গত ১৬ জুন গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হিফজুর বলেন, ১৫ জুন দিবাগত রাতে ঘুমানোর পর স্বপ্নে দেখেন ঘরের ভেতর অনেক মাছ ঢুকেছে। পরে তিনি স্বপ্নের মধ্যে সেই মাছ কেটে টুকরো টুকরো করেন।
পরে হিতাহিত জ্ঞান ফেরার পর তিনি বুঝতে পারেন তিনি স্বপ্ন দেখে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে খুন করে ফেলেছেন। তার নিজের শরীরেও দা দিয়ে আঘাত করেন হিফজুর। সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া অফিসার) লুৎফর রহমান বলেন আদালতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যায় হিফজুরের দায় স্বীকারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জবানবন্দি রেকর্ডের পর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন সকালে গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে হিফজুরের স্ত্রী আলেমার বেগম (৩০), ছেলে মিজান (৮) ও তিন বছরের মেয়ে আনিছার লাশ উদ্ধার করা হয়। সে সময় হিফজুরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে প্রথম থেকেই তাকে সন্দেহ করে পুলিশ। এই ঘটনায় আমোর বাবা আইয়ুব আলী অজ্ঞাতদের আসামী করে মামলা করেন।
গত ১৯ জুন সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হিফজুরকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন ২০ জুন তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক দিলীপ কান্ত নাথ।
আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষের একদিন আগেই বৃহস্পতিবার গোয়াইনঘাট আলম গ্রহণকারী আদালতের বিচারক আলমগীর হোসেনের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন হিফজুর।