মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের নিকট স্মরকলিপি
চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৫০০ টাকা করার দাবি

Published: 27 June 2021

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা :


বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ফেডারেশন চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১১৭ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া মজুরি বোর্ডের খসড়া সুপারিশের বিষয়ে আপত্তি তুলেছে। তারা দৈনিক মজুরি ৫০০ টাকা করার দাবি জানিয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক সত্য নাইডু ও সাধারণ সম্পাদক দীপংকর ঘোষ স্বাক্ষরিত মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো এক স্মারকলিপিতে এই আপত্তি ও দাবির কথা জানানো হয়।

রোববার জেলা প্রশাসকের কাছে এই স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা আইনজীবী আবুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক দীপংকর ঘোষ, সদস্য কিরণ শুক্লবৈদ্য প্রমুখ।

 

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালিনীছড়া চা-বাগান প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই উপমহাদেশে চা–শিল্পের যাত্রা শুরু। সেই হিসাবে এই অঞ্চলে চা–শিল্পের বয়স ১৭২ বছর। অথচ চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি এখনো ১৭২ টাকা হয়নি। চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বের অদক্ষতায় দীর্ঘদিন ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত চা-শ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ন্যায্য মজুরি নির্ধারণে মজুরি বোর্ড গঠনের দাবি তুলেছিলেন। শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে চা–শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি পুনর্নির্ধারণে মজুরি বোর্ড গঠিত হয়।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মজুরি বোর্ড গঠনের পর চা-শ্রমিকেরা আশা করেছিলেন মজুরি বোর্ড জীবনযাপনের ব্যয়, জীবনযাপনের মান, উৎপাদনশীলতা, মুদ্রাস্ফীতিসহ সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নতুন মজুরি হারের সুপারিশ করবে। শ্রম আইনের ১৩৯(২) ধারা অনুযায়ী, মজুরি বোর্ড গঠনের ৬ মাসের মধ্যে নতুন সুপারিশ প্রদানের কথা। কিন্তু প্রায় ১ বছর ৮ মাস পর ১৪ জুন চা–শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১১৭ টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্য, জীবনযাপনের মানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, যা অগ্রহণযোগ্য।

ফেডারেশন দেশের ১০ লক্ষাধিক চা-জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে প্রত্যাশা করে স্মারকলিপিতে বলেছে, চা-শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণে গঠিত মজুরি বোর্ড এই আপত্তিপত্র বিবেচনায় নিয়ে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করবে। চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি নূন্যতম ৫০০ টাকা নির্ধারণ, অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য দ্বিগুণ মজুরি প্রদান, রেশনের পরিমাণ বৃদ্ধি, কৃষিভূমির জন্য রেশন কর্তন বন্ধ, চিকিৎসা ও বাসস্থানের মানোন্নয়ন এবং তিন মাসের অধিককাল কর্মরত চা-শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী বিবেচনার নির্দেশনা দিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া বসতভিটার স্থায়ী মালিকানারও দাবি জানানো হয়েছে।