১ জুলাই থেকে দেশের ৭ হাসপাতালে প্রবাসীদের ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু

Published: 29 June 2021

বিশেষ সংবাদদাতা, ঢাকা :


বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীদের জন্য সুখবর দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে দেশের সাতটি হাসপাতালে প্রবাসীদের ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু হবে। মঙ্গলবার (২৯ জুন) এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এর আগে, ভ্যাকসিন না নেয়ার কারণে কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন প্রবাসীরা।

 

পরবর্তীতে ফাইজারের টিকা নিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে মানববন্ধন করেন প্রবাসী কর্মীরা। এদিকে, গেল ২৪ জুন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রী ইমরান আহমেদ জানান, সপ্তাহখানেকের মধ্যে প্রবাসী কর্মীদের ভ্যাকসিন দেয়ার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হবে। অন্যদিকে, গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, করোনার টিকা নিয়ে সকল অনিশ্চয়তা খুব শিগগিরই দূর হবে। আগামী মাস থেকেই আবার পুরো দমে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরুর ঘোষণাও দেন সরকার প্রধান।

 

সূত্র মতে, প্রথমে সউদী আরব ও কুয়েতগামী প্রবাসী কর্মীদের জন্য ফাইজারের কোভিড-১৯ এর টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীরা তাদের ভ্যাকসিনেশনের জন্য অনেক দিন থেকেই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মডার্না অথবা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দাবি করে আসছিলেন। শেষ পর্যন্ত সরকার তাদের প্রাথমিকভাবে ফাইজার ও পরবর্তীতে মডার্নার টিকা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, আমরা প্রবাসী কর্মীদের (সউদী আরব ও কুয়েতগামী কর্মী) ফাইজারের ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, কিন্তু, দেশে যখন মডার্নার ভ্যাকসিন আসবে, তখন সেটাও তাদের দেয়া হবে।

 

উপসাগরীয় অঞ্চলের আরেকটি দেশ কুয়েতও জানিয়েছে, ফাইজার বা বায়োটেক, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না অথবা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা না নেয়া কোনো অভিবাসী কর্মীকে তারা দেশে ঢুকতে দেবে না। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক জানান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অভিবাসী কর্মীদের একটা তালিকা অধিদফতরে পাঠানো হবে। তিনি বলেন, তখন আমরা সবার টিকা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করব।

 

সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার চৌধুরী। তিনি জানান, তারা প্রবাসী কর্মীদের জন্য জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দাবি করেছিলেন। কিন্তু, ফাইজারের টিকাও তাদের জন্য ভালো। আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। টিকা নিলে যেহেতু কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না, তাই প্রবাসী কর্মীরা এখন ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা সাশ্রয় করতে পারবেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ফাইজারের টিকা আসার পর থেকে অনেকে এই টিকা পেতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন। গত ৩১ মে কোভ্যাক্স প্রকল্পের আওতায় এক লাখ ছয় হাজার ডোজ ফাইজারের টিকার প্রথম চালানটি দেশে আসে।

 

পরে সরকার ঢাকার তিনটি কেন্দ্রে ফাইজারের এই টিকা দিতে শুরু করে। কেন্দ্রগুলো হচ্ছে- শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হবে ঢাকা মেডিকেল, রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল এবং স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।