কোম্পানীগঞ্জে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

Published: 29 June 2021

কোম্পানীগঞ্জ সংবাদদাতা :

২ দিনের টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল। সীমান্তবর্তী ৩টি ইউনিয়নের প্রায় ১৫ টি গ্রামের বেশিরভাগ ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা পানিবন্দী গ্রামগুলো পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে বন্যা মোকাবিলায় নগদ ১৫ লক্ষ টাকা মজুদ রয়েছে। যেগুলো দিয়ে শুকনো খাবার ক্রয় করা হবে। এ ছাড়াও শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে।

 

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সবচেয়ে বেশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইসলামপুর পূর্ব ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রাম ও ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের ছনবাড়ী গ্রাম। চাঁনপুর গ্রামের প্রায় ৫টি বাড়ি ও মসজিদ পাহাড়ি ঢলের নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গনের প্রবল ঝুঁকিতে রয়েছে চাঁনপুর গ্রাম। এদিকে ছনবাড়ী গ্রামের স্কুল, মসজিদ, মন্দির, রাস্তা, শাহ আরেফিন বাজারসহ প্রায় পুরো গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে যায়। সুনাই নদীর উত্তর পাশে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় বিগত কয়েক বছর থেকে পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হচ্ছে ছনবাড়ী গ্রাম। এই বাঁধ না থাকায় চিকাডহর এবং নারাইনপুর গ্রামও প্লাবিত হচ্ছে। এছাড়াও ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের নতুন জালিয়ারপাড়, বৈশাকান্দি, লম্বাকান্দি, নভাগী, কান্দিসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন পানিবন্দি এসব গ্রামের মানুষের খোঁজ খবর নিতে পরিদর্শনে যান। তিনি এ সময় বলেন, ইউনিয়নের ৪টি ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে এখনো তেমন ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেনি। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে আমরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করবো।

ইসলামপুর পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া বলেন, ধলাই নদীর পাহাড়ি ঢলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সম্মুখস্থ ধলাই নদীর পূর্ব তীরবর্তী চাঁনপুর গ্রামের অধিকাংশ কাচা ঘর, পাকা ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। চাঁনপুর গ্রামের পুরাতন মসজিদটি বর্তমানে ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। চোখের সামনেই পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা হাছু মিয়ার বসত ঘরটি কয়েক মিনিটের ভিতরে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাড়ীর পূর্ব ভিটার ঘরটি ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের বেতমুড়া, ডিস্কিবাড়ি, ফেদারগাঁও, বেকিমুরারপাড় প্লাবিত হয়েছে। দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান রুকন জানান, টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হতে শুরু করেছে ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। তবে এখনো কোন গ্রামে পানি ঢুকেছে এমন সংবাদ পাওয়া যায়নি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন আচার্য জানান, উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বন্যার্তদের জন্য নগদ ১৫ লক্ষ টাকা মজুদ রয়েছে। এই টাকা দিয়ে আমরা শুকনো খাবার ক্রয় করে তাদের মাঝে বিতরণ করবো। শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে আমাদের কাছে রয়েছে। এ ছাড়াও বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে যে কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।