এসিল্যান্ডের লাঠির আঘাতে কলেজ শিক্ষকের ভাঙল হাত

Published: 2 July 2021

বিশেষ সংবাদদাতা :


রাজশাহীর বাগমারায় এক কলেজ শিক্ষককে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি এ্যাসিল্যান্ড) বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকেলে লকডাউনের বিধিনিষেধ ভাঙার নামে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে কলেজ শিক্ষক আব্দুল আজিজকে তার বাড়ির দরজার সামনেই লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

আহত আব্দুল আজিজ পুঠিয়া উপজেলার সাধনপুর পঙ্গু ও শিশু নিকেতন ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক। ডায়াবেটিস আক্রান্ত আব্দুল আজিজ ঘটনার সময় হেঁটে এসে বাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

শিক্ষক আব্দুল আজিজের স্ত্রী বেবি খাতুন মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে জানান, তার স্বামী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এ কারণে প্রতিদিন হাঁটাহাটি করেন নিয়ম করে। বৃহস্পতিবার বিকেলেও হাঁটার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন আব্দুল আজিজ।

তিনি বাড়ির সামনে কিছু দূরে গিয়ে হাঁটাহাঁটি শেষে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আবার বাড়ির দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। এসময় সিকদারী বাজারের লোকজনকে ধাওয়া দিয়ে তেড়ে যাচ্ছিলেন এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসানসহ পুলিশের একটি দল। বাজারের লোকজনকে ধাওয়া দিতে গিয়ে রাস্তায় কাদার মধ্যে পা পিছলে পড়ে যান এসিল্যান্ড। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি উঠেই সামনে একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক আব্দুল আজিজ নিজের পরিচয় দেওয়ার পরও তাঁকে সজোরে লাঠি দিয়ে হাতের ওপর আঘাত করেন এসিল্যান্ড।

বেবি খাতুন বলেন, বাজারের লোকজনকে ধরতে না পেরে আমার স্বামীকে হাতের কাছে পেয়ে তাঁকেই পিটিয়ে হাত ভেঙে দেন এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসান। এতে তার বাম হাত ভেঙে গেছে। এরপর তাকে ফেলে রেখে চলে যান এসিল্যান্ডসহ পুলিশের দলটি। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।

এদিকে ঘটনার পর রাতে বাগমারার শ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান নিজেই তার ফেসবুকে শিক্ষক আব্দুল আজিজের ছবিসহ ঘটনাটি তুলে ধরেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেন, বাগমারায় নিজ বাড়ির দরজায় অসুস্থ এক কলেজ শিক্ষককে লকডাউনের বিধিনিষেধের নামে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে।’ তার এই পোস্টের পরে রাতেই বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পরে জিল্লুর রহমান সেই পোস্টটি সরিয়ে ফেলেন।

তবে এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, এই ধরনের ঘটনা ঘটার কোনো সুযোগ নাই। তবে যারা লকডাউন অমান্য করেছে তাদেরকে জরিমানা করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।

অন্যদিকে গতকাল দুপুরে জানতে চাইলে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহমেদ বলেন, ঘটনাটি খুব্ই দুঃখজনক। আমি শোনার পর পরই ওই শিক্ষকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তার বাসায় আছি। কিভাবে ঘটনাটি ঘটলো আমি জেনে পরে আপনাদের জানাবো।