রংপুর মহানগরীতে লাখো মানুষ পানিবন্দী, চরম দুর্ভোগে নিম্ন আয়ের মানুষ
রংপুর প্রতিনিধি :
এক রাতের টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রংপুর শহরের বেশিরভাগ এলাকা। বাড়িঘরেও ঢুকে পড়েছে পানি। শহরের নিচু এলাকাগুলো এখন পানিতে থইথই। কোনো কোনো এলাকায় হাঁটু, কোথাও কোমর সমান পানি।
রবিবার (৩ অক্টোবর) রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে নগরীর ৫০টি মহল্লায় হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে অন্তত এক লাখ মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। নগরীর বেশিরভাগ রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় যাতায়াত বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী।
রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রবিবার রাত ১০টা থেকে সোমবার (৪ অক্টোবর) সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৬৫ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, নগরীর প্রধানসহ বেশিরভাগ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। নগরীর বাবু খাঁ, কামার পাড়া, জুম্ম্পাড়া, কেরানী পাড়া, আলমনগর, হনুমান তলা, মুন্সিপাড়া, গনেশপুর, বাবুখা, কামারপাড়া, বাস টার্মিনাল, নগরীর শালবন, মিস্ত্রিপাড়া, কামাল কাছনা মাহিগজ্ঞ, কলাবাড়ি দর্শনা, মর্ডান মোড় ও খটখটিয়াসহ অন্তত ৫০টি মহল্লার বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রংপুর শহরের বুক চিরে যাওয়া ১৬ কিলোমিটারের শ্যামা সুন্দরী খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় ভারি বৃষ্টি হলে পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করে।
কামাল কাছনা এলাকার আব্দুর রহিম জানিয়েছেন, দেশের উঁচু এলাকারগুলোর অন্যতম রংপুর। তিস্তা নদী দূরে, খানিক দূরে ঘাঘট নদী থাকলেও শহরে পানি ওঠে না, কিন্তু গেল বছর হঠাৎ অবিরাম বৃষ্টিতে শহরে বন্যা হলো। এবারও একই অবস্থা। শহরের মধ্যে শ্যামা সুন্দরী খাল আর কেডি খাল আছে। এই দুটি খাল সংস্কার না করায় এই অবস্থা হচ্ছে।
মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা জোহরা বেগম ও সালমা জানান, বাড়ির ভেতরে পানি প্রবেশ করায় আসবাবপত্রসহ বেশিরভাগ মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। রান্নাঘরের মধ্যে হাঁটুপানি থাকায় গ্যাসের চুলা তলিয়ে গেছে। ফলে অনেকটা না খেয়ে দিন কাটছে তাদের।
জুম্মাপাড়া ও কেরানীপাড়া এলাকার বাসিন্দারা বলেন, গতরাত থেকে অবিরাম বৃষ্টিতে তাদের বাড়ির ভেতর পানি ঢুকে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন অব্যাহত ভারী বর্ষনের কারনে নগরীর বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে এই বর্ষন অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তিনি।
রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, গত বছরও এই রকম বৃষ্টি হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত যেসব এলাকায় পানি উঠেছে তা নিচু এলাকা। আমি সংশ্লিষ্ট এলাকার কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়েছে যাতে করে পানিবন্দি মানুষজনকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হয়।