যে কোনও সময় অন্ধকারে ডুবে যেতে পারে গোটা আফগানিস্তান

Published: 7 October 2021

পোস্ট ডেস্ক :


খাদ্য সংকটের পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার মুখে। সেই সঙ্গে এবার বিদ্যুৎ সংকটের মুখে আফগানিস্তান। তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোকে বিদ্যুতের জন্য কোনও অর্থ প্রদান করছে না। অথচ দেশটির ৭৮ ভাগ বিদ্যুৎই আসে বিদেশি রাষ্ট্রগুলি থেকে। আফগানিস্তানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও জোগান দেওয়ার জন্য সেই অর্থে কোনও কেন্দ্রীয় পরিকাঠামো বা ‘ন্যাশনাল পাওয়ার গ্রিড’ নেই। তাই প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ডলারের বিদ্যুৎ আমদানি করতে হয় আফগানিস্তানকে। কিন্তু তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানের অর্থনীতি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। প্রায় ৬২ মিলিয়ন ডলার বিদ্যুতের দাম বাকি রয়েছে।

দেশটি গত ৩ মাস ধরে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের দাম পরিশোধ করছে না। ফলে যে কোনো সময় আফগানিস্তানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে ইরান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও তাজিকিস্তান। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানাচ্ছে, দেশের প্রয়োজনের ৮০ শতাংশ বিদ্যুৎ প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে আমদানি করে আফগানিস্তান। আর চলতি বছর অনাবৃষ্টির জেরে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। জানা গেছে, আগামি এক সপ্তাহের মধ্যেই অপরিশোধিত বিলের পরিমাণ ৮৫ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। তাই সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘের কাছে ৯০ মিলিয়ন ডলার চেয়েছে দেশটি। সেই সঙ্গে এবার সম্পত্তি বিক্রি করে সেই দেনা মেটানোর ব্যবস্থা করছে তালেবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানের সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা ‘দ্য আফগানিস্তান ব্রেশনা শেরকত’। পূর্ববর্তী আফগান সরকারের যে সমস্ত রাজনীতিবিদ বা আমলা বিদ্যুতের বিল মেটাননি, তাঁদের বাড়ি বিক্রি করে টাকা তুলবে আফগান বিদ্যুৎ সংস্থা। প্রশ্ন উঠছে সেই সম্পত্তি নিলাম করলে কিনবে কে? খামা নিউজ সূত্রে খবর, সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থাটির বর্তমান প্রধান সফিউল্লা আহমদজাই জানিয়েছেন, শীঘ্রই সমস্ত দেনা মিটিয়ে দেয়া হবে। দেশে বিদ্যুতের জোগান নিশ্চিত করা হবে। দেশটির বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে বিনিয়োগে সেই অর্থে আগ্রহ নেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির। দেশের অভিজাত গোষ্ঠীর অধিকাংশই ধনসম্পদ বিদেশে সরিয়ে ফেলেছেন। ফলে এই পদক্ষেপের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তালেবানের মুখপাত্র বিলাল কারিমি যদিও আশার কথা শুনিয়ে বলেছেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভাল রয়েছে। আশা করি তারা বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যাবে।’ কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কতদিন?