কনডম নিয়ে নতুন আইন!

Published: 13 October 2021

পোস্ট ডেস্ক :

এখন থেকে প্রায় ৩০ বছর আগের কথা। আলাস্কায় একটি ম্যাসাজ পার্লারে কাজ নিয়েছেন ম্যাক্সিন ডুগান। সেখানে কয়েক মাস দেহপসারিণী হিসেবে কাজ শুরু করার মধ্যেই তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজে ওই ম্যাসাজ পার্লারে একজন নতুন খদ্দের পেয়েছিলেন তিনি। তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে ওই খদ্দের। তার আগে জন্মবিরতিকরণ বিষয়ক নিরাপদ ব্যবস্থা (কনডম) ব্যবহার করে ওই খদ্দের। কিন্তু কোনো এক ফাঁকে ওই খদ্দের তা সুচতুরভাবে সরিয়ে ফেলে। ম্যাক্সিন ডুগান তা টের পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন।

দৌড়ে চলে যান বাথরুমে। যখন ফিরে আসেন, দেখেন তার সেই খদ্দেরও পালিয়ে গেছে। ডুগানের বয়স তখন ২৫ বছরের মতো। পার্শ্ববর্তী একটি ক্লিনিকে ছুটে গেলেন। সেখানে কয়েক দফা পরীক্ষা করালেন। জানার চেষ্টা করলেন অনিরাপদ যৌন সম্পর্কে তিনি কোনো রোগে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা। কিন্তু সব পরীক্ষায়ই নেগেটিভ ফল পেলেন। কারো কাছে না বললেও মনে মনে নিজেকে নিজে ধন্যবাদ দিয়েছেন। ৬ সপ্তাহ পরে তিনি বুঝতে পারেন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। তাই গর্ভপাত করান। এতে তার খরচ হয় প্রায় ৩০০ ডলার। গর্ভপাত করানোর ফলে তিনি এক মাস কোনো কাজ করতে পারেননি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

তার সঙ্গে ওই খদ্দের যে আচরণ করেছে তা ছিল অন্যায়। আবার ডুগান যতদূর জানেন, এটা বেআইনিও ছিল না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে এখন একটি রাজ্যে এটা বড় একটি বিষয় হয়ে উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গাভিন নিউসম দ্বিপক্ষীয় একটি বিলে সই করেছেন। ফলে তা আইনে পরিণত হয়েছে। ওই আইনে বলা হয়েছে, উভয়ের সম্মতি ছাড়া যদি কনডম সরিয়ে ফেলা হয় তবে তা হবে নিষিদ্ধ। এটা এক রকম ‘গোপনীয়’ বিষয় হয়ে যায়। এই আইনের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাজ্য হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়াতে শারীরিক সম্পর্কের সময় নিরাপদ মাধ্যম কনডম সরিয়ে ফেলাকে গোপনীয় এক অন্যায় বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এই আইনে ম্যাক্সিন ডুগানের মতো নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্য আইনগত প্রতিকার পাওয়ার একটি পরিষ্কার ব্যবস্থা রয়েছে। ডুগান এখন বসবাস করেন সান ফ্রান্সিসকোতে। এখন থেকে কয়েক দশক আগে তিনি এমন নির্যাতনের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। পরামর্শকরা বলছেন, তার মতো অন্য যারা বেঁচে আছেন তাদের জন্য বিষয়টি বিশাল পরিবর্তন। ফলে তারা এখন আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন। আইনটির বিল উত্থাপন করেছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাসেম্বলির ক্রিস্টিনা গার্সিয়া। তিনি বলেছেন, আমরা এটা নিশ্চিত হতে চাই যে, শারীরিক সম্পর্কের সময় উভয়ের সম্মতির বাইরে কনডম সরিয়ে ফেলা অনৈতিকই শুধু নয়। একই সঙ্গে তা বেআইনি।