৩ লাশের পাশে ‘রক্ত’ দিয়ে লেখা ‘সুমি আমার কাছে থাকলে এমন হতো না’

Published: 30 October 2021

পোস্ট ডেস্ক :


টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার কাশতলা গ্রামের একটি বাড়ির থাকার ঘর থেকে এক প্রবাসীর স্ত্রী ও তার শাশুড়িসহ ৩ জনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে ঘাটাইল থানা পুলিশ। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

লাশের পাশেই দেয়ালে রক্ত দিয়ে লেখা ছিল, ‘এমনটা হতো না, যদি সুমি আমার কাছে থাকতো। এই সবকিছুর জন্য সুমির বাবা দায়ী।’

নিহতরা হলেন সৌদি প্রবাসী জয়েন উদ্দিনের স্ত্রী সুমী বেগম (২৫), তার শাশুড়ি জমেলা খাতুন (৬০) এবং অজ্ঞাত যুবক (৩০)। এ ঘটনায় সুমীর ছেলে শাফিকে (৫) মারাত্মক আহত অবস্থায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

একটি সূত্র জানায়, অজ্ঞাত যুবকের নাম শাহজালাল (৩০)। তিনি কালিহাতী উপজেলার সাতুটিয়া গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে। তার সাথে সুমীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

স্থানীয়রা ধারণা কর‌ছেন, মৃত্যুর আগে রক্ত দি‌য়ে এসব কথা ঘ‌রের দেয়া‌লে লি‌খে‌ছে সু‌মির ‘প্রেমিক’ নিহত শাহজালাল ইসলাম সোহাগ।

একই ঘরে যুবক, শাশুড়ি ও পুত্রবধূর লাশ এবং দেয়ালের লেখার কারণে এটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে দেখছে পুলিশ।

নিহত জমেলার আরেক পুত্রবধূ শাহনাজ বেগম জানান, আজ (শনিবার) সকালে তার শাশুড়ি এবং জা-কে ঘুম থেকে উঠতে দেরি দেখে তিনি ঘরের দরজায় কড়া নাড়েন। ভেতর থেকে তাদের কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় তিনি বাড়ির অন্যান্যদের ডেকে আনেন। পর সবাই মিলে দড়জা ভেঙে ঘরে ঢুকে খাটের ওপর সুমী ও অজ্ঞাত এক যুবকের এবং মেঝেতে তার শাশুড়ির রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তারা সুমীর ৫ বছরের ছেলে শাফিকে অর্ধমৃত অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে ঘাটাইল থানা পুলিশ এবং র‍্যাবের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। লাশের পাশে শ্যালো মেশিনের হ্যান্ডেল, রেঞ্জ এবং রড পড়েছিল।

টাঙ্গাইলের র‌্যাব-১২ সিপিসি-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার লে. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘লাশের পাশে ছুরি ও হাতুড়ি পাওয়া গেছে। সিআইডির ক্রাইম সিনের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।’

টাঙ্গাইলের পু‌লিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার ব‌লেন, হত‌্যাকাণ্ডে ব‌্যবহৃত এক‌টি ধারা‌লো ছু‌রিসহ অন‌্যান‌্য জি‌নিস উদ্ধার করা হ‌য়ে‌ছে। ঘ‌রের দেয়া‌লে এক‌টি লেখা পাওয়া গেছে। সেটি কার হা‌তের লেখা তা এক্সপার্ট দি‌য়ে যাচাই-বাছাই চল‌ছে। লেখার নমুনা সিআইডি সংগ্রহ ক‌রে‌ছে। তদন্ত ক‌রে প্রকৃত ঘটনা জানা যা‌বে।