শেরপুর সীমান্তে ভারতীয় বন্যহাতির তাণ্ডব

Published: 2 November 2021

শেরপুর সংবাদদাতা :


শেরপুরের শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী সীমান্তে ফের বন্য হাতির তাণ্ডব শুরু হয়েছে। ওই দুই উপজেলার পাহাড়ি জনপদে কদিন যাবত বিচরণ করছে ওপার থেকে নেমে আসা কয়েকটি দলে বিভক্ত প্রায় শতাধিক হাতি। এতে হাতির তাণ্ডব আতঙ্কে ঘুম নেই স্থানীয় পাহাড়ি অধিবাসীদের। তারা জান-মাল রক্ষায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
জানা যায়, ভারতের সীমানাঘেঁষা শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় এমন প্রায় ২০টি গ্রাম রয়েছে, যেগুলোর চারপাশ গারো পাহাড় ঘেরা। কয়েকদিন যাবত ভারত থেকে নেমে আসা শতাধিক বন্য হাতি কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে ওইসব পাহাড়ি জনপদে বিচরণ করছে। বন্য হাতির দল সারাদিন পাহাড়ি ঝোপ-জঙ্গলে থাকলেও সন্ধ্যা হলেই নেমে আসছে লোকালয়ে। হামলা চালাচ্ছে বাড়ি-ঘরে। খেয়ে সাবাড় করছে চলতি আমন মৌসুমের আবাদ।

পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করছে বিস্তীর্ণ আবাদি জমির ফসল। আর ধ্বংস করছে সবজি ক্ষেত। তাদের প্রতিরোধ করতে গেলে শুরু হয় হাতি ও মানুষের যুদ্ধ। ঢাকঢোল পিটিয়ে, পটকা ফুটিয়ে আর মশাল জ্বালিয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না হাতির তাণ্ডব। এখন ওইসব গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ হাতির আতঙ্কে দিন পার করছেন।
রোববার সরজমিনে গেলে কথা হয় শ্রীবরদী সীমান্তে নেওয়াবাড়ীর টিলা এলাকার অধিবাসী ও স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নেতা ব্রতীন মারাকের সাথে। তিনি জানান, আমরা পাহাড়ে বসবাস করি। এখানকার প্রায় সবাই কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বন্যহাতি ক্ষেতের সবজি আর ধান খেয়ে সাবাড় করছে। মাঝেমধ্যে বাড়ি-ঘরেও হামলা করছে। এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানায় পৃথকভাবে অনেকে সাধারণ ডায়েরি করেছেন। একই এলাকার কৃষক লাল চান মিয়া বলেন, কষ্ট কইরা বরবটি করছিলাম। বরবটি বিক্রি করছি। এর মধ্যেই হাতি আইয়া ভাইঙা থুইয়া গেছে। অহন ৮ কাঠা (৪০ শতাংশ) জমিতে আমন ধানের চাষ। ধানক্ষেতও পাক ধরছে। কয়দিন পরেই কাটন যাইবু। প্রায় ১৫ দিন যাবৎ হাতি ক্ষেতের পাশে পাহাড়ের ঝোপে আইছে। সন্ধ্যা অইলেই পাহাড় থাইক্যা হাতি নাইমা আয়ে। সবজি আর ধানক্ষেত খাইতাছে। পাহারা দিতাছি। এই ধানক্ষেতটাও যদি হাতি আইয়া খাইয়া যায়, অহন বউ, পোলাপান লইয়া ক্যামনে চলমু।