সুদানে বেসামরিক শাসন ফেরানোর আহ্বান ব্রিটেন, সৌদি আরব, আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্রের

Published: 4 November 2021

পোস্ট ডেস্ক :

সুদানে বেসামরিক শাসন ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটেন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার দাবি করা হয়েছে এই চার দেশের তরফ থেকে। আহ্বান জানানো হয়েছে সম্প্রতি আটক ব্যক্তিদের মুক্তি। ২৫ শে অক্টোবর সুদানে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে। এরপরই ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তী কাউন্সিলকে বিলুপ্ত করে জারি করা হয় জরুরি অবস্থা। সামরিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের। এর আগে তারা সুদানে স্থিতিশীলতার ওপর জোর দিয়েছিল।

কিন্তু এখন ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে তারা যৌথ বিবৃতি দিয়েছে।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই বিবৃতি প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, সুদানে অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গভাবে বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে সচল করার আহ্বান জানাই আমরা। সম্প্রতি যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের সবাইকে মুক্তি দিতে এবং জরুরি অবস্থা তুলে নিতে উৎসাহিত করছি আমরা। সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এর প্রেক্ষিতে সব দলের মধ্যে কার্যকর আলোচনাকে উৎসাহিত করি আমরা। সবার প্রতি আহ্বান জানাই সুদানের মানুষের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তাকে শীর্ষ অগ্রাধিকার দিয়ে তা নিশ্চিত করতে।

গত ২৫ শে অক্টোবর দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এর ফলে ওই দেশে গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের যে ভঙ্গুর প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল তা বিঘ্নিত হয়েছে। উৎখাত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লাহ হামদকের বেসামরিক সরকার। তারপর থেকেই তাকে রাখা হয়েছে গৃহবন্দি। এসবের কড়া নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সঙ্গে সঙ্গে তারা সুদানকে দেয়া ৭০ কোটি ডলারের অর্থনৈতিক সহায়তা হিমায়িত করেছে। সামরিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র চাপ সৃষ্টি করেছে আফ্রিকান ইউনিয়নও। সেখানে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে কার্যকর ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত সুদানকে সাসপেন্ড করেছে তারা।

সর্বশেষ যে যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়েছে, তাতে নেই প্রতিবেশী মিশরের নাম। তারা গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভকারীদের পক্ষ নিয়েছিল। সুদানের এই সঙ্কট সমাধানের জন্য কয়েক দিন ধরেই চলছে মধ্যস্থতার চেষ্টা। গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল বুরহান বলেছেন, তিনি একটি নতুন টেকনোক্র্যাট সরকার গঠন করতে চান এবং ক্ষমতাচ্যুত হামদক ক্ষমতায় ফিরতে পারেন। তবে বুধবার হামদকের অফিস নতুন সরকারে তার নেতৃত্ব দেয়ায় রাজি হওয়ার বিষয় প্রত্যাখ্যান করেছে। বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী আটক ব্যক্তিদের মুক্তি দাবি করেছেন। যেকোনো আলোচনায় প্রবেশের আগে তিনি চান প্রশাসনিক পরিষদের পুনঃস্থাপন। ফেসবুকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বন্দিদের মুক্তি এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সমর্থকদের সঙ্গে তাকে সাক্ষাত করতে দেয়া হচ্ছে না।

এ অবস্থায় রোম ও গ্লাসগো সম্মেলনে যোগ দিয়ে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে সুদান সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। হর্ন অব আফ্রিকা বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জেফ্রে ফেল্টম্যান মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন, সুদানের স্থিতিশীলতার বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ আমিরাত শেয়ার করে বলে আমরা মনে করি। আমাদের বিশ্লেষণ বলছে যে, সুদানের স্থিতিশীলতা নির্ভর করে সামরিক ও বেসামরিক কর্তৃপক্ষের মধ্যে অংশীদারিত্ব পুনঃস্থাপনের ওপর।