চিন রাজ্যে অসংখ্য বাড়িঘর ধ্বংস করে দিয়েছে মিয়ানমারের সেনারা

Published: 8 November 2021

পোস্ট ডেস্ক :


চিন রাজ্যে অসংখ্য বাড়ি ধ্বংস করে দিয়েছে সেনাবাহিনী। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বাড়ির পর বাড়ি। এসব খবর যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় তারা। পুরো রাজ্যে ছড়িয়ে আছে সেনাবাহিনী। কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেখানে নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এসব নিয়ে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

প্রতিবেশী ভারতে বসে টেলিভিশন খবর দেখছিলেন থাং বিয়াক।

আকস্মিকভাবে তিনি জানতে পারেন যে, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় চিন রাজ্যে তার বাড়ি আগুনে ভষ্মীভূত। থাং বিয়াকের বসবাস ছিল প্রায় ৮০০০ মানুষের বসবাস এমন শহর থান্টলাংয়ে। এটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত এই শহর। ১৪ই সেপ্টেম্বর তিনি তিন ছেলে ও অন্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। দু’সপ্তাহ পরে সীমান্ত অতিক্রম করে প্রবেশ করেন মিজোরামে। থাং বিয়াক বলেন, পালানোর সময় সঙ্গে করে কিছুই আনতে পারিনি। আমাদের সব সহায়সম্পদ ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আমার বাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার খবর পাওয়ার পর ঘুমাতে পারিনি। কিছু খেতে পারিনি।

থান্টলাংকে কমপক্ষে ১৬০টি বাড়ি, দুটি চার্চ পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ২৯ শে অক্টোবর। বেসামরিক সশস্ত্র গ্রুপের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান তীব্র করার সময় এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। গত ১লা ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সুচির সরকারকে উৎখাত করার পর পুরো দেশে বেসামরিক প্রতিবাদ বিক্ষোভ তীব্র থেকে তীব্র হয়ে উঠেছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপগুলো। থান্টলাংয়ে এই ধ্বংসলীলা চালানোর জন্য সেনাবাহিনীর নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন দেশের সরকার, অধিকার বিষয়ক সংগঠন ও বেসামরিক গ্রুপগুলো। পাশাপাশি তারা দায়ীদের বিচার দাবি করেছে। ‘মিয়ানমারে সামরিক জান্তার সন্ত্রাস বন্ধে’ জরুরি ভিত্তিতে আহ্বান জানাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। এতে স্বাক্ষর করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ কমপক্ষে ৫০০ সংগঠন। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, যে ঘটনা ঘটানো হয়েছে তাতে মিয়ানমারে মানুষের জীবনের প্রতি কোনো তোয়াক্কাই করছে না সামরিক শাসক গোষ্ঠী, এমনকি তাদের কল্যাণের কোনো তোয়াক্কা করছে না। এসব জনগণের বিরুদ্ধে যে হামলা করা হয়েছে তাতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে জবাবদিহিতায় আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া উচিত।