বাঁশখালীতে ৭ দিনে ৪ বন্যহাতির মৃত্যু, এবার মিলল ধানক্ষেতে

Published: 12 November 2021

বিশেষ সংবাদদাতা :


এবার বাঁশখালীর চাম্বল বনবিট অফিসের অদূরে জঙ্গল চাম্বল গ্রামের ধানক্ষেতে মিলল বন্যহাতির লাশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় হাতিটি মারা যায়। শুক্রবার সকাল থেকে স্থানীয়রা মৃত হাতিটি দেখতে পেয়ে কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়।

এর আগে, গত শনিবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, মঙ্গলবার শেরপুরের শ্রীবরদী এবং বুধবার কক্সবাজারের চকরিয়ায় তিনটি মৃত হাতি উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবারর দুপুর ১২টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাতির পেটের নিচে রক্তক্ষরণের চিহ্ন রয়েছে। মৃত হাতিটির পাশের ধানক্ষেতেও হাতিটি হাঁটার চিহ্নও রয়েছে।

হাতিটির ময়নাতদন্তের জন্য প্রস্তুত নিচ্ছেন বাদশা মিয়া। তিনি রামদা ও কুড়ালে শান দিচ্ছেন। বাদশা জানান, বনবিভাগের অধীনে বাঁশখালীতে ১৪টি মৃত হাতি নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। মারা যাওয়া হাতিগুলোর শুঁড় ও অন্যান্য অংশ সংরক্ষণ করে দেওয়া হয় বনবিভাগকে।

বিকেল ৩টার দিকে হাতিটির ময়নাতদন্ত করেছেন চকরিয়া সাফারী পার্কের ভেটেরিনারী সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান ও বাঁশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. সমরঞ্জন বড়ুয়া।

স্থানীয় কৃষক কামাল, জমির উদ্দিন, শাহ আলম বলেন, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে তিনটি হাতির পাল পৃথক পৃথক ভাবে ঘোরাঘুরি করে প্রতি রাতে। এক পালে সাতটি, অপর দুই পালে পাঁচটি ও দুটি হাতি রয়েছে। মারা যাওয়া হাতিটি দুটি হাতিওয়ালা পালের একটি হতে পারে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় অনেকে জানান, চাম্বল পাহাড়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের প্রায় ৫০ শতাংশ দখল করে বিক্রি করা হয়েছে। যার কারণে এখানে বসত গড়ে উঠেছে। খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় বন্যহাতিগুলো লোকালয়ে চলে আসে। অনেকে হাতির তাণ্ডব থেকে রক্ষা পেতে জমিতে বা বসত বাড়ির এরিয়ায় বৈদ্যুতিক তার ফেলে রাখে। এই সব ফাঁদে অনেক বন্যহাতি মারা যায়।

বাঁশখালীর বনবিভাগের জলদী রেঞ্জের রেঞ্জার শেখ আনিচ্ছুজ্জামান বলেন, ‘হাতিটির মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের আগে কিভাবে মারা গেছে তা বলতে পারছি না। বন থেকে হাতির পাল লোকালয়ে প্রায় সময় ছুটে আসছে। সেই দলছুট হাতিদের পাহাড়ে ফেরাতে বনবিভাগের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।’

বাঁশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. সমরঞ্জন বড়ুয়া বলেন, ‘হাতিটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের ফলাফল পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ উদঘাটন হবে। শারীরিক অসুস্থতা কারণে নাকি হত্যা করা হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’