আফ্রিকা থেকে কেউ দেশে আসলে বোডিং পাস দেয়া হবে না : ড. এ কে আব্দুল মোমেন

Published: 2 December 2021

সিলেট অফিস :


পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাংসদ ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ড. আব্দুল মোমেন বলেন, ওমিক্রন মোকাবিলায় আমাদের সর্বোচ্চভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। আফ্রিকায় ইতোমধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে।

আফ্রিকায় আমাদের বিমান যায় না। তবে অন্য কোনো এয়ারলাইন্সে করে সে দেশ থেকে আমাদের দেশে কেউ আসলে তাদেরকে বোডিং পাস দেয়া হবে না। আর বোডিং পাস দিলেও যাদের ডাবল ভ্যাকসিন আছে এবং টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ তাদেরকে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।

বৃহ্স্পতিবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেট সদর উপজেলার ছালিয়া এলাকায় কমিউনিটি এগেইনস্ট পভারটি (ক্যাপ)-এর আর্থসামাজিক প্রকল্প ‘দ্যা গার্ডিয়ান এন্ড অর্ফান ভিলেজ’র উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন আরও বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্ম যারা বিদেশে আছেন, তারা অনেকেই আসতে চাননা। বরং বাপ-মায়ের জমিজমা বিক্রি করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এই ইয়াং গ্রুপ ব্যতিক্রম, তারা ক্যাপ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সমাজের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা নিজেরা উপার্জন করে ক্যাপ ফাউন্ডেশনকে টাকা দেন। সেই টাকায় শুধু সিলেট অঞ্চল নয় কুড়িগ্রামেও তারা কাজ করেছেন। সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় দুঃস্থ জেলেদের মাছ ধরার নৌকা প্রদান করেছেন তারা। শহরের অনেক বেকারকে রিক্সা দিয়েছেন। প্রশিক্ষণের পর মহিলাদেরকে সেলাই মেশিনও দেয়া হয়েছে। ক্যাপ ফাউন্ডেশন এখন ১০০ জন অনাথ-এতিম শিশুদের জন্যে অর্ফানেজ ভিলেজ স্থাপন করছে। তাদের এসকল কাজের জন্য আমরা দোয়া করি।এই এতিমখানা থেকে শিশুরা পড়াশোনা করে মানুষের মত মানুষ হয়ে বের হবে।

তিনি আরও বলেন, আফ্রিকার আশেপাশের দেশগুলোতে যারা আছেন তাদের ডিসকারেজ করার জন্য অথবা এখন দেশে না এসে পরে আসার জন্য সবগুলো মিশনকে বলে দেয়া হয়েছে। তবে বাংলাদেশ প্রস্তুত, এটা সমস্যা হবে না আশা করি।

এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদানের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। আগামী ১০ ডিসেম্বর ভারতীয় সচিব বার্তা নিয়ে আসার পর সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, প্রবাসীদের অর্থায়নে ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে সিলেটে ১০০ আশ্রয়হীন শিশুর জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে ‘দ্যা গার্ডিয়ান এন্ড অর্ফান ভিলেজ’। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সেই প্রকল্পটি উদ্বোধন ও পরিদর্শন করতে আসেন সিলেটের কৃতিসন্তান ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

ক্যাপ ফাউন্ডেশনের সিইও মো. আব্দুন নুরের সভাপতিত্বে ও ক্যাপ’র মেন্টাল হেলথ বিভাগের প্রধান পলি ইসলামের (এমবিই) পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, চ্যানেল এস’র চেয়ারম্যান আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী জেপি, সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, ইউকে বিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট নাজমুল ইসলাম নুনু, বাংলাদেশ ফিমেইল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা জামিল চৌধুরী , বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনা চৌধুরী, ক্যাপ’র ব্র্যান্ড এ্যাম্বেসেডর নাজ রহমান ও ক্যাপ’র এ্যাম্বেসেডর নাজ চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, কাজ করার ইচ্ছে থাকলে যে করা যায় ক্যাপের এই অর্ফানেজ ভিলেজ এর দৃষ্টান্ত। এই এতিমখানা এলাকাবাসীর জন্যেও অনেক ভালো হবে। প্রতিষ্ঠানটিকে কেন্দ্র করে এলাকারও উন্নয়ন হবে।

আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, প্রবাসীদের অর্থায়নে সিলেট অঞ্চলে ক্যাপ ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ও প্রবাসীরা ভূমিকা রেখেছেন। একনো দেশের জন্য প্রবাসীরা কাজ করছেন।

 

চ্যানেল এস’র চেয়ারম্যান আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী জেপি বলেন, প্রবাসীরা সবসময় দেশের জন্য কাজ করছেন।ক্যাপ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সিলেটে কাজ করছেন প্রবাসীরা।ক্যাপের কার্যক্রম আমাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে।

অনুষ্টানে জানানো হয়,সিলেট -ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের পশ্চিম পান্থে ছালিয়ায় ১৫০ শতক ভূমির মধ্যে গড়ে তোলা হচ্ছে ক্যাপ ফাউন্ডেশন অর্ফান ভিলেজ দি গার্ডিয়ান। ইসলামি শিক্ষার জন্য মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। ১০০ জন এতিমের জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হচ্ছে যেখানে প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে পরবর্তীতে টেকনিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করে নীজের জীবন গড়তে পারবে। তাদের জন্য ৩ টি ডরমিটরি , খেলাধুলার জন্য ইনডোর স্পট ও খেলার মাঠ থাকবে। পুরো অর্ফান ভিলেজ ক্লোজ সার্কিট (সিসি ক্যামেরা) ক্যামেরা দ্বারা পরিচালিত হবে।
অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. মোমেন ২৫০ জন দুঃস্থ -অসহায় পরিবারকে ক্যাপের দেয়া জাকাতের অর্থ তুলে দেন।