বিধ্বস্ত বিমান নিয়ে নতুন লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীন

Published: 28 January 2022

পোস্ট ডেস্ক :


সম্প্রতি বিধ্বস্ত মার্কিন যুদ্ধবিমান নতুন লড়াই শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে। চীনা কর্তৃপক্ষের আগেই দক্ষিণ চীন সাগরে বিধ্বস্ত ওই বিমানের সন্ধান পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসি শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার একটি এফ-৩৫সি মার্কিন যুদ্ধবিমান চীন সাগরে অবস্থান করা মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস কার্ল ভিনসন থেকে উড্ডয়নের সময় বিধ্বস্ত হয়।

মার্কিন নৌবাহিনীর সর্বশেষ প্রযুক্তি সম্বলিত যুদ্ধবিমানটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া নিয়ে লড়াইটা অবশ্য মোটেও অনৈতিক নয়। আন্তর্জাতিক জলসীমায় বিমানটি ভেঙে পড়ায় যে কেউই বিমানটির সন্ধানে অংশ নিতে পারে।

তাই যেই আগে বিমানটির সন্ধান পাবে, এই নতুন লড়াইয়ে সেই জিতবে। আর জেতার পুরস্কারটাও নেহায়েত মন্দ নয়। বহুমূল্যের যুদ্ধবিমান তৈরির গোপন কলাকৌশল চলে আসবে বিজেতার হাতের মুঠোয়।

মহড়ার সময় ইউএসএস কার্ল ভিনসনের ডেকে বিমানটি ভেঙে পড়ায় সাতজন নাবিক আহত হন।

মহাসাগরের জলের তীরে পড়ে থাকা বিমানটির ভাগ্যে পড়ে কী ঘটবে সেটা এক রহস্য। অবশ্য বিমানটির অবস্থান কিংবা বিমানটি উদ্ধার করতে ঠিক কত সময় লাগবে সে ব্যাপারে মার্কিন নৌবাহিনী নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি।

যদিও বিধ্বস্ত বিমানটি নিয়ে বেইজিংয়ের কোনো মাথাব্যথা নেই বলে এর আগে জানিয়েছিল চীন।

এ ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, চীন চায় এ অঞ্চলে গঠনমূলক কাজে যুক্ত হোক যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ চীন সাগরসহ এ অঞ্চলে কোনো ধরনের উত্তেজনা চায় না চীনের মানুষ। মার্কিন যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।

যদিও মার্কিন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে ওই বিমানের নাগাল পেতে চীনের আগ্রহের কমতি নেই। একটি মার্কিন উদ্ধারকারী জাহাজ দুর্ঘটনাস্থল থেকে কমপক্ষে ১০ দিনের পথের দূরত্বে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ততদিনে অবশ্য অনেক দেরি হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিরাপত্তা পরামর্শক অ্যাবি অস্টিন। কারণ ওই সময়ের আগেই বিমানের ব্ল্যাকবক্সের ব্যাটারি শেষ হয়ে যাবে। তাই বিমানটি খুঁজে বের করা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

এ ব্যাপারে অ্যাবি অস্টিন বলেন, বিমানটির সন্ধান পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই বিমান মূলত একটি উড়ন্ত কম্পিউটারের মতো। বিমানটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যে এর মাধ্যমে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থার সঙ্গে একে সংযুক্ত করা যায়। এই প্রযুক্তিকে বিমান বাহিনী ‘লিঙ্কিং সেন্সর টু শুটার’ বলে থাকে।

তবে এমন এক গুরুত্বপূর্ণ মিশনে থাকা মার্কিন সেনার নৌজাহাজে কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটে গেল তা নিয়ে রয়ে গেছে ধোঁয়াশা।

এ নিয়ে তদন্ত চলছে বলে মার্কিন সেনাবাহিনী জানিয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরকে বেইজিং নিজের জায়গা বলে দাবি করে, সেখানে মার্কিন রণতরীর উপস্থিতি যে খুব একটা ভালোভাবে নেয়নি চীন, তা আগেও জানিয়েছে তারা। তার মাঝেই এই দুর্ঘটনা ঘিরে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।