জকিগঞ্জে লাখো মানুষের ঢল : মসজিদের পাশে চিরশায়িত আল্লামা হবিবুর রহমান

Published: 10 February 2022

সিলেট অফিস :

লাখো মুসল্লি-ভক্তদের উপস্থিতিতে সর্বস্থরের মানুষের শ্রদ্ধা, ভালোবাসায় ও চোখের জলে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন দেশের অন্যতম প্রথিতযশা আলেম, আরব আমিরাতের বিচার বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা ও জকিগঞ্জের ইছামতি কামিল মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শায়খুল হাদিস আল্লামা হবিবুর রহমান মুহাদ্দিস ছাহেব (৮৯)।


মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় থানাবাজার সংলগ্ন মাঠে জানাযার নামাজ শেষে ৩টা ২০ মিনিটের দিকে নিজের প্রতিষ্ঠিত রারাই গ্রামস্থ আল-হাবীব জামে মসজিদের উত্তর পাশে তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। জানাযার নামাজে ইমামতি করেন আল্লামা হবিবুর রহমান মুহাদ্দিস ছাহেবের বড় ছেলে মাওলানা আব্দুল আউয়াল হেলাল। স্মরণকালের সবচেয়ে বড় এই জানাজায় দেশের শীর্ষ আলেম, রাজনীতিক, সরকারি কর্মকর্তাসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ নেন। এ সময় দেশবরেণ্য আলেম আল্লামা হবিবুর রহমান ছাহেবের ভক্ত, অনুসারী, শিক্ষার্থীসহ জানাযায় আসা ধর্মপ্রাণ মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন।
জানাযার নামাজের আগে আল্লামা হবিবুর রহমান ছাহেবের বর্ণাঢ্য জীবনের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় সভাপতি আল্লামা হুসামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা একেএম মনোওর আলী, সৎপুর কামিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা শফিকুর রহমান, ভারতের রফিনগরের সায়্যিদ হিফজুর রাহমান মিশকাত, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডীন ড. রইছ উদ্দিন, অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. সৈয়দ শাহ এমরান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, সৎপুর কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর নুমান, ইছামতি কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শিহাবুর রহমান চৌধুরী, বুরাইয়া কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী, ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন, সোবহানীঘাট হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা আবু ছালেহ মুহাম্মদ কুতবুল আলম, গোবিন্দগঞ্জ ফজলিয়া সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী, শাহজালাল জামেয়া, পাঠানটুলা সিলেট এর উপাধ্যক্ষ মাওলানা ফয়জুল্লাহ বাহার, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোজতবা হাসান চৌধুরী নোমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাফিয মাওলানা কয়েছুজ্জামান, আনজুমানে আল ইসলাহর ইউএসএ নেতা মো. মোখলেসুর রহমান, ইউকে আল ইসলাহ নেতা মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, ভারতের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আজিজুর রহমান তালুকদারসহ আলেম উলামা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। এ সময় আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী বড় ছাহেব কিবলা ফুলতলী, সাবেক এমপি আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন, মাওলানা শিহাব উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, মাওলানা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, অধ্যক্ষ মাওলানা কমরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, হাফিয মাওলানা ফখরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, জকিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব লোকমান উদ্দিন চৌধুরীসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সিলেট মহানগরী সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা ও মাওলানা বেলাল আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত জানাযাপূর্ব আলোচনায় বক্তারা বলেন, আল্লামা হবিবুর রহমান (র.) ছিলেন সুন্নতে নববীর মূর্ত প্রতীক। তিনি আলিমে বা-আমল ও ইবাদতগুজার বান্দা ছিলেন। দারস-তাদরীস ও কিতাব অধ্যয়নে দিন-রাতের বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত করতেন। শেষ রাতে তাহাজ্জুদে নিমগ্ন হতেন। তিনি সারাজীবন রাসুল (সা) এর সুন্নাাতকে আঁকড়ে ধরেছেন। হাদীসে নববীর খিদমাত আঞ্জাম দিয়েছেন। তিনি ছিলেন ইলমে হাদীসের অনন্য দিকপাল, তরীকতের একজন শ্রেষ্ঠ বুযুর্গ ও উচুস্তরের এবজন ওলীআল্লাহ। তিনি সারাজীবন কুরআন-সুন্নাহ’র প্রচার-প্রসার ঘটিয়েছেন, গোমরাহীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসুল সা. এর ইত্তেবা করে গেছেন। একজন মুমিনের জন্যে যত উন্নত গুণাবলি থাকা প্রয়োজন তাঁর মাঝে এসবই ছিল। তাঁর ইন্তেকালে দ্বীনী অঙ্গনে যে শুণ্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ হবার নয়।
আল্লামা হবিবুর রহমান ছাহেবের পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে, বার্ধক্যজনিত কারণে অনেকদিন ধরে শারীরিক নানা সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি নিজ বাড়ীতে ইন্তেকাল করেন। তাঁর ৪ ছেলে ৩ মেয়েসহ অসংখ্য ভক্ত, অনুসারী, মুরিদীন, শিক্ষার্থী ও শুভাকাংখী রয়েছেন। আল্লামা হবিবুর রহমান মুহাদ্দিস ছাহেব জীবদ্দশায় অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেছেন। ধর্ম প্রসারে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাওয়াতি সফর করেছেন বহুবার। দেশ বিদেশে তাঁর অসংখ্য ভক্ত অনুসারী রয়েছেন। মৃত্যুর প্রায় ২মাস আগ পর্যন্ত তিনি হাদিস শরীফের দরস দিতেন।
এদিকে, আল্লামা হবিবুর রহমান মুহাদ্দিস ছাহেবের ইন্তেকালের খবর শুনে সোমবার রাত থেকে দুরদূরান্ত হতে অসংখ্য আলেম-উলামা, ভক্ত, অনুসারী, মুরিদীন, শিক্ষার্থী ও হাজার হাজার শুভাকাঙ্খীগণ রারাই গ্রামের বাড়িতে ছুটে আসতে শুরু করেন। শেষ বারের মত প্রিয় মুহাদ্দিস ছাহেবকে এক নজর দেখতে ভীড় করেন বাড়িতে। ভক্ত-অনুসারীদের কান্নায় এলাকা ভারী হয়ে ওঠে। শোকে কাতর হয়ে পড়েন সকল শ্রেণীপেশার মানুষ। মঙ্গলবার সকালে জকিগঞ্জে মানুষের ঢল নামে। জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কে মানুষের ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। একপর্যায়ে ভরন এলাকা থেকে বাবুর বাজার পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যানবাহনের চাপ কয়েকগুন বেড়ে যায়। অনেকে দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে জানাজায় অংশ নেন। জানাজায় অংশ নিতে আসা বিপুল জনসমাগমকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ছিলেন তৎপর। শৃঙ্খলা রক্ষায় নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিমও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এক নজরে আল্লামা হবিবুর রহমান: সর্বসাধারণের কাছে ‘মুহাদ্দিস ছাহেব’ নামেখ্যাত শায়খুল হাদীস আল্লামা হবিবুর রহমান ১৯৩৪ সালে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার রারাই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা এলাকার খ্যাতিমান আলেমেদ্বীন মরহুম মাওলানা মুমতায আলী (রহ.)। মাতা মরহুমা আমিনা খাতুন। সাত ভাই ও এক বোনের মধ্যে আল্লামা হবিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয়।
শিক্ষাজীবন : এলাকার প্রাইমারি স্কুলে কিছুদিন লেখাপড়া করে বাল্য বয়সেই তিনি বড় ভাই মরহুম মাওলানা নজিবুর রাহমানের সাথে ভারতের বদরপুর সিনিয়র মাদরাসায় ভর্তি হন। সেখানে কিছুদিন লেখাপড়া করে ফিরে এসে কানাইঘাট থানাধীন সড়কের বাজার আহমদিয়া মাদরাসায় ভর্তি হয়ে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। সড়কের বাজার মাদরাসায় ছাত্র থাকাকালীন শিক্ষকগণের উৎসাহে পার্শ্ববর্তী প্রাইমারি স্কুল থেকে জেলা-ভিত্তিক প্রাইমারী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করে বৃত্তি পান। পরবর্তীতে সিলেটের অন্যতম প্রাচীন বিদ্যাপীঠ গাছবাড়ী জামেউল উলুম মাদরাসায় ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে পূর্ব পাকিস্থান মাদরাসা এডুকেশন বোর্ডের অধীন আলিম পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বাদশ স্থান লাভ করে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। একই মাদরাসা থেকে ১৯৫৭ সালে ফাজিল পরীক্ষায় বোর্ডের সম্মিলিত মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান লাভ করে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৫৯ সালে হাদীস বিভাগে কামিল পরীক্ষায় বোর্ডের সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বাদশ স্থান লাভ করে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। উল্লেখ্য যে, গাছবাড়ী মাদরাসার ইতিহাসে বোর্ডের মেধা তালিকায় স্থান লাভকারী প্রথম ছাত্র তিনি।
কর্মজীবন : ১৯৫৯ সালের ৩ আগস্ট ইছামতি দারুল উলুম সিনিয়র মাদরাসায় সহকারী মাওলানা পদে যোগদান করেন। ১৯৬৩ সালের ১০ এপ্রিল সিলেটের প্রাচীনতম ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফুলবাড়ী আজিরিয়া মাদরাসায় যোগ দেন। স্বীয় পীর ও মুরশিদ আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) এর নির্দেশে ১৯৬৩ সালের ২৩ নভেম্বর সৎপুর দারুল হাদীস মাদরাসায় প্রধান মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭৪ সালের ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সেখানে সুনামের সাথে অধ্যাপনা করেন। ঐ বছর ১৫ জানুয়ারি ইছামতি দারুল উলুম মাদরাসায় অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। ইতোমধ্যে সৎপুর দারুল হাদীস মাদরাসার অধ্যক্ষ নিয়ে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়। সমস্যা নিরসন কল্পে জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণের অনুরোধে ১৯৭৬ সালের ১১ অক্টোবর সেখানে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। তাঁর ঐকান্তিক চেষ্টার ফলে অল্প দিনের মধ্যে মাদরাসার স্থিতিশীলতা ফিরে এলে ১৯৭৭ সালের ২ এপ্রিল সেখান থেকে চলে আসেন।
১৯৭৭ সালে সৎপুর মাদরাসা থেকে চলে আসার কিছুদিন পর তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে গমন করেন। প্রথমে উম্মুল কুওয়াইন শহরে একটি মসজিদে ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অল্প দিনের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে তিনি সে দেশের বিচার বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসা পর্যন্ত তিনি উম্মুল কুওয়াইন কোর্টে কর্মরত ছিলেন। পাশাপাশি পূর্বোল্লোখিত মসজিদে খতিবের দায়িত্ব পালন করেন। আরব আমিরাতের কর্মজীবনে সরকারি ছুটির দিনে মরুচারী বেদুঈনদের অবৈতনিক শিক্ষাদান করতেন। বিশেষ করে বয়স্ক বেদুঈনদের কুরআন শরীফ সহিহ-শুদ্ধ তিলাওয়াত শেখাতেন।
এরপর দেশে ফিরে ১৯৮২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আবারও তিনি ইছামতি মাদরাসার অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। সুনাম ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসরগ্রহণ করেন। তাঁর একান্ত প্রচেষ্টার ফলে তিলে তিলে ইছামতি মাদরাসা পূর্ব সিলেটের শ্রেষ্ঠতম ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। মাদরাসার অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হয়। আলিম, ফাজিল ও কামিল ক্লাসের সরকারি মঞ্জুরি এবং স্বীকৃতি আদায়ে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। মাদরাসার ভবন এবং সুবিশাল মসজিদ তাঁর নীরব সাধনার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শেষ জীবনে তিনি ইছামতি মাদরাসার প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের পাশাপাশি তিনি একসময় সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতা-পূর্ববর্তীতে তিনি নেজামে ইসলাম পার্টির সিলেটের একজন উল্লেখযোগ্য নেতা ছিলেন। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে নেজামে ইসলামের মনোনয়নে তিনি তখনকার সিলেট ৭ আসনে (জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার ও কানাইঘাট) এমএনএ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সম্মানজনক ভোট পান। পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় বাংলাদেশ আঞ্জুমানে আল-ইসলাহ’র সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে আঞ্জুমানে আল-ইসলাহ মনোনীত ও সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট পাঁচ আসনে (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাছাড়াও তিনি ১৯৯১ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁর সম্পাদনায় সিলেট শহর থেকে মাসিক শাহজালাল নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করতেন। স্বল্প সময়ে সিলেট অঞ্চলে ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা লাভ করে। এরপর ১৯৯৩ সালে নানা কারণে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। কর্মময় জীবনে তিনি ১৮টি গ্রন্থ সম্পাদনা করেন তা প্রকাশিত হয়।
শায়খুল হাদীস হযরত আল্লামা হবিবুর রহমান উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুযুর্গ শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.) এর শীর্ষস্থানীয় খলীফা ছিলেন। ইলমে হাদীসে তিনি আপন মুরশিদ ছাড়াও আরব বিশ্বের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা সায়্যিদ মুহাম্মদ বিন আলাভী মালিকী (র.) ও মাদরাসা-ই আলিয়া ঢাকা’র হেড মাওলানা ও বাইতুল মোকাররমের প্রথম খতীব আল্লামা মুফতী আমীমুল ইহসান (র.) এর শাগরিদ ছিলেন। এছাড়া প্রখ্যাত আরো অনেক মুহাদ্দিসের নিকট থেকে তিনি ইলমে হাদীসের সনদ লাভ করেন।