ইয়েমেনে আল কায়দার হাতে অপহৃত বাংলাদেশি সাবেক সেনা কর্মকর্তা

Published: 14 February 2022

পোস্ট ডেস্ক :

“আগামী ফেব্রুয়ারির ১৮ তারিখই মামার দেশে আসার কথা ছিল। এর মধ্যে কি থেকে কি হয়ে গেলো। এতোদিন কিছু হলো না, এখন হঠাৎ কি হলো!” মানবজমিনকে এভাবেই কান্নাজড়িত কন্ঠে বলছিলেন ইয়েমেনে অপহৃত জাতিসংঘ কর্মকর্তা এ কে এম সুফিউল আনামের ভাগ্নে নিয়াজ মামুন। নিয়াজ জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক লেঃ কর্নেল সুফিউল ইয়েমেনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তার বাড়ি কুমিল্লায়। সুফিউলের স্ত্রী কাজী নাসরীন আনাম ঢাকায় থাকলেও তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে দুজনই কানাডায় থাকেন। প্রায় দুই দশক আগে সুফিউল জাতিসংঘে যোগ দিয়েছিলেন এবং কয়েক মাসের মধ্যেই তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল বলেও নিয়াজ নিশ্চিত করেন।

উল্লেখ্য, গত শনিবার ইয়েমেনে নিয়োজিত জাতিসংঘের এক কর্মকর্তার বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছিল, দেশটিতে জাতিসংঘের ৫ কর্মীকে অপহরণ করা হয়েছে।

বলাবাহুল্য ওই পাঁচজনের একজন হলেন বাংলাদেশি সুফিউল আনাম। সুফিউল ছাড়া বাকি চারজনই ইয়েমেনের নাগরিক বলে রয়টার্স নিশ্চিত করেছিল।

এদিকে, সুফিউলের কানাডা প্রবাসী একমাত্র পুত্রের বরাতে ভাগ্নে নিয়াজ জানান, জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সুফিউলকে উদ্ধারের বিষয়ে তার পরিবারের সদস্যদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সুফিউলের পরিবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করলে তারাও বিষয়টি দেখছেন বলে জানিয়েছেন।

ওদিকে, ডিডাব্লিউ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ইয়েমেনে আল কায়দার হাতে আটক হয়েছেন জাতিসংঘের পাঁচ কর্মী যাদের চারজন ইয়েমেনের নাগরিক, অন্যজন বিদেশি। তবে কারও পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। জাতিসংঘের ইয়েমেন অফিস জানিয়েছে, সেখানকার স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের মাধ্যমে আল কায়দার সঙ্গে আলোচনা চলছে। আল কায়দা মুক্তিপণ দাবি করেছে।

ইয়েমেনের প্রশাসন জানায়, শুক্রবার ওই ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ ইয়েমেনে একটি ফিল্ড ট্রিপ করে যখন তারা রাজধানীর দিকে ফিরছিলেন তখন মাঝপথে তাদের গাড়ি আটকায় আল কায়দা জঙ্গিরা। সেখান থেকে তাদের অপহরণ করে অজানা গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার আল কায়দা জাতিসংঘের ইয়েমেন দপ্তরে যোগাযোগ করে মুক্তিপণের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন আটক আল কায়দা জঙ্গির মুক্তিরও দাবি জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুতি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনের রাজধানী সানা আক্রমণ করে মানসুর হাদির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ওই বছরের মার্চ থেকে ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট। সংঘাতে ইতিমধ্যে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ।

অতি সম্প্রতি সৌদির আবহা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কাছে ড্রোন হামলা করে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা। ওই হামলায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে পর্যটক ও বিভিন্ন দেশ থেকে সৌদি আরবে কাজ করতে যাওয়া সাধারণ শ্রমিকও রয়েছেন।