দেশে এখন এইডস রোগী প্রায় ১০ হাজার

Published: 1 December 2022

পোস্ট ডেস্ক :


‘স্বামী তো মরে বেঁচে গেছে। আমি গৃহহীন। দুই সন্তান নিয়ে কোথায় যাব, কিছুই জানি না। একসময় ইচ্ছা হতো জীবন দিয়ে দিই।

কিন্তু সন্তানের প্রতি মমতা ও দায়িত্ববোধ এবং কাউন্সেলিং—এই দুই মিলিয়ে আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। ’ কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর পুরান ঢাকার দোলাইরপাড় এলাকার বাসিন্দা। ১৫ বছর ধরে শরীরে এইডসের ভাইরাস এইচআইভি বহন করছেন তিনি। কাতারপ্রবাসী স্বামীর মাধ্যমে এই সংক্রমণ ঘটে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব এইডস দিবস। এবারের প্রতিপ্রাদ্য ‘অসমতা দূর করি, এইডসমুক্ত বিশ্ব গড়ি’। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন এইডস রোগী প্রায় ১০ হাজার।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস/এসটিডি কন্ট্রোল (এনএএসসি) প্রগ্রামের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত রয়েছে এক বছরে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সাধারণ জনগোষ্ঠীর ১৮৬ জন (২৬ শতাংশ), রোহিঙ্গা ১৮৮ জন (২৬ শতাংশ), বিদেশফেরত এবং তাঁদের পরিবারের সদস্য ১৪৪ জন (২০ শতাংশ), ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় মাদক গ্রহণকারী ৬১ জন (৮ শতাংশ), নারী যৌনকর্মী ১৭ জন (২ শতাংশ), সমকামী ৬৭ জন (৯ শতাংশ), পুরুষ যৌনকর্মী ৫৩ জন (৭ শতাংশ) এবং তৃতীয় লিঙ্গের ১৩ জন (২ শতাংশ)।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এইচআইভি ভাইরাস মানুষের শরীরে ১০ বছর পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। এতে এই সময় বেশির ভাগ রোগী সমস্যা গোপন করে চিকিৎসার বাইরে থাকছে।

জাতীয় এইডস অ্যান্ড এসটিডি কন্ট্রোলের পরিচালক ডা. শাহ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করলেই এইডস হয় না। আবার এইডস হলেই মানুষ মারা যায় না। অনেক সময় ১০ বছরের বেশি সময় পর এইডসের লক্ষণ দেখা দেয়। সংক্রমিত ব্যক্তির যখন জ্বর হয়, দ্রুত ওজন কমে যায়, টিউবারকুলোসিস (টিবি) ইত্যাদি উপসর্গ ও সমস্যা দেখা দেয়, তখন বেশির ভাগ মানুষ পরীক্ষা করে এবং এইডস শনাক্ত হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস/এসটিডি কন্ট্রোল কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রথম এইডস শনাক্ত হয় ১৯৮৯ সালে। ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় আট হাজার ৭৬১ জনে। চলতি বছর পর্যন্ত তা বেড়ে হয় ১০ হাজারের কাছাকাছি।

দেশে গত বছর ৭২৯ জনের দেহে এইচআইভি শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রোহিঙ্গা ছিল ১৮৮ জন। লিঙ্গভেদে পুরুষ ৪২০ জন, নারী ২১০ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ১২ জন।