নেপালকে পায়রা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব
বিশেষ সংবাদদাতা :
বাংলাদেশের পায়রা বন্দর ব্যবহারের জন্য নেপালকে প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতালিতে সম্প্রতি সাক্ষাৎ হয় নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে। সেখানেই নবনির্মিত পায়রা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের ফুড সিস্টেমস সামিট প্লাস টু স্টকটেকিং মোমেন্ট (ইউএনএফএসএস+২) সম্মেলনে শুক্রবার যোগ দেন নেপালি প্রধানমন্ত্রী। এতে তিনি বিভিন্ন অধিবেশনে ভাষণ দেন। সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরাঁ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। এ খবর দিয়েছে নেপালের অনলাইন দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট। এতে বলা হয়, ভারত ও চীন ছাড়াও পায়রা বন্দর নেপালকে ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমানে কলকাতা, হলদিয়া এবং ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তম বন্দরের মাধ্যমে তৃতীয় দেশগুলোতে বাণিজ্য করছে নেপাল। ওদিকে নেপাল ও চীনের মধ্যে স্বাক্ষরিত এক প্রোটকল অনুযায়ী চীনের চারটি সমুদ্র বন্দরকে ব্যবহারের সম্মতি দিয়েছে চীন।
এগুলো হলো তিয়ানজিন, শেনঝেন, লিয়ানিউঙ্গাঙ্গ এবং ঝানজিয়াং। এছাড়া তিনটি স্থলবন্দর ব্যবহার করতে দেবে চীন। সেগুলো হলো- ল্যানঝৌউ, লহাসা এবং শিগাটসেতে অবস্থিত। শুধু তাই-ই নয়। একই সঙ্গে নেপাল ও চীনের মধ্যে ৬টি ট্রান্সজিট পয়েন্ট দিয়ে নেপাল রপ্তানি করতে পারবে।
ওদিকে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মিটিংয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, পায়রা বন্দর ব্যবহারে সক্ষম হবে নেপাল। ইতালিতে মিডিয়ার কাছে এ কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। বাংলাদেশি মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, এরই মধ্যে চালনা ও চট্টগ্রাম বন্দর নেপালের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে।
নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ১৯৯৭ সালে কাঁকড়ভিটা-ফুলবাড়ি-বাংলাবান্ধা ট্রানজিট রুট খুলে দেয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মংলা বন্দর নেপালকে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের রহনপুর ও ভারতের সিংহবাদ ট্রানজিট করিডোর দিয়ে রেল ট্রানজিট দেয়া হয়েছে নেপালকে। বর্তমানে নেপালকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরকে ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। নেপালের অনুরোধে গত বছর ডিসেম্বরে বাংলাবান্ধা স্থল কাস্টমস স্টেশন ব্যবহারের বিষয়ে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ঢাকায় নেপালি দূতাবাস বলেছে, বছরের পর বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যে অসমতা পরিলক্ষিত হচ্ছে নেপালের। দুই দশক ধরে নিষিদ্ধ থাকার পর গত বছর ডিসেম্বরে বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর ব্যবহারে সম্মতি দেয়ার পর নেপালের রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করা হয়।