‘গ্রেট হিমালয়া ট্রেইল’ পাড়ি দিলেন ইকরামুল

Published: 3 August 2023

পোস্ট ডেস্ক :


হিমালয় পর্বতমালার মধ্যদিয়ে নেপালের পূর্ব থেকে পশ্চিমে চলে যাওয়া পথটি ‘গ্রেট হিমালয়া ট্রেইল’। ঝুঁকিপূর্ণ দুর্গম এই পথটি পায়ে পায়ে হাঁটার দুঃসাহসিক অভিযানে নেমে সফল হয়েছেন গাজীপুরের ইকরামুল হাসান শাকিল। এ অভিযানে ৫ হাজার ৭৫৫ মিটার উঁচু তাশি-লাপৎসা পর্বতের চূড়ায় তিনি উড়িয়েছেন লাল-সবুজের পতাকা। তিনিই প্রথম বাংলাদেশি, যিনি এই পথ পাড়ি দিলেন। বিশ্বের ৩৩তম এবং সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে গ্রেট হিমালয়া ট্রেইলের দুর্গম ও দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়ার গৌরব অর্জন করেছেন তিনি। ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে পড়াশোনা করা গাজীপুরের বাগচালা গ্রামের ২৯ বছর বয়সী ইকরাম হোসেন শাকিল গ্রেট হিমালয়া ট্রেইল, যার দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার, তার পুরোটা ১০৯ দিনে পাড়ি দিয়েছেন। দুর্গম এই পথ পাড়ি দেয়ার পথে ঝুঁকির শেষ ছিল না। মৃত্যু ঝুঁকিও ছিল। নেপালের পশ্চিম প্রান্তের হিলশা সীমান্ত থেকে শুরু করে পূর্বাঞ্চলীয় কাঞ্চনজঙ্ঘা বেস ক্যাম্প পর্যন্ত অভিযানে তিনি ২৯টি দুর্গম গিরিপথ অতিক্রম করেছেন। এর মধ্যে ১৪টিই ছিল বিপজ্জনক।

পাহাড়-পর্বত জয়ের স্বপ্ন বা নেশা তার ছোটবেলা থেকেই। নানা চেষ্টার পাশাপাশি এর জন্য তিনি ভারতের সেনাবাহিনীর কাছ থেকেও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
শাকিল আরও জানান, পর্বত আরোহণের খেলায় বেসরকারিভাবে তিনি কিছু পৃষ্ঠপোষকতা পান। তবে সরকারি- বেসরকারিভাবে আরও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পৃথিবীর সবক’টা উঁচু পাহাড়ে এমন ধরনের অভিযান করতে চান তিনি। ৯ই জুলাই কাঞ্চনজঙ্ঘা উত্তর বেজক্যাম্প পাংপেমাতে পৌঁছানোর মাধ্যমে অভিযানের ইতি টানেন তিনি। তার স্বপ্ন ছুঁইয়ে তিন দিন আগে দেশে ফিরেছেন। এর আগেও শাকিল আরোহণ করেছেন ৬ হাজার ১৮৬ মিটার উঁচু মাউন্ট কায়াজোরি পর্বত, ৭ হাজার ১২৭ মিটার উঁচুর হিমলুং, ৬ হাজার ৩৩২ মিটারের দোলমা খাংসহ বেশ কিছু পর্বত। গ্রেট হিমালয় বা বৃহত্তর হিমালয় বা হিমাদ্রি হলো হিমালয় রেঞ্জের সর্বোচ্চ পর্বতশ্রেণি। বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট এবং অন্যান্য উচ্চ শৃঙ্গ যেমন কাঞ্চনজঙ্ঘা, লোটসে এবং নাঙ্গা পর্বত বৃহত্তর হিমালয় পর্বতের অংশ। গাজীপুরের ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বাগচালা গ্রামের প্রয়াত খবির উদ্দিন ও শিরিন আক্তার দম্পতির তিন ছেলের মধ্যে শাকিল প্রথম সন্তান।

শাকিলের এমন গৌরব অর্জনে তার মা শিরিন আক্তার, আত্মীয়স্বজন, গ্রামবাসী আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত। তারা চান, আরও বহুদূর এগিয়ে যাক গ্রামের সন্তান। স্বজনদের পাশাপাশি তার স্কুল শিক্ষক, গৃহ শিক্ষক সবাই আনন্দিত গর্বিত। প্রশাসনের কর্মকর্তাগণও তার এ অর্জনে আনন্দিত। এ বিষয়ে কালিয়াকৈর উপজেলা কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, শাকিল আমাদের কালিয়াকৈর উপজেলাবাসীর জন্য সম্মান বয়ে এনেছে। আমরা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি। পরবর্তী কোনো অভিযানে প্রয়োজন হলে তাকে সহযোগিতা করা হবে।