বৈশ্বিক ভূ রাজনীতিতে বাংলাদেশের স্থান আজ অনেক সুদৃঢ়
![ইমরান চৌধুরী](https://banglapost.co.uk/files/uploads/2023/08/Imran-Chowdhury-byKM-19-1536x1024-1-150x100.jpg)
ইমরান চৌধুরী বি ই এম
অনেক বন্ধুর পথ অতিক্রম করে এসেছে বাংলাদেশ সেই শুভ জন্ম লগ্ন থেকে । গত এক দশক বদলে দিয়েছে বাংলাদেশের সামগ্রিক মর্যাদা । একটি স্থিতিশীল সরকার, একটি উন্নয়নমুখী গণতন্ত্র, একটি বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং সর্ব পরি উচ্চধাপে পৌছার আশায় আশান্বিত জনগণই এই উচ্চতাঁর শীর্ষমার্গে আরোহণের প্রধান উপাদান।
বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ম্যাপে আজ বাংলাদেশের কথা সবার মুখে – ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন জন সংখ্যার দেশ চায়না কে পিছনে ফেলে ১৬০ মিলিয়নের দেশও হয়ে বাংলদেশ আজ বিশ্বের প্রথম গার্মেন্টস প্রস্তুতকারী দেশ । ১৯৭১ – ৭২ সালে যুদ্ধ বিধ্বস্ত নব্য স্বাধীন দেশ শুরু করেছিল প্রায় ১৪ শতাংশ মাইনাস জি ডি পি নিয়ে আর আজ বাংলাদেশের বছরের পর বছর (ইয়ার অন ইয়ার) জি ডি পি গড় প্রায় ৬ দশমিক হারে ক্রমাগত ভাবে একই সমান্তরালে এগিয়ে যাচ্ছে । পক্ষান্তরে ২০০৮ সালের জাগতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে পারে নাই আজও অনেক বিত্তশালী পরাশক্তি দেশগুলো – গত ১৫ বছর যাবত খুবই শ্লথগতিতে অর্থনীতির সূচক ব্যারোমিটার এর কাঠিটারনড়াচড়া বলতে গেলে প্রায় অনুবিক্ষনিক।
বাংলাদেশ উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বৈদেশিক নীতি এবং কূটনীতিতেও প্রমাণ করছে যে, বাংলাদেশ এর নেতৃত্ব অতীতের মত অপরিপক্ব ও অদূরবদ্ধদৃষ্টিদের হাতে নাই, বিশ্ব আজ খুবি সুনিপুনতার উপলব্ধি করতে পেরেছে – বাংলাদেশ এক বিকাশের মহা সড়কে সকলের সাথে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে বৈশ্বিক জনগোষ্ঠীর জীবনের মান এবং নিজস্ব স্বকীয়তা সমুন্নত রেখে, শান্তির দূত – এক অকুতোভয় অগ্রগামী অংশীদার হয়ে নেতৃত্বদিতে সক্ষম।
মৌলবাদের সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন নিকৃষ্ট গলির আস্তাকুরে যুবক সমাজকে প্রবেশ করা থেকে বিরত হবার মত ব্যাপক টাস্ক গ্রহণ করতঃ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড উৎপাটনের এই সদিচ্ছা এবং পরিকল্পনা সহ টেররিজম রুদ্ধ করার মত বলিষ্ঠ পদক্ষেপ আজ উন্নত এবং মুক্ত বিশ্বের নিকট অত্যন্ত এক সমাদৃত একটি পদক্ষেপ বলে বিবেচিত ।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হবার সময় সেই রক্তক্ষয়ী জেনোসাইড এর ক্রান্তিকালে দেশে একটিও ব্রিজ অক্ষত অবস্থায় ছিল না – মাইনাস জি ডি পি নিয়ে আমাদের পথচলা শুরু হয়েছিল – আর আজ দেশের মানুষ নিকট অকল্পনীয়, দুঃস্বপ্নের রূপকথার চেয়েও আশ্চর্যজনক পদ্মা সেতু পেয়েছে দেশ । এ গর্ব শুধু দেশের মানুষেরই গর্ব নয়, এই গর্বে বিশ্বও সমান ভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত।
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভূ রাজনীতিতে শান্তি এবং স্থিতি তথা ক্রস বর্ডার টেররইজম, ইস্ক্রিমিশ এবং আক্রমণ সহ বেঅফ বেঙ্গল তথা ভারত মহাসাগর রিজিওন নিরাপত্তা বজায় রাখতে হলে বাংলাদেশ এর অবস্থান আজ বিশ্বের মহাশক্তিরা উপলব্ধি করতে পেরেছে।
আমাদের ঐতিহাসিকভাবে শুভাকাঙ্ক্ষী, স্বাধীনতার যুদ্ধের সময়ের সেই হিতৈষী বন্ধু যারা আমাদের দুঃসময়ের সহ যোদ্ধা হয়েছিল , যাদের সাথে আমাদের রয়েছে সহস্ত্র বছরের অংশভোগী ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা, সামাজিক অনুশাসন ভারতের সঙ্গে নিবিড় বন্ধুত্বও আবারো প্রমাণিত করেছে আমরা একে ওপরের সম্পূরক । বিশ্ব ভূ রাজনীতিতে ভারত আজ অবস্থান করছে এক ভিন্ন পরিমণ্ডলে এবং ভারতের ও বাংলাদেশের মধ্যবর্তী বিশ্বস্ততা এবং অনুপূরকতা আপাত: দৃষ্টিতে প্রতীয়মান হচ্ছে যে বাংলাদেশের এই নব্য স্থান গ্রহণে অনেক ত্বরান্বিত করেছে । এবং এটা দেশের জন্য, উন্নয়নের জন্য, দেশের কঠোর পরিশ্রমী জনসংখ্যার জন্য, বিশ্বায়িত বিশ্বের একটি ব্যাপক উত্তরণ ।
ভূ–রাজনীতি হল লিভারেজ (উদ্দেশ্যসাধনের উপায়) দেয়া এবং নেয়া । আচরণ পরিবর্তন না করলে কেউই নিজেদের নিরাপদ করতে পারবে না। এই পরিবর্তিত এবং পরিবর্তনশীল বিশ্বে ভূগোল ছাড়া আর কিছুই পরিবর্তন হয় না। বিশ্বায়নকে যদি সফল করতে হয়, তা অবশ্যই গরিব এবং ধনী উভয়ের জন্যই সফল হবে যদি সকলে উদ্দেশ্যসাধনের উপায় দিতে বা নিতে উৎসাহী হয় ।