সাঈদীর জান্নাত চেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ফেঁসে যাচ্ছেন দুই শিক্ষক!

Published: 19 August 2023

বিশেষ সংবাদদাতা :


মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান চেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সরকারি কলেজের একজন প্রভাষক ও এক স্কুলশিক্ষক। ১৪ আগস্ট রাতে সাঈদী কারাগারে মারা যাওয়ার পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বহুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজাদ রহমান তার ফেসবুক গ্রুপ এবং নিজের ফেসবুক আইডি থেকে দুটি স্ট্যাটাস দেন।

আজাদ রহমান তার ফেসবুক গ্রুপ আইডিয়াল মির্জাপুরে লিখেন ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী আর নেই।

আল্লাাহ উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুক আমিন।’ নিজের ফেসবুক আইডিতে আজাদ রহমান লিখেন, ‘ইয়া রব’, ছোট বেলায় যাঁর ওয়াজ শুনে দ্বীন ইসলামের প্রতি ভালোবাসা গভীর হয়েছে, তাঁকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন আমীন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।’ এ ছাড়া ওই শিক্ষক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্যের সরকারবিরোধী স্ট্যাটাসে ইনশাআল্লাহ লিখে মন্তব্য করেন।

শিক্ষক আজদ রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মির্জাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি। এদিকে মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক আবু তারেক চারদিন আগে তার ফেসবুক আইডিতে লিখেন ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাস্সিরে কুরআন আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে আল্লাহ পাক জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন-আমিন’।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রভাষক আবু তারেক ও শিক্ষক আজাদ রহমানের স্ট্যাটাস নিয়ে মির্জাপুরে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

বহুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজাদ রহমানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আবেগবশত স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছিল।

তার এই স্ট্যাটাস দেওয়া ঠিক হয়নি বলে জানান।
মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক আবু তারেক বলেন, আমি আবেগবশত স্ট্যাটাস দিয়েছি। আসলে ঠিক হয়নি।

মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফুল ইসলাম জানান, একজন সরকারি শিক্ষকের এমন স্ট্যাটাস গত পাঁচ দিনেও প্রশাসনের নজরে আসে নাই। বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক।

মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি শুনেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বলবেন বলে তিনি জানান।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শরিফ উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি মীর এনায়েত হোসেন মন্টু বলেন, আমি অসুস্থ। এজন্য বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। তবে ওই শিক্ষক একজন খারাপ মানুষ। ফেসবুকে এ রকম মন্তব্যে তার বিচার হওয়া উচিত।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, তাদের বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানানো হবে।

মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাহমিনা জাহান বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।