মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় পাচ্ছে না স্থানীয় কর্মকর্তারাও
পোস্ট ডেস্ক :

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার দিকে তাকালে দেখা যায়, বিভিন্ন দেশে তারা সচরাচর সরকারের শীর্ষ পদে অধীন ব্যক্তিদেরই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে। তবে এবার এই ভিসা নিষেধাজ্ঞায় পড়ছেন স্থানীয় পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারাও।
সম্প্রতি মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়ার নাগরিক স্বাধীনতা হরণকারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য ১০০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এদের সবাই নিকারাগুয়ার স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তা। এসব কর্মকর্তা দেশটির প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট (ওর্তেগার স্ত্রী) রোজারিও মুরিল্লোর অধীনে নিজ দেশের নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যুক্ত।
ওয়াশিংটন এর আগে ওর্তেগার প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজারিও মুরিলো, তার তিন সন্তান, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং কানাডা এই নিষেধাজ্ঞায় যোগ দিয়েছে। এবার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো স্থানীয় পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের।
গত ১৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বাক্ষরিত স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়। নিকারাগুয়ায় একটি জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ এবং একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ১০০ জন পৌর কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নাগরিক সমাজকে দমন করার অভিযোগ রয়েছে।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে, নিকারাগুয়ার গণতন্ত্রকে যারা হুমকির মুখে ফেলছে, তাদের জবাবদিহিতা বাড়াতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করা চালিয়ে যাবো। আমরা নিকারাগুয়ার জনগণের মৌলিক স্বাধীনতা এবং তাদের মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এক বছর আগে নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগার কঠোর সমালোচক বিশপ রোল্যান্ডো আলভারেজকে ২৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বিবৃতিতে বলেন, নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সহিংস প্রচারণা, অন্যায্য আটক এবং মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপের অনুমতি দিয়েছেন বা সহায়তা করেছেন।
পশ্চিম গোলার্ধ বিষয়ক মার্কিন সহকারী সেক্রেটারি ব্রায়ান নিকোলস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, আমরা নিকারাগুয়ার বিশপ আলভারেজের অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তি এবং নিয়মতান্ত্রিক দমন-পীড়ন বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি।
২০১৮ সালে সরকারের বিরুদ্ধে নিকারাগুয়ায় একটি জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্র বিদ্রোহের উৎপত্তি হয়। ওর্তেগা সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী তা সহিংসভাবে দমন করেছিল। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি তহবিল কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং এর প্রধান কর্মকর্তাদের দেশে ফিরতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালের ৭ নভেম্বরের নির্বাচনে নিকারাগুয়ায় টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসেন ড্যানিয়েল ওর্তেগা। ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ছিল।