বাংলাদেশ সীমান্তজুড়ে সতর্কতা
পোস্ট ডেস্ক :
মিয়ানমারের আরাকান বা রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতি বিবেচনা করে মিয়ানমার সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে সরকার। যেকোনো উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় কঠোর নজরদারি বাড়িয়েছে বিজিবিও। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রোববার বিজিবির মহাপরিচালক সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) অধীনস্থ উখিয়ার পালংখালী বিওপি এবং নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু বিওপি ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা এবং টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ বিওপি ও তৎসংলগ্ন সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার, রামু সেক্টর কমান্ডার ও সংশ্লিষ্ট চল ব্যাটালিয়নগুলোর অধিনায়করা সঙ্গে ছিলেন।
এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের রাখাইনে সংঘাত, সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতার কথা স্বীকার করেছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম মনে করেন, সংঘাতের তীব্রতা বাড়লে, সেখানকার রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢুকার আশঙ্কা রয়েছে। তারা ক্যাম্পে আশ্রিত পরিচিতজনদের কাছে আশ্রয় চাইতে পারে। তাই সরকারের আগে-ভাগে কৌশল অবম্বলন করতে হবে।
বিজিবির জনসংযাগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি পুরো মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতি চলছে। যার প্রভাব বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যেও এসে পড়েছে। প্রতিনিয়ত সেখানকার অস্থিতিশীল অবস্থা ও সংঘাতময় পরিস্থিতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে বিজিবি মহাপরিচালক রোববার কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিদর্শন করেন।
গত এক সপ্তাহে ধরে সীমান্তের ওপারে মর্টার শেল ও গুলির শব্দে অনিরাপদ মনে করছেন সীমান্তের মানুষ।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য উলুবনিয়া, তুলাতুলি ও কাঞ্জরপাড়া সপ্তাহজুড়ে গোলাগুলিতে ভয়ে তারা চিংড়ি ঘেরেও যেতে পারছেন না। সিরাজুল মোস্তফা লালু বলেন, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে গুলাগুলির শব্দে ঘরে থাকতে পারতেছি না।
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, ‘সীমান্তের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে সকাল-সন্ধ্যায় গুলির শব্দ বেশি পাওয়া যায়।
এদিকে গত শনিবার বিকালে মিয়ানমারে গুলাগুলির সময় টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উলুবনিয়া এলাকার নুরুল ইসলামের বাড়িতে একটি গুলি এসে পড়ে। পরে বিজিবি সদস্যরা তার বসতবাড়ির উঠান থেকে গুলিটি নিয়ে যায়। এনিয়ে এখন সীমান্তজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে যখন বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের চেষ্টা হয় তখনই আরাকানে অস্থিতিশতা রহস্যজনক। এটি যেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঠেকনোরই প্রচেষ্টা! তবে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন বলেও মতামত দিয়েছেন অনেকে।