তিন শতাধিক যুবকের মালয়েশিয়ায় মানবেতর জীবনযাপন

Published: 12 February 2024

পোস্ট ডেস্ক :


পরিবারের সদস্যদের কথা চিন্তা করে একটু সুখের আশায় বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন মেহেরপুরের তিন শতাধিক যুবক। দালালের খপ্পরে পড়ে ৩-৬ মাস কাজ না পেয়ে মালয়েশিয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পুলিশের। জানা গেছে, মেহেরপুর সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের তিন শতাধিক যুবক সহায়-সম্বল বিক্রি করে মালয়েশিয়ায় ভালো কাজ পাওয়ার আশায় দালালের হাতে জনপ্রতি তুলে দিয়েছিলেন ৫-৭ লাখ টাকা। ৩-৬ মাস আগে মালয়েশিয়ায় গেলেও আকামা (কাজের অনুমতিপত্র) না পাওয়ায় কর্মহীনভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কাজ না পেয়ে তারা খাবার-পানি সংকটে ভুগছেন। অন্যদিকে ঋণের টাকা পরিশোধ না করতে পেরে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এনজিও’র লোকেরা বাড়িতে এসে ভুক্তভোগীদের পরিবারদের চাপ দিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও প্রবাসে জিম্মিকারীরা এসব ভুক্তভোগীদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। ভুক্তভোগীদের আর্তনাদের এই সকল ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মালয়েশিয়ায় জিম্মাকারীদের কাছে আটকে থাকা কয়েকজন ভিডিওর মাধ্যমে জানান, মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের কেএনএফএইচ বালিকা বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান আব্দুল মাজেদ, হাড়াভাঙ্গা গ্রামে অবস্থিত এইচবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদ, কাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য শরিফুল ইসলাম ওরফে ন্যাড়া, কাজীপুর এলাকার মুসা কলিম, সুরুজ, বালিয়াঘাট গ্রামের আনিসুল হক মাস্টারের ছেলে শোভনের মাধ্যমে ঢাকায় নাভিরা ও মুসা কলিম এন্টারপ্রাইজ নামের এজেন্সির মাধ্যমে টাকা দিয়ে ভালো কাজের স্বপ্ন দেখে মালয়েশিয়ায় এসেছিলাম।

গেল ৩-৬ মাসেও দালাল চক্রের সদস্যরা কোনো কাজ দিতে পারেনি।

ভালো কাজের আশ্বাসে প্রতিনিয়ত দালাল চক্রের পক্ষ থেকে সামান্য খাবার ও পানি দিচ্ছে। যা যথেষ্ট নয়। প্রতিবাদ করতে গেলে, প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রেখেছে। এদিকে সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে কেউ রেখেছেন জমি বন্ধক, কেউ সুদের উপরে টাকা নিয়েছেন, কেউ বা নিয়েছেন এনজিও থেকে ঋণ। এখন যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তারা বাড়ির ওপর এসে টাকা দেয়ার জন্য পরিবারের সদস্যদের চাপ সৃষ্টি করছে। এদিকে, দালাল চক্রের সঙ্গে জড়িতদের বাড়িতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তারা গা ঢাকা দিয়েছেন। এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান, ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দোষী প্রমাণিত হলে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। মেহেরপুর পুলিশ সুপার নাজমুল হক (পিপিএম) জানান, আমরা প্রাইমারি ইনভেস্টিগেশন শুরু করেছি। বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।