নরেন্দ্র মোদির উত্তরসূরি যোগী আদিত্যনাথ?

Published: 20 April 2024

পোস্ট ডেস্ক :


শুক্রবার ভারতের ২১টি রাজ্যে ছয় সপ্তাহব্যাপি সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রাজ্যগুলির মধ্যে একটির ওপর দেশটির রাজনৈতিক দলগুলির সাফল্য অনেক বেশি নির্ভর করে। সেটি হল উত্তরপ্রদেশ বা ইউপি, যা ভারতের সবচেয়ে জনবহুল এবং রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, ২৪ কোটি লোকের আবাস এবং ১৫শতাংশ সংসদীয় আসন। ২০১৯ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি ইউপির ৮০টি আসনের মধ্যে ৬২ আসন পেয়ে জয়ী হয়েছিল। এবার সেই কৃতিত্বের পুনরাবৃত্তি হলে এর কৃতিত্ত দিতে হবে রাজ্যের বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথকে।ইউপির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় আদিত্যনাথ এই নির্বাচনের সরাসরি প্রার্থী নন, কিন্তু তিনি ভোটারদের পের ব্যাপক প্রভাব বজায় রেখেছেন। ২০১৭ সাল থেকে তার অধীনে বিজেপি পেশীবহুল শাসন কায়েম করেছে। ২০১৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত, ইউপির অর্থনীতি বার্ষিক ৫.৩শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সমগ্র ভারতের তুলনায় এক শতাংশ বেশি। এবং রাজ্যটিতে পুলিশ ‘এনকাউন্টার’ (বিচারবহির্ভূত হত্যা) বেড়েছে, যা প্রতি ১৫ দিনে একটি ঘটে থাকে।যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্ব শৈলী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতো। তবে, হিন্দুত্বের প্রতি প্রতিশ্রুতি এবং হিন্দু-জাতীয়তাবাদী আদর্শ যা বিজেপিকে অনুপ্রাণিত করে, তাতে তিনি এমনকি মোদিকেও ছাড়িয়ে গেছেন। হিন্দু সন্ন্যাসী আদিত্যনাথ ১৯৯৮ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন, সেই সময়ে তিনি ভারতের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।ন্যাড়ামাথার গেরুয়া পরিহিত সন্নাসী রাজনীতিবিদ হিসাবে আদিত্যনাথ দ্রুতই ভয়ঙ্কর উগ্রবাতীয়তাবাদ এবং মুসলিম-বিরোধী বক্তব্যের মাধ্যমে ব্যাপক পরিচিত তৈরি করেন। একটি বক্তৃতায় তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘যদি তারা একটি হিন্দু মেয়ে হরণ করে, আমরা ১শ’টি মুসলিম হরণ করব।’ এমনকি তিনি হিন্দুত্ব দর্শনকে গুলিয়ে ফেলার জন্য জাতীয় বিজেপি নেতৃত্বের সমালোচনা করেছিলেন। এইসব তাকে একটি অকুন্ঠ সমর্থনের ভিত্তি দিয়েছে, এবং বিজেপি থেকে ছাড় পাওযার সুযোগ করে দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন যে, বর্তমানে ৭৩ বছর বয়সী মোদির তৃতীয় মেয়াদ তার জন্য ভারত শাসনের শেষ মেয়াদ হবে। এবং যোগী আদিত্যনাথ তার উত্তরসূরি হওয়ার একজন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। বিজেপির হিন্দু-জাতীয়তাবাদী সমর্থকদের জন্য এটি একটি স্বাগত পরিবর্তন হবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই ধর্মীয় উগ্রতার দিকে ঝুঁকে পড়া দেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন উদারপন্থী ভারতীয়দের জন্য এটা হবে গভীরভাবে উদ্বেগজনক।