আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডা পাঠানোর বিল পাস
স্টাফ রিপোর্টার :
ব্রিটেনে স্থায়ী হতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আবেদনের মধ্যেই তাদের আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় পাঠানোর বিল পাস করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। এই বিলের পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনার মুখেই এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার দৃঢ়প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। মঙ্গলবার এ খবর দিয়ে অনলাইন এনডিটিভি জানিয়েছে, পার্লামেন্টে ‘রুয়ান্ডা বিল’ পাসের পর ঋষি সুনাকের দল কনজারভেটিভ পার্টিতে বড় ধরনের মতানৈক্য দেখা দিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে সকল বাধা এবং রাজনৈতিক চাপ মোকাবিলা করে এ বিল বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ঋষি সুনাক এক বিবৃতিতে বলেছেন, অবৈধ পথে যাওয়া অভিবাসন ঠেকাতে এই ঐতিহাসিক বিল বাস্তবায়ন শুধুমাত্র সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া নয় বরং এটি অবৈধ অভিবাসন রোধে বড় ধরনের মৌলিক পরিবর্তনের একটি।
ব্রিটেনের পার্লামেন্টে এই বিল পাস হওয়ার পরপরই বিলটি সংশোধন করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এই বিল বাস্তবায়িত হলে বৈশ্বিকভাবে আইনের শাসন ব্যাহত হবে বলে মনে করছে মানবাধিকার এই সংস্থাটি। ফলে অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে যুক্তরাজ্যকে এই নীতি পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এর আগে ২০২২ সালে সংসদে এই বিলের প্রস্তাব উত্থাপন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো অভিবাসনপ্রত্যাশীকে রুয়ান্ডায় পাঠায়নি প্রশাসন। গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট এই নীতিকে বেআইনি বলে ঘোষণা করে। তবে ঋষি সুনাক মনে করেন, দেশটির নতুন এই নীতি বৈধ এবং এর মাধ্যমে ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাওয়া অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের যাতায়াত ঠেকানো সম্ভব হবে।
এক কোটি ৩০ লাখ মানুষের দেশ রুয়ান্ডা। দেশটি প্রশাসনিকভাবে নিজেদের স্থিতিশীল দেশ হিসেবে দাবি করে। তবে রুয়ান্ডার ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট পল কাগামের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নসহ নাগরিকদের বাকস্বাধীনতা খর্বের অভিযোগ রয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো অভিবাসনপ্রত্যাশীকে রুয়ান্ডাতে পাঠানো হয়নি, তবে রুয়ান্ডাকে এরইমধ্যে ২৪ কোটি পাউন্ড পরিশোধ করেছে ব্রিটেন। এ ছাড়া রুয়ান্ডায় কয়েকশ’ অভিবাসীকে ঠাঁই দেয়ার সক্ষমতা থাকলেও সেখানে হাজার হাজার অভিবাসীর বাসস্থানের পরিকল্পনা করেছে ব্রিটেন সরকার।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিশিষ্ট আইজীবি ব্যারিষ্টার আবুল কালাম বলেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট আইন পাশ করার পর এই আইনে রাজা স্বাক্ষর করার মধ্য দিয়ে তা আইনে রুপান্তর হবে। আর ১২ দিনের মধ্যে প্রথম ফ্লাইট নিয়ে যাবে। কিন্তু গত সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আগামী, ১০/১২ সাপ্তাহের মধ্যে তা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, এসাইলাম আবেদনকারীরা নির্যাতিত নিপীড়িত হয়ে আসেন। তাদের ক্ষেত্রে এ আইন কতটুকু যুক্তিযুক্ত হবে এ নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেন।
উল্লেখ্য, অবৈধ মানব পাচার ঠেকাতে এর আগে ২০২২ সালে প্রথম বরিস জনসন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এই বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি এই বিলটি পাস করে দেশটির পার্লামেন্ট।