যৌনকর্মীদেরও এবার মাতৃত্বকালীন ছুটি, দেয়া হবে পেনশন

Published: 9 May 2024

পোস্ট ডেস্ক :


যৌনকর্মীদের বিশেষ স্বীকৃতি। এবার শ্রম আইনের অন্তর্ভুক্ত করা হল যৌনকর্মীদের। চুক্তি ভিত্তিক কর্মী হিসেবে কাজ করার সুযোগ দেয়া হবে তাদের। এর বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে এই নজির গড়ল বেলজিয়াম।

 

জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার বেলজিয়ামের সংসদে যৌনকর্মীদের চুক্তিভিত্তিক পদে কাজ করার অধিকার দেয়া হয়। পাশ হয় বিশেষ আইন। এই আইনের পক্ষে ভোট পড়ে ৯৩টি। ৩৩ জন ভোটদানে বিরত ছিলেন সে দেশের সংসদে। বিপক্ষে একটি ভোটও পড়েনি।

 

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে বেলজিয়ামই ইউরোপের প্রথম এবং একমাত্র দেশ হিসেবে স্বেচ্ছায় যৌনপেশা অপরাধ নয় বলে ঘোষণা করে। আর এবার তাদের চুক্তিভিত্তিক কর্মীর তকমা দিল এই দেশ। যৌনপেশার সঙ্গে জড়িতদের শ্রম আইনের আওতায় এনে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বেলজিয়ামের।

 

নয়া এই শ্রম আইনের অধীনে এবার থেকে যৌনকর্মীরা স্বাস্থ্যবিমা, পেনশন, বেকারত্ব ভাতা পাবেন। এ ছাড়াও যৌনকর্মীদের দেয়া হবে মাতৃত্বকালীন ছুটি। যা কার্যত বিশ্বে নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত।

 

এমনকী, কোনও গ্রাহককে না বলার অধিকারও থাকবে যৌনকর্মীদের। অর্থাৎ যৌন পরিষেবা প্রত্যাখ্যান করার অধিকার দেয়া হবে তাদের। যৌনক্রিয়া প্রত্যাখ্যান প্রত্যেক যৌনকর্মীর অধিকার বলেও স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে বেলজিয়ামে। তার জন্য কোনও শাস্তির মুখে পড়তে হবে না তাদের, কোনও নোটিশ পিরিয়ডও দিতে হবে না। চুক্তিভিত্তিক যৌনকর্মীর চুক্তি ভেঙে বেরনোরও অধিকার থাকবে নতুন এই আইনে। তবে সরকার জানিয়েছে, চুক্তি ভাঙলেও বেকারত্ব ভাতা কিংবা অন্যান্য সুবিধাগুলি থেকে তাদের বঞ্চিত করা হবে না।

 

যৌনকর্মীদের পরিচয় গোপন রাখার অধিকারও দেয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে তারা পেশা পরিবর্তন করতে চাইলে সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিতই থাকবে। কোনও ধরণের বঞ্চনা বা বিভাজনের শিকার না হতে হয়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা বলে জানিয়েছেন বেলজিয়াম সরকার।

 

শ্রম আইনে পিম্প অথবা যৌনকর্মীদের দালালদের জন্য কিছু কড়া নির্দেশিকা দেয়া হয়েছে। শ্রম আইনে বলা হয়েছে, যৌনকর্মীদের সঙ্গে সর্বদাই থাকবে একটি অ্যালার্ম বটন। কোনও কর্মী ওই অ্যালার্ম বাজাবে তাকে সুরক্ষিতভাবে বের করে আনার দায়িত্ব বর্তাবে এই দালালদের উপরই।

 

যদি কোনও যৌনকর্মী ছয় মাস ধরে ১০ জনের বেশি গ্রাহক ফিরিয়ে দেন তবে দালালরা সরকারের কাছে তাকে নিয়ে মধ্যস্থতার দাবি জানাতে পারবেন। ওই কর্মীকে যৌনপেশা থেকে তাড়িয়ে দেয়ার কোনও অধিকার অবশ্য থাকবে না দালাল অথবা পিম্পদের।

 

এই আইন কেবলমাত্র যৌনকর্মীদের জন্যই কার্যকর। পর্ন সিনেমার অভিনেতা, স্ট্রিপার বা ওয়েবক্যাম পারফর্মাররা এই আইনের অধীনে সুরক্ষিত থাকবে না। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে বেলজিয়াম সরকার।