যা লেখা আছে এমপি আনারের বন্ধু গোপালের মিসিং ডায়েরিতে

Published: 20 May 2024

পোস্ট ডেস্ক :


চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজীম আনার তিন দিন ধরে পরিবারের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। চার দিন ধরে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার। এতে উদ্বিগ্ন রয়েছেন তার পরিবারের সদস্য ও নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় শনিবার ভারতের বরাহনগর থানায় মিসিং ডায়েরি করেছেন এমপি আনারের বন্ধু শ্রী গোপাল বিশ্বাস।

এমপিকে খোঁজ করতে শনিবার ভারতে গেছেন তার ভাতিজা মেহেনাজ হোসাইন সাইমন। জিডিটি তিনিই এই প্রতিনিধিকে দিয়েছেন। পাঠকদের জন্য মিসিং ডায়েরিতে যা লেখা হুবহু তুলে ধরা হলো—

জিডিতে গোপাল বিশ্বাস উল্লেখ করেছেন- গত ১২মে ১৭/৩ মণ্ডলপাড়া লেন, কলি-৯০ আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমার বাড়িতে বাংলাদেশের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার, পিতা ইয়াকুব আলী বিশ্বাস, সরকারি ভূষণ স্কুল রোড, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে আসেন। (উল্লেখ্য, ওনার সঙ্গে আমাদের ২০-২৫ বছরের পারিবারিক সম্পর্ক)।

গোপাল বিশ্বাস বলেন, পরের দিন দুপুর ১.৪১ মিনিটে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে আমার বাড়ি থেকে রওনা হয়ে যান। যাওয়ার সময় বলে যান আমি দুপুরে খাব না। সন্ধ্যাবেলা ফিরে আসব এবং যাওয়ার সময় নিজে গাড়ি ডেকে বিধান পার্ক কলকাতা পুলিশ স্কুলের সামনে থেকে গাড়িতে উঠে চলে যান। যাওয়ার সময় গাড়িতে উঠতে দেখেন শুভজিত মান্না। তারপর উনি সন্ধ্যাবেলা না ফিরে হোয়াটসঅ্যাপ এ মেসেজ করে জানায় আমি বিশেষ কাজে দিল্লিতে চলে যাচ্ছি এবং পৌঁছে ফোন করব, তোমাদের ফোন করার দরকার নেই। বুধবার বেলা ১১টা ২১ মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করে জানায় আমি দিল্লি পৌঁছালাম, আমার সঙ্গে ভিআইপিরা আছে। ফোন করার দরকার নেই, এই একই মেসেজ নিজের বাড়িতে এবং পিএকে (এমপির ব্যক্তিগত সহকারী) ফরোয়ার্ড করে। বৃহস্পতিবার সকালবেলা ওনার পিএকে ফোন করে। কিন্তু পিএ ফোন রিসিভ করতে পারেনি, পরে যখন রিং ব্যাক করে তখন আর ওনার ফোনে কোনোরূপ যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার ওনার মেয়ে আমাকে ফোন করে জানায় আংকেল আমার বাবার সঙ্গে কোনোরূপ যোগাযোগ করতে পারছি না। তারপর থেকে আমি ওনার যাবতীয় পরিচিতদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করি এবং সবাই তারপর থেকে ওনাকে (এমপি) ফোন করে কিন্তু যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

গোপাল বলেন, শনিবার বাধ্য হয়ে বরাহনগর থানায় গিয়ে মিসিং ডায়েরি নেওয়ার জন্য অনুরোধ করি।

গোপাল বিশ্বাসের সঙ্গে এমপি আনারের সম্পর্ক নিয়ে জানতে সংসদ সদস্যের কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিনের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে এমপির ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফ (পিএস) জানান, চরম দুর্দিনে এমপি মহোদয় ভারতে অবস্থান করতেন। গোপাল দাদারা তাকে আশ্রয় দিতেন। ২০ থেকে ২৫ বছরের সম্পর্ক তাদের। ভারত থেকেও তারা বাংলাদেশে আসলে এমপির বাড়িতেই আসেন। তিনিও ভারতে গেলে ওখানেই থাকেন বেশিরভাগ। তাদের সঙ্গে এমপির পারিবারিক সম্পর্ক।

পিএস আব্দুর রউফ আরও জানান, গত ১২ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। কিন্তু এরপর বৃহস্পতিবার শেষ কথা হয়েছে। চার দিন পার হলেও পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি। এমপি স্যারের খোঁজ পেতে তারা ডিবি কার্যালয়েও গেছেন।

একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, গত ১২ মে দর্শনার বর্ডার দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এমপি আনার। ইমিগ্রেশন শেষ করে ভ্যানে চড়ে ভারতের ঢুকেন তিনি। এমনই একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন তার গাড়িচালক তরিকুল ইসলাম। এ সময় এমপি আনার সাদা শার্ট পরিহিত ছিলেন। ভ্যানচালক আর এমপি আনার ছাড়া ভ্যানে আর কেউ ছিল না। পেছনে একটি ব্যাগ ছিল।