শেষ পর্যন্ত কে হচ্ছেন আইসিসি চেয়ারম্যান?
ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক অভিভাবক সংস্থা আইসিসি এখন পুরোপুরি অভিভাবকহীন। চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর পদত্যাগ করেছেন আরও বেশ কিছুদিন আগে। কিন্তু এরমধ্যে এখনও পর্যন্ত আইসিসি পরবর্তী চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রটোকলই তৈরি করতে পারেনি। কারা কারা নির্বাচনে লড়াই করবেন, কে হবে প্রার্থী- এসব বিষয়ে বারবার বৈঠক করেও কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি ১৭ সদস্যের আইসিসি বোর্ড।
সোমবার ছিল চেয়ারম্যান নির্বাচনে আইসিসি ১৭ সদস্যের বোর্ড সভা। কিন্তু দীর্ঘ আলোচনা সত্ত্বেও কোনো সিদ্ধান্তে আসতে না পেরে শেষ পর্যন্ত অমিমাংসিতভাবেই মিটিংটা শেষ হয়ে যায়। পরবর্তী মিটিংয়ে আইসিসির পরবর্তী চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন ঠিক করার আশা নিয়ে মিটিং ত্যাগ করে সব সদস্য।
আইসিসি বোর্ডের এক সদস্য ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআকে বলেন, ‘যে ইস্যুতে আমরা একত্রিত হয়েছিলাম, সে ইস্যুতে কেউ একমত হতে পারেনি। প্রথম, মিটিংয়েই ভাগ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। যে কারণে কোনো একটি মতের পক্ষে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন হয়নি কিংবা ৩ ভাগের দুই ভাগ সমর্থনও আসেনি। অথচ, বোর্ডের সদস্য মাত্র ১৭জন।’
সেই বোর্ড সদস্য সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, সবচেয়ে বড় কথা আইসিসি চেয়ারম্যান পদে যোগ্য কাউকেই নাকি পাওয়া যাচ্ছে না। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য কোনো মুখই নাই প্রার্থীদের মধ্যে। এমনকি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির বিষয়ে আলোচনা হলেও এ বিষয়ে কেউ কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারেনি।
এদিকে নিজে থেকে প্রার্থী ঘোষণা করে বসে আছেন পিসিবি চেয়ারম্যান এহসান মানি। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নির্দেশ দিয়েছেন, কোনোভাবেই পিসিবির দাবি যেন ছেড়ে দেয়া না হয়। অর্থ্যাৎ, পিসিবি মনোনীত প্রার্থীকেই পাকিস্তান চায় আইসিসির চেয়ারম্যান হিসেবে।
শুধু এহসান মানিই নন, আইসিসি চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য বেশ কয়েকজন ইচ্ছা পোষণ করেছে বলেই কারো বিষয়ে এখনও পর্যন্ত ঐকমত্য হয়নি। বিসিসিআইর সেই সূত্রই জানাচ্ছে, ‘ইংল্যান্ডের কলিন গ্রেভস হচ্ছেন, সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী। কিন্তু এটা বলা যাচ্ছে না যে, তিনিই সবার কাছে প্রিয়। কারণ, অনেকগুলো দেশ আছে যারা গ্রেভসকে মেনে নিতে চাচ্ছে না।’
‘আবার অনেকেই চাচ্ছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি ডেভ ক্যামেরনকে আইসিসির চেয়ারম্যান হিসেবে। বিশেষ করে আইসিসির দুই স্বাধীন ডিরেক্টর চান তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে। কিন্তু সংখ্যাটা নেহায়েতই নগণ্য চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার জন্য।’
আইসিসির বোর্ড সদস্যরা নিশ্চিত হলেন, কোনো প্রার্থীই অন্য কার চেয়ে সমর্থনের দিক থেকে খুব বেশি এগিয়ে নেই। কেউ একজন যদি অন্যদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকতেন, তাহলে তার সম্পর্কে একটা প্রাথমিক সিদ্ধান্তে চলে আসতে পারতো সবাই। কিন্তু তার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।’
আইসিসির সেই কর্মকর্তা বলেন, ‘সমস্যা সমাধানের জন্য সবচেয়ে ভালো পন্থা হতে পারে, কোনো একজন প্রার্থীকে সবাই মেনে নেয়া। তাহলে অন্তত নির্বাচনের ঝামেলা এড়ানো যাবে। কারণ, নির্বাচন হলে সব সদস্য এবং দেশের মধ্যে একটা অস্থিতিকর পরিবেশ তৈরি হয়। তবে আমি এই মুহূর্তে একমত হতে চাই, আমাদের অবশ্যই খুব দ্রুত মনোনয়ন প্রক্রিয়াটা শেষ করা দরকার।’