জেলার ফুটবলকে চাঙ্গা করতে চান কাজী সালাউদ্দিন

Published: 5 October 2020

বিশেষ সংবাদদাতা, ঢাকা : ভোটে জয়ী কাজী সালাউদ্দিনের এবার ফুটবল জেতানোর কাজ। ইশতেহারকে পাশে রেখে চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচিত সভাপতি জেলার ফুটবলকে উষ্ণ আলিঙ্গনে নিয়ে এগোতে চান। এটাই আসলে সামগ্রিক ফুটবল সংস্কারের অন্যতম উপায়। কিন্তু কোনো জেলা যদি উন্নয়নে অনাগ্রহী হয় এবং দুই বছর লিগ আয়োজন না করে তবে সেই সংস্থার কাউন্সিলরশিপ চলে যাবে বাতিলের খাতায়।

বাফুফে সভাপতি পদে কাজী সালাউদ্দিন এক যুগ পার করলেও দেশের ফুটবলে ফেরেনি সেই সুরভি। জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় থেকে আসে না আগের মতো সুরভিত ফুটবলার। অবস্থা বদলাতে সভাপতি ইয়ুথ ডেভেলপমেন্টে মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি জেলার ফুটবলকে চাঙ্গা করতে চান, ‘ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফেডারেশনের কাজ না হলেও সেটা নিয়ে আমরা কাজ করব। ইশতেহার অনুযায়ী জেলায় বঙ্গবন্ধু সিনিয়র জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ, শেখ কামাল অনূর্ধ্ব-১৮ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ও শেখ রাসেল অনূর্ধ্ব-১২ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ করব। বছরে তিনটি টুর্নামেন্ট হলে জেলার ফুটবল অনেকখানি চাঙ্গা হবে।’ তাঁর ইচ্ছা এই টুর্নামেন্টগুলো ‘হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে’ ভিত্তিতে করা।

টুর্নামেন্ট তিনটি হলে অবশ্যই জেলা পর্যায়ের ফুটবলে ইতিবাচক সাড়া পড়বে। তবে লিগগুলো নিয়মিত না হলে জেলার ফুটবল সংস্কৃতি একটুও বদলাবে না। সেটা সালাউদ্দিনও বোঝেন, আর এ জন্যই জেলার সংগঠকদের ওপর তিনি বিরক্ত, ‘জেলা লিগ আয়োজনের দায়িত্ব প্রতিটি জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের। এটা আমার দায়িত্ব নয়। ওই জেলার সভাপতিকে জিজ্ঞেস করুন, কেন লিগ করে না। বাংলাদেশে লিগ না হলে এর দায় কি ফিফা প্রেসিডেন্ট নেবেন! এটা আমার দায়িত্ব।’ এ দেশের প্রিমিয়ার লিগের প্রত্যক্ষ দায়িত্ব তাঁর হলেও জেলাগুলোর ফুটবল ডেভেলপমেন্টের পরোক্ষ দায় বাফুফের। কারণ জেলার ভোটেই নির্বাচিত হয় বাফুফের কমিটি। সভাপতির মাথায় তাই উঁকি মারছে নতুন ভাবনা, ‘এবার একটা ফর্মুলা করব, যেটা ফিফা-এএফসি করেছে। কোনো জেলায় পর পর দুবছর লিগ না হলে ওই জেলা কাউন্সিলরশিপ হারাবে। এই বিধি-নিষেধ আমি শুরুতে আরোপ করতে পারতাম না। এখন ফুটবল যখন একটা শৃঙ্খলার মধ্যে এসেছে, তখন আমার কিছু কথা শুনতে হবে।’ খেলা না করে শুধু ভোটের সময় কাউন্সিলর হওয়ার দৌড়ঝাঁপ করবেন, এটা হবে না। জেলার কর্মকর্তারা যেন ফুটবলে মনোযোগী হয় এ জন্য কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে ফেডারেশন।

মাঠের ফুটবলের দুরবস্থার কারণে এবারের নির্বাচন বেশ আলোচিত। সংবাদমাধ্যমে যেমন ফুটবলের অন্ধকার দিকগুলো নিয়ে সমালোচনা হয়েছে, তেমনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরব ছিল সাধারণ মানুষ। কাজী সালাউদ্দিনের এক যুগের ফুটবলীয় কর্মকাণ্ডের বিচার-বিশ্লেষণ হয়েছে নানাভাবে। কিন্তু ভোটে জিতে চতুর্থ মেয়াদের ব্যাটন হাতে নেওয়া সভাপতির ব্যাখ্যা, ‘সমালোচনা আপনি করতেই পারেন, বুঝে করেন কিংবা না বুঝে। আমার কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে ফুটবলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ১৩৯ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন, যারা ক্লাব, জেলা ফুটবল সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য সংস্থা থেকে এসেছেন। এখানে কোনো কোটিপতি, কোনো গরিব কিংবা কোনো রাস্তার লোক ভোট দেননি। সেই ভোট বিচার করলে আমি ২০০৮ সালে যত ভোট পেয়েছিলাম, সেটা দিন দিন বেড়েছে এবং এবার পেয়েছি সবচেয়ে বেশি ভোট। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে কেউ কেউ বকাবকি করছে, এটা হয়তো তাদের অভ্যাস।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যা-ই বলুক, সভাপতির মনোযোগ ফুটবলেই থাকবে, ‘আগের সালাউদ্দিন ২০০৮ সালে দায়িত্ব নিয়ে মাঠে খেলা ফিরিয়েছিল, ২০২০ সাল পর্যন্ত নিয়মিত লিগ হয়েছে। নতুন সালাউদ্দিনের সময়ও বল মাঠেই থাকবে তবে আরো অনেক বেগবান হতে থাকবে।’