বার্সার দাপটে উড়ে গেল ফেরেন্সভারোস
পোস্ট ডেস্ক : ‘ফেভারিট’ তকমা গায়ে মেখে প্রতি বছর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অংশ নেয় বার্সেলোনা। এবারও শিরোপার দৌড়ে বার্সেলোনাকে দাবিদার মনে করছে সমর্থকরা। অথচ দলটির কোচ রোনাল্ড কোম্যান সরাসরিই বলে দিলেন, এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সাকে ‘ফেভারিট’ ধরা যায় না।
দল নিয়ে স্বয়ং কোচের এমন ভাবনায় মঙ্গলবারের ম্যাচে যেন ক্ষোভ ঝড়ালেন তার শিষ্যরা।
মঙ্গলবার ‘জি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে হাঙ্গেরির ক্লাব ফেরেন্সভারোসের মুখোমুখি হয়েছে বার্সেলোনা।
বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত একটায় শুরু হওয়া সেই ম্যাচে ফেরেন্সভারোস পেয়ে যেন আগুনের স্ফুলিংগ ওড়াল লিওনেল মেসির দল।
ফেরেন্সভারোসকে রীতিমতো ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে বার্সেলোনা। গোলের শুরুটা করেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি নিজেই। এরপর দলের বিস্ময়বালক স্পেনের আনসু ফাতি, ব্রাজিলিয়ান তারকা ফিলিপ্পো কুতিনহো, পেদ্রি, ফরাসি তারকা উসমান দেম্বেলে অধিনায়কের সঙ্গে সামিল হন।
ফেরেন্সভারোসের পক্ষে থেকে একটিমাত্র গোল শোধ করেন কাটারিন।
ম্যাচের ১০ মিনিটের মাথায় পাল্টা আক্রমণে দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে বার্সার জালে বল পাঠিয়ে উল্লাসে মেতেছিলেন ফেরেন্সভারোসের এনগুয়েন। কিন্তু রেফারি বাঁশি গোলের নয়, অফসাইডের। মাঝমাঠে বল রিসিভের সময় অফসাইডে ছিলেন তিনি।
এর ১০ মিনিট পর ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ইসায়েল দা সিলভার বুলেট গতির শট পোস্টে লাগলে হতাশা বাড়ে দলটির।
ম্যাচের ২৫ মিনিটের দুর্দান্ত গতিতে বল এগিয়ে নিয়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। গোল বাঁচাতে মেসিকে ফাউল করেন ফেরেন্সভারোসের ডিফেন্ডার। রেফারির বাঁশিতে পেনাল্টি পায় বার্সা। ২৭ মিনিটের মাথায় সফল স্পটকিক থেকে গোল করে লিড নেন বার্সা অধিনায়ক লিওনেল মেসি। ম্যাচের ২৯ মিনিটের মাথায় সুযোগ হাতছাড়া করেন আনসু ফাতি।
তবে পরের মিনিটেই কুতিনহোর এসিস্টে চমৎকার সুযোগ পান ফাতি। এবারও ব্যর্থ হন ফাতি। তার নিচু করে মারা শট ফেরেন্সভারোসের গোলরক্ষক ধরে ফেলেন।
৩৭ মিনিটের মাথায় ব্যর্থ হন মেসি নিজেই। জানিকের একটি ক্রস ফাঁকা জায়গার মেসির সামনে পড়লে তা জোড়ালো শটে লক্ষ্যভেদের উদ্দেশে পাঠান মেসি। কিন্তু এবার গোলরক্ষকের ভূমিকা নেয় ফেরেন্সভারোসের গোলপোস্ট।
এর দুই মিনিট পরেই মেসির চমৎকার একটি এসিস্টে পা ছোঁয়ান ত্রিনকাও। সেটি রুখে দেন ফেরেন্সভারোসের গোলরক্ষক।
ম্যাচের ঠিক ৪২ মিনিটের মাথায় সফল হন আনসু ফাতি। এবার ফ্রাঙ্কেই ডি জঙ অভূতপূর্বভাবে উড়িয়ে মারা বল ডি-বক্সে পেয়ে যান ফাতি। সঙ্গে সঙ্গে তা গোলে পরিণত করতে ভুল করেননি ফাতি।
২-০ স্কোরলাইনে বিরতিতে যায় দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমে প্রথম ৫ মিনিট বেশ কয়েকটি বাজে শট মেরে বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ান ত্রিনকাও।
তবে ৫২ মিনিটে গিয়ে সেই বিরক্তিকে হাসিতে রূপ দেন কুতিনহো। এবার আনসু ফাতির চৌকশ ব্যাকহিল পাস থেকে বল পেয়ে দর্শণীয় এক গোল করেন কুতিনহো।
৩-০ তে এগিয়ে যায় কাতালানরা। ৬২ মিনিটে গিয়ে রবার্তো, ফাতি ও ত্রিনকাওকে তুলে নিয়ে ফিরপো, পেদ্রি ও উসমান দেম্বেলেকে নামান।
৬৮ মিনিটের মাথায় বার্সার ডি-বক্সের ভেতর ফাউল করে লালকার্ড দেখেন পিকে। সফল স্পটকিক থেকে গোল করেন ফেরেন্সভারোসের কারাটিন।
১০ জনের দলে পরিণত হওয়া বার্সেলোনা ৩-১ স্কোরলাইনে খেলা চালিয়ে নেয় ৮১ মিনিট পর্যন্ত। ৮২ মিনিটে গিয়ে সফল হন বদলি হিসেবে নামা পেদ্রি। তাকে গোল বানিয়ে দেয়ার কারিগর আরেক বদলি খেলোয়ার দেম্বেলে। চমৎকার এক গোল উপহার দেন পেদ্রি।
পেদ্রির পর দেম্বেলেও সফল হন। এবার ৮৯ মিনিটের মাথায় মেসির এসিস্টে চমৎকার গোল করেন উসমান দেম্বেলে।
বাকি কয়েক মিনিটের আর কোনো গোল না হলে ৫-১ গোলের বড় ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা।
এমন জয় দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চমৎকার সূচনা করল কোম্যানের শিষ্যরা।