ছন্দে নেই ব্রাজিলিয়ান তরুণরা

Published: 31 October 2020

পোস্ট ডেস্ক : বিশ্ব ফুটবল লিওনেল মেসি-ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জাদু শেষ হতে চলেছে। নেইমারও ফুটবল শৈলী দেখাচ্ছেন অনেক দিন হলো। ফুটবলের ভক্তরা এখন নতুন মুখের অপেক্ষায়। নতুন প্রজন্মের অপেক্ষায়। বিশ্ব ফুটবলে রাজত্ব করার তালিকায় নাম আছে বেশ কিছু তরুণ ব্রাজিলিয়ানের। কিন্তু মাঠে তারুণ্যের ঝলকানি তারা সেভাবে দেখাতে পারছেন না।

ফুটবল এখন কিলিয়ান এমবাপ্পে, আর্লিং হ্যালন্ড, জাদন সানকো, কামাভেঙ্গা, আনসু ফাতি, মার্কোস রাশফোর্ডদের দু’হাতে আলিঙ্গন করার অপেক্ষায়। ওই তালিকায় আছেন ব্রাজিলের কাঁচা প্রতিভা ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রদ্রিগো গোয়েস, রেইনিয়ের জেসুস, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লি, রিচার্লিসনের মতো তরুণরা। কিন্তু ক্লাবের জার্সিতে তারা প্রত্যাশার পুেটারা মেটাতে পারছেন কই!

জেসুস: ব্রাজিলের মূল স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল জেসুস (২৩)। পাঁচ মৌসুম তিনি ম্যানসিটিতে আছেন। কিন্তু দলের মূল স্ট্রাইকার হতে পারেননি। সুযোগ পেলে ভালো করেছেন। কিন্তু সুযোগের অপেক্ষায় থাকাটা ব্রাজিলের মূল স্ট্রাইকারের জন্য বেমানান। বুড়ো আগুয়েরোর চেয়ে দলে জেসুস নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে পারেননি এখনও। ওদিকে ম্যানসিটি কোচও নতুন স্ট্রাইকারের খোঁজে নেমে পড়েছেন।

এদের মিলিতাও: রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ ডিফেন্ডার এদের মিলিতাও (২২)। পোর্ত থেকে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারকে লস ব্লাঙ্কোসরা এনেছিল ভবিষ্যত সের্গিও রামোস কিংবা রাফায়েল ভারানের উত্তরসূরী হিসেবে। এখনও রিয়ালের শুরুর একাদশের নিয়মিত ফুটবলার তিনি নন। কিন্তু জিদানের দলে সুযোগ পেয়ে সেরাটা দেওয়ার ক্ষুধাটা মিলিতাও দেখাতে পারেননি। বরং ভুল করেছেন চোখে পড়ার মতো।

 

রিচার্লিসন: ব্রাজিলের তরুণ প্রতিভার মধ্যে নিয়মিত খেলার সুযোগ পাচ্ছেন রিচার্লিসন (২৩)। এভারটনের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার হয়ে উঠেছেন তিনি। ফ্রন্ট লাইনের তিন পজিশনেই খেলতে পারেন রিচার্লি। কিন্তু গোল করে এখনও এভারটন কোচের মন জয় করতে পারেননি। গত মৌসুমে লিগে ১৩ গোল করেছেন তিনি। কার্লো আনচেলত্তি তার থেকে চেয়েছেন ৩০ গোল। চলতি মৌসুমে পাঁচ ম্যাচে এক গোল করা রিচার্লিসন এখনও তাই কোচের চাওয়া থেকে দূরে।

গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লি: লিভারপুল কোচ জার্গেন ক্লপ শত বছরের সেরা প্রতিভা বলেছেন মার্টিনেল্লিকে। রোনালদিনহো তাকে ডেকেছেন নতুন রোনালদো নামে। গত মৌসুমে আর্সেনালের জার্সিতে ভালো করেছেন তিনি। এ মৌসুমে ইনজুরির কারণে খেলা হয়নি কোন ম্যাচ। এখনও ব্রাজিল দলে ডাকও পাননি ১৯ বছরের গতিময় এই স্ট্রাইকার।

ভিনিসিয়াস: ব্রাজিলিয়ান তরুণদের মধ্যে এখন পর্যন্ত বড় আক্ষেপের নাম ভিনিসিয়াস জুনিয়র। রিয়াল মাদ্রিদ তাকে সুযোগ দিচ্ছে। ভিনি কোন ম্যাচে তার প্রতিদান দিচ্ছেন। কোনটায় হচ্ছেন ব্যর্থ। ভিনির গতি আছে, ড্রিবলিং অসাধারণ। কিন্তু গোল মুখে তিনি ব্যর্থ। মৌসুমের শুরুটাই ভালো-খারাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তার।

রদ্রিগো গোয়েস: ব্রাজিলের নতুন নেইমার কিংবা নতুন রবিনহো তমকা পাওয়া রদ্রিগো গোয়েসও রিয়ালের জার্সিতে বিবর্ণ। তার ভালো করার যথেষ্ঠ সময় আছে সামনে। কিন্তু রিয়ালের জার্সিতে যখন মাঠে নামছেন তখন প্রতিভার স্বাক্ষর তাকে রাখতেই হবে। রদ্রিগো সব মিলিয়ে এ মৌসুমে রিয়ালের জার্সিতে পাঁচ ম্যাচ মাঠে নামলেও করতে পারেননি গোল।

রেইনিয়ের: রিয়াল মাদ্রিদ এক নেইমারকে হারানোর পরে সম্ভবত পণ করেছে তরুণ কোন ব্রাজিলিয়ান প্রতিভাকেই তারা আর হারাবে না। রেইনিয়ের জেসুসকে (১৮) তাই দলে ভেড়াতে ভুল করেনি লস ব্লাঙ্কোসরা। রেইনিয়েরের গড়ে ওঠা যাতে থেমে না থাকে রিয়াল তাই তাকে ধারে পাঠিয়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে। কিন্তু এখনও খবরের শিরোনাম হতে পারেননি তিনি।

ব্রাজিলের তরুণ প্রতিভাদের নাম তুললে আরও যোগ করা যাবে লুকাস পাকেতা, এভারটন সুয়ারেচ, গুইমারেস, পাউলিনহো, কার্লোস রামোস, গ্যাব্রিয়েল মাঘারেস কিংবা ব্রাজিলের ক্লাবে খেলা জোয়াও পেদ্রো, কাইও জর্জেদের। বার্সার একাডেমিতে আছেন লুকাস মাইয়া। কিন্তু তারা এখনও কোন নাম হয়ে উঠতে পারেননি। আর নাম হয়েও ভিনি, রদ্রিগো, মার্টিনেল্লিরা প্রত্যাশিত ছন্দ দেখাতে পারেননি। ওদিকে ফাতি, হ্যালন্ড, এমবাপ্পে বুদ করে রেখেছেন বিশ্ব।