ঐতিহাসিক ব্রেক্সিট চুক্তি, যে সব পরিবর্তন আসছে

Published: 25 December 2020

।। মো: রেজাউল করিম মৃধা ।।

২৪শে ডিসেম্বর ২০২০। ইউকে এবং ইইউ এর জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। ইতিহাসের পাতায় স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে। অনেকেই এটিকে বিগ ডিল উল্লেখ করছেন। ২০১৬ সালের ২৪ শে জুন গনভোট এবং ২৪শে ডিসেম্বর ২০২০। এই সময়ের মধ্যে কত নাটকিয়তা ঘটেছে তা আপনাদের সবার জানা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরন এবং তেরেসা মে কে পদত্যাগ করতে হয়েছে।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও অবস্থা ছিলো খুবই সূচনীয় তারপর হাল ছাড়েনি। ব্রেক্সিট দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত অনেক মন্ত্রীই পদত্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও বারবার চেষ্টা করে কোন সুরাহা করতে পারেননি। একেবারে শেষ মূহুর্তে এসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে ইউকে চুক্তি এক নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি করলো।

২৪শে জুন ২০১৬ সালে গনভোটের মাধ্যমে ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত দেয় জনগন। ২০২০ সালের ৩১শে জানুয়ারী সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে ইইউ থেকে বের হয়ে আসে তবে ৩১শে জানুয়ারী থেকে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১ মাস ছিল ট্রানজেশনাল পিরিয়ড। কিভাবে বের হবে কি কি নিয়মে চলবে সেই নিয়ম নিয়েই চলছে দীর্ঘ আলোচনা সমালোচনা। কখনো উত্তেজনা, কখনো চুক্তি হয় আবার হয় না। ডিল না, নো ডিল ।

গত জানুয়ারিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যায় যুক্তরাজ্য। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্পর্ক কেমন হবে, তার রূপরেখা নির্ধারিত ছিল না। অবশেষে প্রায় ১ বছর পর এ ক্ষেত্রে সমাধান মিললো।

প্রতিক্ষার শেষ নেই, শেষ পর্যন্ত বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন চুক্তি করেন। এটা ঐতিহাসিক বিজয়।

৬৫টি ইসু নিয়ে ব্রেক্সিট চুক্তি হয়েছে।
এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে,
বাণিজ্যিক চুক্তি,
সমুদ্র সীমানা চুক্তি,
মুক্ত বাজার বাণিজ্য,
বর্ডারে যাতায়াত,
ইমিগ্রেশন,
পন্য আমদানি রপ্তানী সহ অনেক গুরুত্বপূর্ন ইস্যু যা উভয় পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করবে।

যুক্তরাজ্য এবং ইইউ সাথে ব্রেক্সিট ঠিক কয়েকদিন আগে একটি ঐতিহাসিক ব্রেক্সিট বাণিজ্য চুক্তি ঐক্যমতে পৌছে। জুন ২০১৬ এর গণভোটের পরে ইউকে ব্লক ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে ভোট দেওয়ার চার বছরেরও বেশি সময় পর অবশেষে এটি সম্পন্ন হয়।

৩১ ডিসেম্বর পর কীভাবে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হবে তা নিয়ে অনেকেই এখন মাথা ঝুঁকছেন। ভ্রমণ, বিদেশের স্বাস্থ্যসেবা, বাণিজ্য এবং অভিবাসন কেবল কয়েকটি জিনিস যা ব্রিটিশ এবং তাদের ইউরোপীয় সহযোগীদের জন্য নতুন বছরের থেকে আলাদা হবে ।
এখন থেকে কি কি পরিবর্তন আসছে এক নজরে দেখে নিন।

যেমন:-

পাসপোর্টঃ
পাসপোর্টগুলি ইইউ, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, আইসল্যান্ড বা লিচেনস্টেইন প্রবেশ করা আর সহজ সরল থাকবে না। আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়া ছয় মাসের আগে রিনিউ করতে হবে বা এটি ১০ বছরের বেশি বয়সী মেয়াদ হওয়া প্রয়োজন হবে – এমন একটি প্রক্রিয়া করতে হবে যার দাম ৭৫ থেকে ৮৫ পাউন্ড ।

নতুন চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটিশ নাগরিকদের ইউরোপ ভ্রমনে ভিসার প্রয়োজন হবে না। তবে আপনি কতদিন ইউরোপের দেশগুলো থাকবেন তার উপর নির্ভর করবে।
১৮০ দিনের মধ্যে ৯০ দিনের বেশি ইউরোপের দেশগুলোতে থাকা যাবেনা। যদি আর দীর্ঘদিন থাকার প্রয়োজন হয়, সেখানে লেখাপড়া বা কাজের প্রয়োজন হয় তবে আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
কোন কোন ক্ষেত্রে আপনার রির্টান টিকিট রয়েছে, ভ্রমনের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে তা প্রমানের প্রয়োজন হতে পারে।

বিদেশী স্বাস্থ্যসেবাঃ
ইউরোপীয় স্বাস্থ্য বীমা কার্ড (EHIC) – যা আপনাকে অস্থায়ী থাকার সময় রাষ্ট্রীয় সরবরাহিত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার অধিকার দেয় – এটি আর বৈধ হবে না। পরিবর্তে, সরকার বিদেশে যাওয়ার আগে জনগণকে স্বাস্থ্যসেবার সাথে উপযুক্ত ভ্রমণ বীমা পাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

সীমান্ত নিয়ন্ত্রণঃ
আপনাকে সীমানা নিয়ন্ত্রণ পোস্টে আপনার রিটার্নের টিকিটটি দেখাতে এবং আপনার থাকার জন্য পর্যাপ্ত টাকা রয়েছে তা প্রমাণ করতে হতে পারে। পর্যটকরা শেঞ্জেন অঞ্চলের দেশগুলিতে ভিসা ছাড়াই যাতায়াত করতে সক্ষম হবেন, যার মধ্যে বেশিরভাগ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশসমূহ, আইসল্যান্ড, লিচেনস্টেইন, নরওয়ে এবং সুইজারল্যান্ড অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ভ্রমণকারীরা যে কোনও ১৮০-দিনের সময়কালে ৯০দিন পর্যন্ত অবস্থান করতে সক্ষম হবেন, তবে বেশি দিন থাকার জন্য, কাজ করতে বা পড়াশোনা করার জন্য বা ব্যবসায়িক ভ্রমণের জন্য ভিসা বা পারমিটের প্রয়োজন হতে পারে।

ভ্রমণঃ
ইউকে নাগরিকরা এখনও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে গাড়ি চালাতে সক্ষম হবে তবে তাদের নিজস্ব গাড়ি নিলে গ্রিন কার্ড এবং জিবি স্টিকার লাগবে। পোষা পাসপোর্ট স্কিম আর বৈধ হবে না। পরিবর্তে, ইইউ বা উত্তর আয়ারল্যান্ডে ভ্রমণের আগে মালিকদের উপযুক্ত টিকা এবং একটি পশু স্বাস্থ্যের প্রশংসাপত্র গ্রহণ করতে হবে।

ইইউ, আইসল্যান্ড, লিচেনস্টেইন এবং নরওয়ে জুড়ে ফ্রি মোবাইল ফোনের রোমিংয়ের গ্যারান্টিটি শেষ হবে, তাই কোনও সম্ভাব্য চার্জ সম্পর্কে জানতে ভ্রমণকারীদের তাদের ফোন অপারেটরের সাথে চেক করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ইইউ দেশে ইতোমধ্যে বসবাসরত ইউকে

নাগরিকদের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে সরানো ইউরোপীয় নাগরিকদের প্রত্যাহার চুক্তির অধীনে কিছু নির্দিষ্ট সুরক্ষা রয়েছে, যদিও তাদের দেশের নিয়ম অনুসারে আবাসনের জন্য আবেদন করতে হতে পারে। ব্রিটিশ নাগরিকদের ১ জানুয়ারির পরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছেন, স্থানান্তরের সময় শেষ হয়ে গেলে ইইউতে বাস করার এবং কাজ করার স্বয়ংক্রিয় অধিকার বন্ধ হয়ে যাবে। এর অর্থ তাদের সেই দেশের অভিবাসন বিধি মেনে আবেদন করতে হবে।

ইমিগ্রেশনঃআইরিশকে বাদ দিয়ে, যুক্তরাজ্যে কাজ করতে, বাস করতে বা পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক সমস্ত বিদেশী নাগরিকের জন্য পয়েন্ট-ভিত্তিক অভিবাসন ব্যবস্থা চালু করা হবে। এটি ইইউ এবং ইইউ-বহির্ভুত ইউনিয়ন নাগরিকদের সাথে সমান আচরণ করবে এবং সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে এমন লোকদের আকর্ষণ করা।

ইউকেতে বসবাসরত ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকরাঃ
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আইসল্যান্ড, লিচেনস্টাইন, নরওয়ে এবং সুইজারল্যান্ডের যারা ইউকেতে বাস করছেন তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বন্দোবস্ত প্রকল্পে জুনের আগে নিবন্ধন করতে হবে ।

সফল আবেদনকারীরা যুক্তরাজ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য বসবাস ও কাজ চালিয়ে যাওয়ার অধিকার মঞ্জুর করে। যে ব্যক্তিরা পাঁচ বছরে দেশে অবিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করেছেন তারা স্থিতাবস্থার মর্যাদা অর্জন করতে পারবেন, তবে পাঁচ বছরের কম বয়সী বসবাসকারি লোকেরা পূর্ব-নিষ্পত্তির মর্যাদার জন্য যোগ্য হওয়া উচিত, যা পরে স্থায়ী স্থিতিতে রূপান্তরিত হতে পারে।

ইইউ-এর প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেছেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তাদের একটি ‘ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ’ চুক্তি হয়েছে। ব্রাসেলসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এটি ছিল একটি দীর্ঘ ও ঝড়-ঝঞ্ঝাপূর্ণ পথ। কিন্তু আমরা একটি ভালো চুক্তিই পেয়েছি।’

ব্রেক্সিটের পর ব্রিটিশ জল সীমায় মাছ ধরার অধিকার এবং ব্যবসার উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রায় এক বছর দেন-দরবারের পর অবশেষে ইউকে এবং ইইউ’র মধ্যে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্রিটেন তার আইন এবং সার্বভৌমত্বের নিয়ন্ত্রণ নিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ।
ঐতিহাসিক ব্রেক্সিট চুক্তি,
যে সব পরিবর্তন আসছে।

মো: রেজাউল করিম মৃধা।

২৪শে ডিসেম্বর ২০২০। ইউকে এবং ইইউ এর জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। ইতিহাসের পাতায় স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে। অনেকেই এটিকে বিগ ডিল উল্লেখ করছেন। ২০১৬ সালের ২৪ শে জুন গনভোট এবং ২৪শে ডিসেম্বর ২০২০। এই সময়ের মধ্যে কত নাটকিয়তা ঘটেছে তা আপনাদের সবার জানা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরন এবং তেরেসা মে কে পদত্যাগ করতে হয়েছে।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও অবস্থা ছিলো খুবই সূচনীয় তারপর হাল ছাড়েনি।ব্রেক্সিট দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত অনেক মন্ত্রীই পদত্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও বারবার চেস্টা করে কোন সুরাহা করতে পারেননি। একেবারে শেষ মূহুর্তে এসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে ইউকে চুক্তি এক নতুন ইতিহাসের সৃস্টি করলো।

২৪শে জুন ২০১৬ সালে গনভোটের মাধ্যমে ইইউ থেকে বেড়িয়ে আসার সিদ্ধান্ত দেয় জনগন। ২০২০ সালের ৩১শে জানুয়ারী সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে ইইউ থেকে বের হয়ে আসে তবে ৩১শে জানুয়ারী থেকে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১ মাস ছিল ট্রানজেশনাল পিরিয়ড। কি ভাবে বের হবে কি কি নিয়মে চলবে সেই নিয়ম নিয়েই চলছে দীর্ঘ আলোচনা সমালোচনা। কখোনো উত্তেজনা , কখোনো চুক্তি হয় আবার হয় না। ডিল না নো ডিল ।

গত জানুয়ারিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যায় যুক্তরাজ্য। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্পর্ক কেমন হবে, তার রূপরেখা নির্ধারিত ছিল না। অবশেষে প্রায় ১ বছর পর এ ক্ষেত্রে সমাধান মিললো।

প্রতিক্ষার শেষ নেই, শেষ পর্যন্ত বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন চুক্তি করেন। এটা ঐতিহাসিক বিজয়।

৬৫টি ইসু নিয়ে ব্রেক্সিট চুক্তি হয়েছে।
এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে,
বানিজ্যিক চুক্তি,
সমুদ্র সীমানা চুক্তি,
মুক্ত বাজার বানিজ্য,
বর্ডারে যাতায়াত,
ইমিগ্রেশন,
পন্য আমদানি রপ্তানী সহ অনেক গুরুত্বপূর্ন ইসু যা উভয় পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করবে।

যুক্তরাজ্য এবং ইইউ সাথে ব্রেকিসিটের ঠিক কয়েকদিন আগে একটি ঐতিহাসিক ব্রেক্সিট বাণিজ্য চুক্তি ঐক্যমতে পৌছে। জুন ২০১৬ এর গণভোটের পরে ইউকে ব্লক ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে ভোট দেওয়ার চার বছরেরও বেশি সময় পর অবশেষে এটি সম্পন্ন হয়।

৩১ ডিসেম্বর পর কীভাবে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হবে তা নিয়ে অনেকেই এখন মাথা ঝুঁকছেন। ভ্রমণ, বিদেশের স্বাস্থ্যসেবা, বাণিজ্য এবং অভিবাসন কেবল কয়েকটি জিনিস যা ব্রিটিশ এবং তাদের ইউরোপীয় সহযোগীদের জন্য নতুন বছরের থেকে আলাদা হবে ।
এখন থেকে কি কি পরিবর্তন আসছে এক নজরে দেখে নিন।

যেমন:-

পাসপোর্টঃ
পাসপোর্টগুলি ইইউ, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, আইসল্যান্ড বা লিচেনস্টেইন প্রবেশ করা আর সহজ সরল থাকবে না। আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়া ছয় মাসের আগে রেন্যু করতে হবে বা এটি ১০ বছরের বেশি বয়সী মেয়াদ হওয়া প্রয়োজন হবে – এমন একটি প্রক্রিয়া করতে হবে যার দাম ৭৫ থেকে ৮৫ পাউন্ড ।

নতুন চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটিশ নাগরিকদের ইউরোপ ভ্রমনে ভিসার প্রয়োজন হবে না। তবে আপনি কতদিন ইউরোপের দেশগুলো থাকবেন তার উপর নির্ভর করবে।
১৮০ দিনের মধ্যে ৯০ দিনের বেশি ইউরোপের দেশগুলোতে থাকা যাবেনা। যদি আর দীর্ঘদিন থাকার প্রয়োজন হয়, সেখানে লেখা পড়া বা কাজের প্রয়োজন হয় তবে আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
কোন কোন ক্ষেত্রে আপনার রির্টান টিকিট রয়েছে, ভ্রমনের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে তা প্রমানের প্রয়োজন হতে পারে।

বিদেশী স্বাস্থ্যসেবাঃ
ইউরোপীয় স্বাস্থ্য বীমা কার্ড (EHIC) – যা আপনাকে অস্থায়ী থাকার সময় রাষ্ট্রীয় সরবরাহিত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার অধিকার দেয় – এটি আর বৈধ হবে না। পরিবর্তে, সরকার বিদেশে যাওয়ার আগে জনগণকে স্বাস্থ্যসেবার সাথে উপযুক্ত ভ্রমণ বীমা পাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

সীমান্ত নিয়ন্ত্রণঃ
আপনাকে সীমানা নিয়ন্ত্রণ পোস্টে আপনার রিটার্নের টিকিটটি দেখাতে এবং আপনার থাকার জন্য পর্যাপ্ত টাকা রয়েছে তা প্রমাণ করতে হতে পারে। পর্যটকরা শেঞ্জেন অঞ্চলের দেশগুলিতে ভিসা ছাড়াই যাতায়াত করতে সক্ষম হবেন, যার মধ্যে বেশিরভাগ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশসমূহ, আইসল্যান্ড, লিচেনস্টেইন, নরওয়ে এবং সুইজারল্যান্ড অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ভ্রমণকারীরা যে কোনও ১৮০-দিনের সময়কালে ৯০দিন পর্যন্ত অবস্থান করতে সক্ষম হবেন, তবে বেশি দিন থাকার জন্য, কাজ করতে বা পড়াশোনা করার জন্য বা ব্যবসায়িক ভ্রমণের জন্য ভিসা বা পারমিটের প্রয়োজন হতে পারে।

ভ্রমণঃ
ইউকে নাগরিকরা এখনও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে গাড়ি চালাতে সক্ষম হবে তবে তাদের নিজস্ব গাড়ি নিলে গ্রিন কার্ড এবং জিবি স্টিকার লাগবে। পোষা পাসপোর্ট স্কিম আর বৈধ হবে না। পরিবর্তে, ইইউ বা উত্তর আয়ারল্যান্ডে ভ্রমণের আগে মালিকদের উপযুক্ত টিকা এবং একটি পশু স্বাস্থ্যের প্রশংসাপত্র গ্রহণ করতে হবে।

ইইউ, আইসল্যান্ড, লিচেনস্টেইন এবং নরওয়ে জুড়ে ফ্রি মোবাইল ফোনের রোমিংয়ের গ্যারান্টিটি শেষ হবে, তাই কোনও সম্ভাব্য চার্জ সম্পর্কে জানতে ভ্রমণকারীদের তাদের ফোন অপারেটরের সাথে চেক করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ইইউ দেশে ইতোমধ্যে বসবাসরত ইউকে

নাগরিকদের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে সরানো ইউরোপীয় নাগরিকদের প্রত্যাহার চুক্তির অধীনে কিছু নির্দিষ্ট সুরক্ষা রয়েছে, যদিও তাদের দেশের নিয়ম অনুসারে আবাসনের জন্য আবেদন করতে হতে পারে। ব্রিটিশ নাগরিকদের ১ জানুয়ারির পরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছেন, স্থানান্তরের সময় শেষ হয়ে গেলে ইইউতে বাস করার এবং কাজ করার স্বয়ংক্রিয় অধিকার বন্ধ হয়ে যাবে। এর অর্থ তাদের সেই দেশের অভিবাসন বিধি মেনে আবেদন করতে হবে।

ইমিগ্রেশনঃআইরিশকে বাদ দিয়ে, যুক্তরাজ্যে কাজ করতে, বাস করতে বা পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক সমস্ত বিদেশী নাগরিকের জন্য পয়েন্ট-ভিত্তিক অভিবাসন ব্যবস্থা চালু করা হবে। এটি ইইউ এবং ইইউ-বহির্ভুত ইউনিয়ন নাগরিকদের সাথে সমান আচরণ করবে এবং সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে এমন লোকদের আকর্ষণ করা।

ইউকেতে বসবাসরত ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকরাঃ
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আইসল্যান্ড, লিচেনস্টাইন, নরওয়ে এবং সুইজারল্যান্ডের যারা ইউকেতে বাস করছেন তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বন্দোবস্ত প্রকল্পে জুনের আগে নিবন্ধন করতে হবে ।

সফল আবেদনকারীরা যুক্তরাজ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য বসবাস ও কাজ চালিয়ে যাওয়ার অধিকার মঞ্জুর করে। যে ব্যক্তিরা পাঁচ বছরে দেশে অবিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করেছেন তারা স্থিতাবস্থার মর্যাদা অর্জন করতে পারবেন, তবে পাঁচ বছরের কম বয়সী বসবাসকারি লোকেরা পূর্ব-নিষ্পত্তির মর্যাদার জন্য যোগ্য হওয়া উচিত, যা পরে স্থায়ী স্থিতিতে রূপান্তরিত হতে পারে।

ইইউ-এর প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেছেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তাদের একটি ‘ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ’ চুক্তি হয়েছে। ব্রাসেলসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এটি ছিল একটি দীর্ঘ ও ঝড়-ঝঞ্ঝাপূর্ণ পথ। কিন্তু আমরা একটি ভালো চুক্তিই পেয়েছি।’

ব্রেক্সিটের পর ব্রিটিশ জল সীমায় মাছ ধরার অধিকার এবং ব্যবসার উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রায় এক বছর দেন-দরবারের পর অবশেষে ইউকে এবং ইইউ’র মধ্যে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্রিটেন তার আইন এবং সার্বভৌমত্বের নিয়ন্ত্রণ নিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ।