বাংলাদেশকে হারিয়ে সমতায় ফিরলো জিম্বাবুয়ে

Published: 23 July 2021

বিশেষ সংবাদদাতা :


সিরিজে প্রথম জয়ের স্বাদ পেলো জিম্বাবুয়ে। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের রোমাঞ্চ টেনে নিলো তারা শেষ ম্যাচে। শুক্রবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ২৩ রানের জয় দিয়ে সিরিজে সমতায় ফিরলো স্বাগতিকরা। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আগে ব্যাটিং শেষে বাংলাদেশকে ১৬৭ রানের টার্গেট দেয় জিম্বাবুয়ে। জবাবে ইনিংসের ১ বল বাকি রেখে ১৪৩ রানে অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা । রোববার একই ভেন্যুতে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে দু’দল। প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। সফরে এর আগে একমাত্র টেস্ট ও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৩-০তে জয় পায় টাইগাররা।

 

শততম টি-টোয়েন্টি জয়ে অনবদ্য ভূমিকা ছিল দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ নাঈমের। কিন্তু দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে হতাশ করেন দুজনেই। ১৬৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৭ রানেই ফিরে যান দু’জন। পেসার ব্লেসিং মুজারাবানির তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে নাঈম ফেরেন ৫ রানে। একই ওভারের চতুর্থ বলে মুজারাবানির শিকার হন সৌম্য সরকার। শট খেলতে গিয়ে কভারে ক্যাচ উঠিয়ে তিনি ফিরেছেন মাত্র ৮ রানে। পাওয়ার প্লেতে পর্যাপ্ত রান তুলে দিলেও সাকিব সপ্তম ওভারে বিপদ ডেকে আনেন বেশি বাইরে এসে খেলতে গিয়ে। বামহাতি স্পিনার মাসাকাদজার বলে ক্যাচ তুলে দেন কভারে। সাকিব বিদায় নেন ১০ বলে ১২ রানে। এর পর শট খেলার লোভ সামলাতে না পেরে বিপদটা আরও বাড়িয়ে দিয়ে যান অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মাসাকাদজার বলে ক্যাচ দেন লং অনে। টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের সংগ্রহ ছিল মাত্র ৪ রান। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটারের বিদায়ে থিতু হবেন কি, উল্টো দলকে শঙ্কায় ফেলে দেন মেহেদী। সেই মাসাকাদজার স্পিনে মেহেদী (১৫) ক্যাচ উঠিয়ে দেন লং অফে। টি-টোয়েন্টিতে যে সোহানকে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল তার ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারলেন না দলের বিপদের সময়। ডিপ পয়েন্টে তিনিও ক্যাচ তুলে ফিরেছেন মাত্র ৯ রানে। তবে আফিফ হোসনকে নিয়ে অভিষিক্ত শামীম পাটোয়ারী দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দেন। মাধভেরের করা ইনিংসের ১৫তম ওভারে ১৬ রান করে আশা জাগান এই অলরান্ডার। তবে সেই আশা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ১৩ বলে ২৯ রান করে লুক জংওয়ের বলে মাসাকাদাজার তালুবন্দি হন শামীম। এররপর সাইফুদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে লড়াইয়ের চেষ্টা করেন আফিফ। ২৪ বলে ২৪ রান করে আফিফ বিদায় নিলে শেষ চেষ্টাও বৃথা হয় বাংলাদেশের।
এর আগে টানা দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ব্যাটিং নেয় জিম্বাবুয়ে। শুরু থেকে বাংলাদেশি বোলারদের সামনে সেভাবে পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়নি স্বাগতিকদের। বরং তারা পাওয়ার প্লের ফায়দা লুটে নেয় ভালোভাবে। তবে সব কিছুই সম্ভব হয় ওয়েসলি মাধভেরের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে। এক প্রান্তে ওয়েসলি মাধভের আক্রমণ শাণালেও আরেক ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানি ছিলেন বাক্সবন্দি। দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসেই তাকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন অফস্পিনার মেহেদী হাসান। বোল্ড করেন মারুমানিকে (৩)। তাতেও অবশ্য স্বাগতিকদের স্কোরবোর্ড থেমে থাকেনি। মাধভেরের কল্যাণে ছুটতে থাকে রানের চাকা। সঙ্গী রেজিস চাকাভা সৌভাগ্য ক্রমে ক্যাচ দিয়ে বাঁচলেও সাকিব আল হাসানের পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আর শেষ রক্ষা হয়নি তার। এবার তার ক্যাচ ঠিকই লুফে নেন শরিফুল ইসলাম। চাকাভা ফেরেন ১৪ রানে। এর পর রান আউটের সুবর্ণ সুযোগ মিস করে বাংলাদেশ। তাসকিনের ১০.২ ওভারে মায়ার্স রান নিতে গিয়ে একটু দেরি করে ফেললে তাকে আউটের সুযোগ ছিল নাইমের। কিন্তু তার থ্রো স্টাম্পে আঘাত হানতে পারেনি। প্রথম ১০ ওভারে ৭৭ রান তুলেছিল স্বাগতিকরা। শেষ ১০ ওভারে তোলে ৮৯ রান। তাতে বড় কৃতিত্ব শেষের ব্যাটসম্যান রায়ান বার্লের। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সাইফুদ্দিনের ১৯তম ওভারে করেন ১৬ রান। শেষ ওভারেই শরিফুলকে উড়ান ছক্কা। তার ছোট্ট ক্যামিও ইনিংসটি ছিল ১৯ বলে ৩৪ রানের। ২টি করে চার-ছক্কা মারেন তিনি। মাধভেরের ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরির ইনিংসটি ছিল ৫৭ বলে ৭৩ রানের। ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজান ইনিংসটি। বাংলাদেশের শরিফুল তিনটি, সাকিব ও মাহাদি হাসান একটি করে উইকেট নেন। অভিষিক্ত শামীম পাটোয়ারী থাকেন উইকেটশূন্য।