গেইলের হাসির পেছনে দুঃখ

Published: 8 November 2021

পোস্ট ডেস্ক :


এবারের টি ২০ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টানার ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন ডুয়ানে ব্রাভো। শনিবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্রাভোর বিদায়ি ম্যাচে আরেক ক্যারিবীয় গ্রেট ক্রিস গেইলের কাণ্ড-কীর্তি দেখে সবাই ধরে নিয়েছিলেন, ইউনিভার্স বসও অবসর নিতে যাচ্ছেন।

ব্রাভোর মতোই আউট হওয়ার পর ব্যাট উঁচিয়ে মাঠ ছেড়েছেন গেইল। ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষের দেওয়া গার্ড অব অনারও নিয়েছেন হাসিমুখে। সবকিছুতেই ফুটে ওঠে বিদায়ের লক্ষণ। কিন্তু মুখ ফুটে তো সেটা বলতে হবে! অবসরের অনুমিত সেই ঘোষণা শেষ পর্যন্ত আসেনি। ছোটগল্পের সংজ্ঞার মতোই শেষ হয়েও ‘হইল না শেষ’।

পরে ফেসবুক লাইভে নিজের পরিকল্পনা খোলাসা করেন ৪২ বছর বয়সি মহাতারকা। জন্মভূমি জ্যামাইকায় দেশের মানুষের সামনে বিদায়ি ম্যাচ খেলে অবসর নিতে চান তিনি। সেই সুযোগ না পেলে এখানেই সমাপ্তি। তবে কৌতুক-মজা-মাস্তি করা ছাড়া যে তিনি বেশিক্ষণ থাকতে পারেন না, সেটিও আরেকবার বুঝিয়ে দিলেন গেইল, ‘আমি তো আরেকটি বিশ্বকাপ খেলতে চাই। তবে মনে হয় না তারা আমাকে খেলতে দেবে!’ এবারের বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচে গেইলের প্রাপ্তি সাকুল্যে ৪৫ রান। পাঁচ ম্যাচের চারটিতে হেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও ঘটেছে ভরাডুবি। টি ২০ র‌্যাংকিংয়ে নয়ে নেমে যাওয়ায় পরের বিশ্বকাপে তাদের খেলতে হবে প্রথম রাউন্ডে। অবসরের পরিকল্পনা জানাতে গিয়ে এসব নিয়ে হতাশাও ঝরেছে গেইলের কণ্ঠে, ‘আমি শুধু উপভোগ করার চেষ্টা করেছি। আমাদের জন্য বিশ্বকাপ হতাশার হয়ে রইল। সম্ভবত এটি সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ আমার। তবে এসব ক্রিকেটে হয়ই। যা হয়েছে, সবকিছু একপাশে সরিয়ে রেখে মজা করার চেষ্টা করেছি।

যেহেতু এটা বিশ্বকাপে আমার শেষ ম্যাচ ছিল। অসাধারণ এক ক্যারিয়ার আমার। সত্যি বলতে, আমি অবসর ঘোষণা করিনি। তারা যদি আমাকে জ্যামাইকায় ঘরের দর্শকদের সামনে আরেকটি ম্যাচ খেলার সুযোগ দেয়, তাহলে বলতে পারি, সবাইকে ধন্যবাদ। দেখা যাক, সেই সুযোগ পাই কি না। যদি না পাই, আমি ব্রাভোর মতোই অবসরের ঘোষণা দেব এবং সবাইকে আমাদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাব। কিন্তু এখনই আমি অবসরের ঘোষণা দিচ্ছি না।’ ২২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অনেক উত্থান-পতন দেখেছেন গেইল।

সব সময় যাকে মনে হয় আমুদে, সেই তিনি শোনালেন আবেগ-অনুভূতির কথাও, ‘অনেক লড়াই করতে হয়েছে আমাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের জন্য অনেক ঘাম, শ্রম, রক্ত ও অশ্রু ঝরিয়ে, এক হাতে খেলে, এক পায়ে এগিয়ে এখনো ব্যাটিং করছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতি আমার আবেগ তীব্র।’ তিনি যোগ করেন, ‘ম্যাচ হারলে ভীষণ কষ্ট পাই। সমর্থকরা আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমি বিনোদনদায়ী। বিনোদন দিতে না পারলে খুবই খারাপ লাগে। প্রতিক্রিয়া দেখে হয়তো বোঝা যায় না, ওসবের প্রকাশ আমি করি না। কিন্তু ভেতরে ভেতরে কষ্ট পাই। যেমন এই বিশ্বকাপেও পেয়েছি।’