আমাদের বিজয়কে কেউ যাতে ছিনিয়ে নিতে না পারে সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে : ফখরুল
বিশেষ সংবাদদাতা :
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরবলেন, আমাদের বিজয়কে কেউ যাতে ছিনিয়ে নিতে না পারে সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।আমরা একটি মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই, সাম্যের রাষ্ট্র গড়তে চাই। আমাদের এই বিজয়কে নস্যাৎ করতে যারা কাজ করছে তারা তাদেরই প্রেতাত্মা।
বুধবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির আয়োজিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানাব, কোনো বিলম্ব না করে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন করুন। কোনো বিলম্ব না করে। এই সরকার যারা হবেন, তারা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করবেন; সেই ব্যবস্থা তারা করবেন এবং এর জন্য পূর্ণ সহযোগিতা আমরা তাকে দেব।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেসব হামলা বা ভাঙচুর হচ্ছে, তারা বিএনপির লোক নয় দাবি করে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এ বিজয় আপনাদের সকলের। এ বিজয় ছাত্রদের, এ বিজয় আপনাদের। যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, এটাকে রক্ষা করতে সবাই সচেতন থাকবেন। চক্রান্তকারীরা নতুন করে চক্রান্ত করতে পারে। তারা বিজয়কে বিলিয়ে দিতে পারে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে। সেই সুযোগ যেন আমরা তাদের না দিই। যারা এসব করছে তারা দেশের শক্র। এরা কোনো আন্দোলনকারী হতে পারে না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের প্রায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীদের সরকার বন্দি করেছিল। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতা যখন আন্দোলন করেছিল, আমরা তাদের সমর্থন জানিয়েছিলাম। এর পর থেকে ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের ১১ হাজার নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু সব কিছু পেরিয়ে বাংলার ছাত্রজনতা বিজয় কেড়ে নিয়ে এসেছে। এই বিজয় ছাত্রজনতা ও নেতাকর্মীদের।
নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা কোনো আগুন দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত হবেন না। ক্ষোভ প্রকাশ করে আইন হাতে তুলে নেবেন না। যারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকবে, দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইবে তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।
তিনি বলেন, যারা আজকে বিভিন্ন এলাকায়, বিভিন্ন শহরে বন্দরে ভাঙচুর করছে, লুটপাট করছে তারা কেউ আমাদের দলের লোক নয়। তারা ছাত্রদের কেউ না। তারা দুর্বৃত্ত, দুষ্কৃতকারী। এটা তাদেরই লোক যারা এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়। সজাগ থাকবেন, সাবধান থাকবেন। বার বার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এ বিজয় যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে।
নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিএনপি সহমত পোষণ করে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দলের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনে আমরা সহযোগিতা করেছি। আমরা একাত্মতা প্রকাশ করেছিলাম। যার কারণে আমাদের ১১ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা ছাত্রদের সঙ্গে একমত। আমরা নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাই। আমরা ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, সাম্য এবং কল্যাণমূলক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাই। আমরা এ ব্যাপারে ছাত্রদের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। আমরা তাদের বক্তব্য সমর্থন করছি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। সামনের দিনগুলোতে নিজেদের সুসংহত রেখে সাহসিকতার সঙ্গে কোনো হিংসা নয়, প্রতিশোধ নয়। ছাত্র আন্দোলন, জনতার এ আন্দোলনের যেন ব্যত্যয় না ঘটে পরবর্তীতে তার দিকে দৃষ্টি রাখবেন সবাই।
এ সময় সদ্য পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, পালিয়ে গেছে স্বৈরাচার। পদত্যাগ করেছে।