সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিম গ্রেফতার
বিশেষ সংবাদদাতা :
ঢাকা-৭ সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে রাজধানীর বংশাল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মো. রবিউল হোসেন ভুঁইয়া।
তিনি বলেন, হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে পুলিশ খুঁজছিল। মধ্যরাতে তাকে বংশাল এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, হাজী সেলিমকে গ্রেফতারের পর ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি সেখানেই রাতে থাকবেন। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) তাকে আদালতে তুলে রিমান্ড চাইবে পুলিশ।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এই আন্দোলনে দেশজুড়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী এবং পুলিশের গুলিতে হাজারের কাছাকাছি মানুষ নিহত হন। এসব ঘটনায় ইতোমধ্যে সারাদেশে কয়েক শ মামলা হয়েছে। সেই মামলায় আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, এমপি ও নেতাদের। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেফতার হয়েছেন। বাকিরাও আছেন গা ঢাকা দিয়ে। কেউ কেউ দেশ ছেড়ে চলেও গেছেন।
পুরান ঢাকার রাজনীতিতে প্রায় তিন দশক ধরে হাজী সেলিমের একচ্ছত্র প্রভাব। তার রাজনীতির উত্থান মূলত বিএনপি থেকে। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি ছিলেন অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের বিএনপিপন্থী কমিশনার। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং ১৯৯৬ সালে ঢাকা-৮ (তৎকালীন) আসনের সংসদ সদস্য হন। তবে প্রথমবার সংসদ সদস্য হয়েই নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচিত-সমালোচিত হন তিনি। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নাসির উদ্দিন পিন্টুর কাছে পরাজিত হন।
হাজী সেলিম ও তার স্ত্রী গুলশান আরার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মাসে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এক-এগারোর সরকারের সময় তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে আবার দেশে ফিরেন হাজী সেলিম। রাজনীতিতেও প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন।
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ তাকে মনোনয়ন দেয়নি। ঢাকা-৭ আসনে নৌকার মনোনয়ন পান মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। তবে সেই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করেন। এতে দলে তার গুরুত্ব বাড়ে। ২০১৮ সালে আবারও আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন হাজী সেলিম। তবে ২০২৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি। তার স্থলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ছেলে সোলায়মান সেলিম।