ইমরানের আরও ৬০ সমর্থককে কারাদণ্ড দিল পাকিস্তানের সামরিক আদালত

Published: 27 December 2024

পোস্ট ডেস্ক :


পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) ৬০ সমর্থককে কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। সামরিক স্থাপনাতে হামলার অভিযোগে বৃহস্পতিবার এ শাস্তি দেয়া হয়েছে তাদের। এ খবর দিয়েছে ভয়েস অফ আমেরিকা। এতে বলা হয়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা জানিয়েছে দোষী সাব্যস্তদের মধ্যে রয়েছেন ৭২ বছর বয়সী ইমরানের এক ভাগনে এবং দুজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা। ২০২৩ সালের আগস্ট থেকেই ইমরান খান কারাগারে বন্দি রয়েছেন এবং দুর্নীতি, উসকানি প্রদান ও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লোকজনকে ক্ষেপিয়ে তোলাসহ একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি। সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা এবং রাষ্ট্রের অলঙ্ঘনীয় আইন যাতে রক্ষা করা যায় সেটি নিশ্চিত করতে দেশ, সরকার ও সেনাবাহিনী তাদের অঙ্গীকারে অবিচলিত রয়েছে। এই শাস্তি প্রদানের এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে একই অভিযোগে সামরিক আদালত পিটিআইয়ের ২৫ জন সদস্যকে শাস্তি দেয়। খানের সমর্থকদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের পটভূমি হচ্ছে ২০২৩ সালের মে মাসে তাদের দেশব্যাপী প্রতিবাদ। সেই সময় বিক্ষোভকারীরা নজিরবিহীন ভাবে পাকিস্তানের এই শক্তিধর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জনরোষ প্রদর্শন করে যখন তারা বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনায় জোর করে প্রবেশ করে সেগুলো তছনছ করে দেয়। পিটিআই ‘গোপনীয়ভাবে’ এই সামরিক বিচারকে প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে। ইমরান খান ও তার সহযোগীরা কোন রকম অন্যায় করার কথা অস্বীকার করে বলেন গোয়েন্দারা পিটিআইয়ের ‘শান্তিপ্রিয়’ বিক্ষোভকারীদের ভেতরে গোপনে প্রবেশ করে বিরোধী দলের উপর রাষ্ট্রীয় অভিযান চালানোকে যৌক্তিকতা দিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। সরকার অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

 

গত সপ্তাহে ২৫ জন পিটিআই সদস্যকে ১০ বছরের জন্য যে ‘সশ্রম কারাদণ্ড’ দেয়া হয় তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে জোর দিয়ে বলেছে তাদের দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাজুয্য রেখে ন্যায় বিচারের অধিকারকে যেন তারা মর্যাদা দেয়। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, পাকিস্তানি অসামরিক নাগরিকদের সামরিক ট্রাইবুনালের শাস্তি প্রদান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। এই সামরিক আদালতগুলির বিচারিক স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা এবং যথার্থ প্রক্রিয়ার নিশ্চয়তা নেই। অসামরিক লোকজনকে সামরিক আদালতে বিচার করার সমালোচনা করেছে বৃটেন। দেশটি বলেছে, তাদের স্বচ্ছতা, স্বাধীন ভাবে যাচাই করতে পারে না এবং ন্যায় বিচারের অধিকারকে খর্ব করে। পাকিস্তানি অসামরিক লোকজনের সামরিক আদালতে বিচারের সমালোচনা করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটিকে, অসামরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি যার প্রতি পাকিস্তান দায়বদ্ধ তার সঙ্গে অসামঞ্জস্যমূলক বলে অভিহিত করেছে। পাকিস্তানের সরকার সামরিক বিচার ও তার ফলে অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার বিষয়টিকে এই বলে সমর্থন করেছে যে, এতে ন্যায্য বিচারের অধিকারকে সমুন্নত রাখা হয়েছে এবং সামরিক ট্রাইব্যুনাল ও বেসামরিক আদালতের কাছে আপিল করারও বিধান রয়েছে।