মণিপুরের সংঘর্ষে ইন্ধন দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী? ফরেন্সিক রিপোর্ট চাইলো সুপ্রিম কোর্ট
পোস্ট ডেস্ক :
২০২৩ সালের মে মাস থেকেই মেইতি ও কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভারতের মণিপুর রাজ্য। দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিল একাধিক বাড়িঘরে। হত্যা করা হয়েছিল প্রচুর মানুষকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেই সময় রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছিল। বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল ইন্টারনেট পরিষেবা। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা রাজ্যে।
সেই সময়ই অভিযোগ উঠেছিল মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং নাকি মণিপুরের গোষ্ঠী হিংসায় ইন্ধন দিয়েছিলেন। ঘটনার সূত্রপাত ছিল একটি অডিও টেপ। যা নিয়ে সেই সময় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল। কুকিদের দাবি ছিল ওই অডিও টেপে যে কণ্ঠস্বর রয়েছে তা মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং-এর। এবার সেই অডিও টেপ নিয়েই বড় পদক্ষেপ নিলো সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ টেপটি পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করে ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাররেটরিতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। আজ বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমার এবং প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হয়েছে।
শুনানির শুরুতেই বিচারপতি কুমার বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টে আসার পরেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের নিমন্ত্রণে তার বাড়িতে নৈশভোজে যোগ দিয়েছিলাম। আমি কি শুনানি থেকে সরে দাঁড়াব?’ মামলাকারীর আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানান, বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি হওয়া নিয়ে তার আপত্তি নেই! শুনানি শুরু হতেই প্রশান্ত দাবি করেন, বেসরকারি সংস্থা ‘ট্রুথ ল্যাব্স’-এর করা ফরেন্সিক পরীক্ষায় ওই অডিও টেপের কণ্ঠের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের কণ্ঠস্বরের শতকরা ৯৩ ভাগ মিল পাওয়া গিয়েছে। এর পরেই অডিও টেপটি সরকারি পরীক্ষাগার সিএফএসএল-র হাতে তুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
অডিওটির পুনরায় ফরেন্সিক পরীক্ষা করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে দ্রুত রিপোর্ট জমা দিতে হবে তাদের। গত বছরের শেষে অভিযোগ উঠেছিল মণিপুরের গোষ্ঠীসংঘর্ষে ইন্ধন দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর স্বীকারোক্তি একটি অডিও টেপও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল। এই বিষয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়ে কুকিদের একটি গোষ্ঠী সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। এর আগে এই মামলার শুনানি হয়েছিল তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে।