চীনে বিয়ের হারে ধস
পোস্ট ডেস্ক :
গত বছর চীনে বিবাহের হার এক-পঞ্চমাংশ হ্রাস পেয়েছে। বেইজিং সন্তান জন্মদানকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। বেসামরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে দেশটিতে ৬ দশমিক ১ মিলিয়ন দম্পতি বিবাহের জন্য নিবন্ধন করেছেন। যা আগের বছরের ৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন থেকে কম।
চীনে বিয়ে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাসের পাশাপাশি দেশটিতে টানা তৃতীয় বছরে সামগ্রিক জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। ২০২৪ সালে টানা তৃতীয় বছরের মতো তাদের জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পর এই পতন অব্যাহত রয়েছে।
দেশটি দ্রুত বয়স্ক জনগোষ্ঠী এবং ক্রমাগত নিম্ন জন্মহার নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
বেইজিং থেকে এএফপি জানায়, একসময় বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে পরিচিত চীন ২০২৩ সালে ভারতের পেছন পড়ে যায়। জন্মহার বাড়াতে বেইজিং ভর্তুকি এবং প্রজনন সহায়ক প্রচারণা চালাচ্ছে।
২০২৪ সালের শেষে চীনের জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৪০৮ বিলিয়নে, যা ২০২৩ সালের ১ দশমিক ৪১০ বিলিয়ন থেকে কম। চীনের ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন জনসংখ্যা এখন দ্রুত বৃদ্ধ হচ্ছে।
গত বছরের শেষের দিকে প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী।
জনসংখ্যার নিয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষ এখন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। চীন দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে তার বিশাল কর্মীবাহিনীর ওপর নির্ভর করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরে বেইজিং পরিবার-পন্থী প্রচারণা চালানো সত্ত্বেও বিবাহের হার হ্রাস পেয়েছে, যার মধ্যে ছিল বিভিন্ন ভর্তুকি এবং সন্তান ধারণের জন্য উৎসাহিত করা।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চ খরচ বিশেষ করে, শিক্ষা ও শিশু লালন-পালনে খরচ এবং কর্মসংস্থানে প্রতিযোগিতার কারণে বাবা-মা সন্তান নিতে চান না।
তথ্য সম্পর্কে একটি সংবাদ পোস্টের অধীনে চীনা মাইক্রোব্লগিং সাইট ওয়েইবোর একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘যদি আমি আমার বাবা-মায়ের সাহায্য না নেই, তাহলে আমার বাড়ি কেনার সামর্থ্য থাকবে না এবং বিয়ে করাও একটি বিশাল ব্যয় আমার জন্য।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘এই বছর হঠাৎ করে আমার মনে হচ্ছে অবিবাহিত থাকাও বেশ ভালো। খুব বেশি চাপ নেই, আমি শুধু নিজের জন্য অর্থ উপার্জন করি এবং ব্যয় করি।’
১৯৮০-এর দশকে জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেইজিং কঠোর ‘এক-সন্তান নীতি’ চালু করে। এই নীতিটি ২০১৬ তুলে নেওয়া হয়। ২০২১ সালে দম্পতিদের তিনটি সন্তান ধারণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তবে চীনের জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের লক্ষণ ইতিমধ্যেই দেখা দিতে শুরু করেছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে বিবাহ হ্রাসের ফলে আগামী বছরগুলোতে পেনশন এবং জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বেইজিং গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঘোষণা করেছিল, তারা ধীরে ধীরে অবসরের বয়সসীমা বাড়াবে।