১৪৪ ধারা জারি, পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা, গ্রেফতার-২
বড়লেখায় ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ১৫
বড়লেখা প্রতিনিধি : বড়লেখা পৌরসভা নির্বাচনে প্রচারণার জের ধরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে শহরের পাখিয়ালা চৌমুহনীতে দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটেছে।
এতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ৫ পুলিশ সদস্যসহ ১৫ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ২৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছে। শান্তি-শৃংখলা রক্ষায় রাত সাড়ে ১১টা থেকে বুধবার বেলা ২টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। বুধবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পৌর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন অব্যাহত থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই এসআই নজরুল ইসলাম ৯ জনের নামোল্লেখ ও ১৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম ফরহাদ ও তার চাচাতো ভাই রেহান আহমদকে গ্রেফতার করেছে।
জানা গেছে, ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী দলীয় মেয়রপ্রার্থীর বিপক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিল। এর জের ধরে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকের সাথে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছিল। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা শেষে পৌর শহরের পাখিয়ালা চৌমুহনীতে গেলে ছাত্রলীগ নেতা শিমুল আহমদের নেতৃত্বে তার ওপর হামলা চালানো হয়। এতে তার হাত কেটে যায়। হামলার খবরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মীরা পাখিয়ালায় জড়ো হন। এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় রাত ১১টা পর্যন্ত সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ২৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে থানার এসআই নজরুল ইসলাম, এসআই সুব্রত কুমার দাস, এএসআই আব্দুল হালিম, কনস্টেবল মেহেদি হাসান ও তোহেল আহমদ ছাড়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদসহ উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় শান্তি-শৃংখলা রক্ষায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত উপজেলা কমপ্লেক্স হতে বড়লেখা সরকারি ডিগ্রী কলেজ এলাকা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।
থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বুধবার সন্ধ্যায় জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ২৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় থানায় পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা হয়েছে এবং দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে উদ্ভুত পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ও সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে বুধবার বেলা ২টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স হতে বড়লেখা সরকারি কলেজ পর্যন্ত স্থানজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। দুপুর ২টা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ ছিল।’