হটস্পট দক্ষিণ এশিয়া, ভারতের প্রতিবেশীদের জন্য অশনি সংকেত

Published: 10 May 2021

পোস্ট ডেস্ক :


কিছুদিন ধরে করোনার নতুন হটস্পট দক্ষিণ এশিয়া। প্রতিদিনই শনাক্তের রেকর্ড হচ্ছে ভারতে। দেশটিতে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃত্যুর মিছিল চলছে। ভেঙে পড়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। এরইমধ্যে ভারতের প্রতিবেশী নেপালেও বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে যাদের করোনা টেস্ট করা হচ্ছে তাদের ৪০ ভাগের বেশি পজিটিভ আসছে। যা রীতিমতো আতঙ্কজনক।
তিন কোটির কিছু বেশি মানুষের দেশ নেপাল। এক মাস আগেও দেশটিতে করোনা পরিস্থিতি ছিল বেশ নিয়ন্ত্রণে। দৈনিক ১০০ জনের মতো করোনা শনাক্ত হচ্ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিনে গড়ে প্রতিদিন আট হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে নেপালের ১৮৮০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে।
বাংলাদেশে ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে ধরনের প্রাত্যহিক যোগাযোগ রয়েছে তাতে ভারতীয় ধরন আরো আগেই প্রবেশ করেছে। বর্তমানে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। যদিও কিছু কিছু লোক এরমধ্যেও ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। বাংলাদেশে বর্তমানে কড়াকড়ি না হলেও লকডাউন চলছে। এর প্রভাবেই হয়তো সংক্রমণ কিছুটা কমে এসেছে। তবে অনেকেই দেশে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা ব্যক্ত করছেন।
বিবিসি’র এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাকিস্তানেও করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। দেশটিতে বর্তমানে কোন ধরনের লকডাউন নেই। তবে কিছু কিছু অঞ্চলে কড়াকড়ি রয়েছে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ভারত, আফগানিস্তান এবং ইরান থেকে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। করোনা বাড়ছে আফগানিস্তানেও। শ্রীলঙ্কায়ও মধ্য এপ্রিল থেকে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। গত শুক্রবার দেশটিতে ১ হাজার ৮৯৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কড়া পদক্ষেপের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভারত থেকে দেশটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মালদ্বীপেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ ছয়শ’ ছাড়িয়েছে। ভারতের প্রতিবেশি এসব দেশে সংক্রমণ বাড়ার জন্য ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দায়ী কি-না তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। করোনার ভারতীয় ধরনে সংক্রমণের মাত্রা অত্যন্ত বেশি। গত সপ্তাহে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে ২৭ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এসময়ে মারা গেছেন ২৫ হাজারের বেশি মানুষ।
তবে সংক্রমণ বাড়ার পরও দক্ষিণ এশিয়ায় বাড়ছে না টিকা গ্রহণের হার। ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি অনেকটাই স্থবির হয়ে গেছে। প্রথম ডোজ টিকা দেয়া এরইমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও টিকা দেয়ার হার একেবারেই কম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতির উত্তোরণে টিকার বিকল্প নেই।