চীনে ৩ সন্তানের জন্ম দেওয়া বৈধ
পোস্ট ডেস্ক :
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ক্রমশ নিম্নগামী হওয়ায় শেষমেশ বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করল শি জিনপিংয়ের চীন। এখন থেকে ৩ সন্তানের জন্ম দেওয়াও বৈধ বলে স্বীকৃত হল দেশে। সদ্য চীনের আদমশুমারির ফল ঘোষণা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে যে গত দশকে চীনের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল সবচেয়ে কম। এমাসের গোড়ায় চীনের সর্বশেষ যে আদমশুমারির ফল ঘোষণা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে ২০০০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দশ বছর ধরে চীনের বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হল ০.৫৭ শতাংশ। দেশের মোট জনসংখ্যা ১৪১ কোটি। চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম শিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর বৈঠকে ৩ সন্তানের জন্মনীতি সংক্রান্ত প্রস্তাবে চূড়ান্ত সম্মতি দিয়েছেন প্রেসিডেট শি জিনপিং। এতদিন নিয়ম ছিল কোনও চীনা দম্পতি দুয়ের বেশি সন্তানের জন্ম দিতে পারবে না।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের নতুন প্রজন্ম অতীতের নিয়মেই এখন অভ্যস্ত, এমনকি বহু দম্পতি এমন রয়েছে যারা সন্তানই নিচ্ছে না। জনসংখ্যার বিস্ফোরণ রোধে ১৯৭৯ সালে চীন ‘এক সন্তান নীতি’ গ্রহণ করেছিল। শক্তহাতে ওই নীতি বাস্তবায়নের কারণে সরকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমিয়ে আনতে সক্ষমও হয়েছিল। কিন্তু পরে জন্মহার বেশি কমে যেতে থাকায় চীন এ নীতি থেকে সরে আসে। বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ায় কর্মক্ষেত্রে এর প্রভাব ঠেকাতে জনভারসাম্য রক্ষায় ২০১৬ সালেই চীন সরকার দম্পতিদের দুই সন্তান নেয়ার অনুমতি দেয়। তারপরও চীনে বাড়েনি জন্মহার। ২০১৮ সালে সন্তান জন্মের হার ছিল এ যাবৎকালের সর্বনিম্ন। দেশটিতে জন্মহার এখনও নিম্নমুখী। একই সঙ্গে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ায় বয়স্ক মানুষের সংখ্যা তরতর করে বাড়ছে। চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন বলছে, ২০২০ সাল নাগাদ শিশু জন্মের হার ১.৭ থেকে ২ কোটিতে পৌঁছায়। ২০৫০ সাল নাগাদ ৩ কোটি তরুণ যোগ দেবে চীনের জনশক্তিতে। এক সন্তান নীতির ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঠেকানো গেলেও একই সঙ্গে কমেছে তরুণ ও যুবকদের সংখ্যাও। অন্যদিকে চীনের জনশক্তিতে বেড়েছে বয়স্কদের সংখ্যা। তবে দুই সন্তান নীতি চীনের এ সমস্যার দ্রুতই কোনো সমাধান আনতে না পারায় এবার ৩ সন্তান নীতি প্রণয়ন হল শি জিনপিংয়ের দেশে ।