জুড়ীতে পলিতে ভরাট হওয়া নদীর ভুমি দখলের চেষ্টা ঠেকালো এলাকাবাসী

Published: 18 June 2021

বড়লেখা প্রতিনিধি :

নদীর পাড়ঘেঁষে থাকা বেশ কিছু জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসলের আবাদ করেন আশপাশের লোকজন। স্থানীয় একদল  লোক ওই জমি দখলের চেষ্টা চালান। এ সময় আশপাশের কয়েক জন নারী ছুটে গিয়ে তাদের বাধা দেন। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার সকালে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউপির উত্তর ভবানীপুর এলাকায় ঘটেছে।

উপজেলা ভূমি অফিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উত্তর ভবানীপুর গ্রামের পাশ দিয়ে জুড়ী নদী প্রবাহিত।  সেখানে ধামাই টি এস্টেট গার্ডেন শীলঘাট মৌজায় ৫৪১ নম্বর দাগে ৭ একর ৫০ শতক জমি নদী শ্রেণির রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২ একর পলিতে ভরাট হয়ে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে আশপাশের হতদরিদ্র লোকজন সেখানে বিভিন্ন ধরনের ফসলের আবাদ করে থাকেন। কয়েক দিন ধরে স্থানীয় একটি পক্ষ ওই জমি দখলের জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে ওই পক্ষের কিছু লোক জমিটি দখলের উদ্দেশে অস্থায়ীভাবে ঘর নির্মাণের জন্য টিন ও বাঁশ নিয়ে সেখানে যাচ্ছিলেন। টের পেয়ে জমির আশপাশের বাড়িঘরের ১৫-২০ জন নারী পথরোধ করে তাদের আটকান। খবর পেয়ে এর কিছু সময় পর জুড়ী থানার পুলিশের একটি দলও সেখানে পৌঁছে যায়। এর আগেই দখলের চেষ্টায় জড়িত লোকজন পালিয়ে যায়।

শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা আবেদা বেগম, সাজেদা বেগম, শেলি বেগমসহ আরও ৪-৫ জন মহিলা জানান, গত বুধবার উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ মোঈদ ফারুকের ছোট ভাই এলাকার বাসিন্দা যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এমএ  মোনেম মনু কয়েক জন লোক দিয়ে জমিটি মাপজোখ করতে যান। এ সময় তিনি জমিটি কিছু গরিব মানুষকে  দেওয়ার কথা বলেন। তারা অভিযোগ করেন, পরে শাহ আলম নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা লোকজনকে দিয়ে জমিটি দখলের চেষ্টা চালান। পরে বিষয়টি সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও থানার ওসিকে মুঠোফোনে জানানো হয়। এর  পেছনে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মদদ রয়েছে।

তবে শাহ আলম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কে বা কারা জমি দখলের চেষ্টা চালিয়েছে, সেটাও তার জানা নেই। তিনি কাজে বাইরে ছিলেন। পুলিশের ফোন পেয়ে ছুটে এসে তার ওপর অভিযোগ শুনে বিস্মিত হন বলে দাবি করেন।

ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, সরকারি জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ওই জমিটি নদীর। এটা বন্দোবস্ত দেওয়ার কোনো নিয়ম  নেই। দখলের চেষ্টার বিষয়টি তিনি জেনেছেন। জমির সীমানা চিহ্নিত করে এটা সরকারি সম্পত্তির কথা উল্লেখ করে  সেখানে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হবে।