রাজনগরে আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ওসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ

Published: 14 January 2022

বিশেষ প্রতিনিধি :

মৌলভীবাজারের রাজনগর থানার ওসি মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১৩ জানুয়ারি রাজনগর উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ওসির উপস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আইন শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা। রাজনগরের উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানদ্বয় ও ৮ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং মো. ফজলে কবির নামক জনৈক ব্যক্তি পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ গত ১০ ও ১৩ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে পাঠিয়েছেন। অভিযোগের অনুলিপি জেলা প্রশাসক, সিলেট রেঞ্জের পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারের কাছেও পাঠানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী পালন উপলক্ষে পোর্টিয়াস উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় ইউনিফর্মধারীদের স্যালুট প্রদানের নিয়ম থাকলেও রাজনগর থানার ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম তা করেননি। জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করে তিনি সোজা দাঁড়িয়ে থাকেন। এনিয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। থানায় মামলা নিতে বাদীর কাছে মোটা অংকের টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে। বিনা টাকায় মামলা রেকর্ড করেন না। পরে টাকা নেয়ার জন্য বাদী-বিবাদীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম থানায় যোগদানের পরপরই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে।

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর দেয়া মোহাম্মদ ফজলে কবিরের করা অভিযোগের বিষয়ে বৃহস্পতিবার উপজেলার আইনশ্ঙৃখলা কমিটির সভায় উঠে। তিনি তার অভিযোগে বলেন, বিগত ৪র্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান ও সদস্যপ্রার্থীদের কাছ থেকে পুলিশ প্রসাশনের সহায়তার আশ^াস দিয়ে মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করেছেন। উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় চুরি-ছিনতাই বেড়ে গেছে। বেড়ে গেছে মাদক ব্যবসাও। মাদক ব্যবসায়ীরাও মাসোহারা দিয়ে দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে বেচাকেনা। ওসির কার্যক্রম নিয়ে তুমুল আলোচনা করা হয়। সভায় তুলোধুনা করা হয় ওসি মোহাম্মদ নজুরুল ইসলামকে।

টেংরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু খান জানান, ওসি সাহেবের স্বেচ্ছাচারিতা, ঘুস বাণিজ্য সর্বজনবিধিত। আমার বাসায় হামলার ঘটনার মামলায় মূল আসামীদের গ্রেফতার না করে বাজারের ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে বাণিজ্য করছেন। আমি বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উত্থাপন করায় তিনি দাম্ভিকতা প্রদর্শন করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা নিবেন। নির্বাচনের সময় অনেক অভিযোগ পক্ষে বিপক্ষে হয়েছিল। এগুলো সমাধানও হয়ে গেছে। কিন্তু আমি শুনেছি আজ ১৫দিন পর আমার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা নিয়েছেন। তার কাছে সাধারণ মানুষ জিম্মি।

এ ব্যাপারে ওসি নজরুল ইসলাম জানান, অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তারা কোন উদ্দেশ্যে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন, তারাই ভালো বলতে পারেন। আমিতো কোন খারাপ কিছু করিনি। আইনশৃখলা কমিটির সভা সম্পর্কে বলেন, সেটা কমিটির সভাপতি বলতে পারবেন। রেজ্যুলেশন না পেলে কিছু বলতে পারবো না।