বড়লেখায় তরুণী হত্যা : মামলা পুনঃতদন্তে সিআইডিতে প্রেরণের নির্দেশ

Published: 7 February 2022

বড়লেখা প্রতিনিধি :

বড়লেখায় চাঞ্চল্যকর সাহিদা আক্তার সুলতানা (৩০) হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এজাহারনামীয় ৪ আসামীকে অব্যাহতি ও প্রধান আসামী লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস এর সাবেক কাউন্সিলর জয়নাল চৌধুরীকে হত্যায় অভিযুক্ত না করে আত্মহত্যা প্ররোচনায় অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। রোববার বাদির নারাজি আবেদনে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জিয়াউল হক অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য সিআইডিতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত ও হত্যা মামলার বাদি সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার রাইয়াপুর গ্রামের রব্বান মিয়ার তরুণী মেয়ে সাহিদা আক্তার সুলতানার সাথে লন্ডন প্রবাসী বড়লেখার পানিশাইল গ্রামের জয়নাল চৌধুরী (৫৫) মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। দেশে আসলে প্রায়ই তিনি সাহিদার বাড়িতে যাতায়াত ও মেলামেশা করতেন। ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী বিয়ের প্রলোভনে তিনি সাহিদাকে বড়লেখায় নিজের বাগান বাড়িতে নিয়ে যান। পরদিন সাহিদার বোনের কিশোর ছেলে নয়ন আহমদকে জয়নাল চৌধুরী অপহরণ করে বড়লেখায় নিয়ে আসেন। ওইদিন বিকেলে জয়নাল চৌধুরীর বাগান বাড়ির একটি কক্ষ থেকে পুলিশ সাহিদা আক্তার সুলতানার লাশ উদ্ধার। এর আগেই জয়নাল চৌধুরী কিশোর নয়ন আহমদকে সাথে নিয়ে সিলেট থেকে বিমানে ঢাকায় চলে যান এবং নয়নকে একটি হোটেলে রেখে তিনি লন্ডনে পাড়ি জমান।
এ ঘটনায় নিহত সাহিদার বাবা রব্বান মিয়া লন্ডন প্রবাসী জয়নাল চৌধুরী, ইকবাল হোসেন, ওয়াহিদুজ্জামান লিপু, সোয়া মিয়া ও রহমত আলীকে আসামী করে বড়লেখা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত বছরের ৯ মার্চ এ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার ওসি (তদন্ত) রতন চন্দ্র দেবনাথ প্রধান আসামী লন্ডন প্রবাসী জয়নাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচনায় অভিযুক্ত করে ও অন্যান্য আসামীদের মামলার দায় হতে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। মামলার ধার্য্য তারিখে রোববার দুপুরে চার্জশীটের ওপর শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। বাদির নারাজি পিটিশনে আদালত তা গ্রহণ না করে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য সিআইডিতে স্থানান্তরের আদেশ দেন।
মামলার বাদি রব্বান মিয়া অভিযোগ করেন, ‘লন্ডন প্রবাসী জয়নাল চৌধুরী পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। আমার বড় মেয়ের ১৪ বছরের কিশোর ছেলে নয়ন আহমদকেও সে অপহরণ করে। আমার মেয়েকে হত্যার পর ঘটনা গোপন রাখতে নাতিকে (নয়ন) জিম্মি করে বিমানে ঢাকায় নিয়ে যায়। তদন্ত কর্মকর্তা প্রভাবিত হয়ে এজাহারের ৪ আসামীকে অব্যাহতি দিয়েছেন। প্রধান আসামীকে বাঁচাতে হত্যার ঘটনাকে আত্মহত্যা বানিয়েছেন। অপহরণ ঘটনার ধারাটিই চার্জশীট থেকে কেটে ফেলেছেন। পক্ষপাতমুলক এ চার্জশীটের ওপর আদালতে নারাজি পিটিশন দিলে বিজ্ঞ আদালত তা গ্রহণ না করে পুনঃতদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন।
বড়লেখা আদালত পুলিশের জিআরও এসআই পিযুষ কান্তি দাস জানান, বাদির নারাজি পিটিশনে সাহিদা হত্যা মামলার চার্জশীট গ্রহণ করেননি আদালত। পুনঃতদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন।