২০২৪ সালে এলো দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স

Published: 4 January 2025

পোস্ট ডেস্ক :

সদ্য সমাপ্ত বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেকর্ড ২ হাজার ৬৮৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। এর আগে এত বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স কোনো বছরে আসেনি অর্থাৎ বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি এক বছরের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে প্রতি মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসছে।

 

তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এর আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার বা ২০.৫০ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৩ সালের ১২ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১৯২ কোটি ডলার। ২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২৬৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। একক মাসে এত বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স আগে কখনো আসেনি। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৬০ কোটি ডলার এসেছিল ওটাই ছিল একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এ ছাড়া আগের বছরের একই মাসের তুলনায় গত ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৬৫ কোটি ডলার বা ৩২.৫৫ শতাংশ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি কোটি ডলার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর থেকে প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে, যা বছরের শেষ মাস পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ফলে ২০২৪ সালের সার্বিক পুরো বছরে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে।
২০২৪ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স আসে ২১১ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ডলার, মার্চে ১৯৮ কোটি, এপ্রিলে ২০৪ কোটি, মে’তে ২২৫ কোটি, জুন মাসে ২৫৩ কোটি, জুলাইয়ে দেশে এসেছে ১৯১ কোটি ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি, অক্টোবরে ২৪০ কোটি, নভেম্বরে ২২০ কোটি এবং সবশেষ ডিসেম্বর মাসে এসেছে ২৬৪ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৬৮৯ কোটি ডলার, ২০২৩ সালে এসেছিল ২ হাজার ১৯২ কোটি ডলার, ২০২২ সালে আসে ২ হাজার ১২৯ কোটি, ২০২১ সালে ছিল ২ হাজার ২০৭ কোটি ডলার। ২০২৪ সালে রেমিট্যান্স আসে ২ হাজার ১৭৪ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৯ সালে আসে এক হাজার ৮৩৩ কোটি ডলার। এর আগে ২০১৮ সালে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৫৫৫ কোটি ডলার। ২০১৭ সালে এসেছিল এক হাজার ৩৫৩ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগের বছর ২০১৬ সালে ছিল এক হাজার ৩৬১ কোটি ডলার। ২০১৫ সালে এসেছে এক হাজার ৫৩১ কোটি ডলার। আর ২০১৪ সালে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৪৯২ কোটি ডলার।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রবাসী শ্রমিকদের একটি বড় অংশ ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তারা আগের সরকারের আমলে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাবেন না। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর তারা বৈধ চ্যানেল দিয়ে রেমিট্যান্স পাঠানোর ঘোষণা দেন। এরপর থেকে প্রতি মাসে ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরে ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ ৩৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার, অগ্রণী ২৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার, জনতা ১৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার, ব্র্যাক ব্যাংক ১৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার ও ট্রাস্ট ব্যাংক ১৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে।