বোরোর বাম্পার ফলন, বড়লেখায় ধান কাটার ধুম
আব্দুর রব, বড়লেখা থেকে :
বড়লেখায় বোরো ধান কাটার ধুম লেগেছে। মাঠের সোনালি ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কিষান-কিষানিরা। ধান ঘরে তোলা নিয়ে চারদিকে চলছে উৎসব আমেজ। বাতাসে পাকা ধানের ম-ম গন্ধ। হাকালুকি হাওরপারে বোরোর বাম্পার ফলনে কৃষকের মূখে বইছে আনন্দের হাসি। হাওরপারসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে।
এবার ২৫ হাজার মেট্রিক টন বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। তবে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
শিলবৃষ্টি, আগাম বন্যাসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগে বোরো ফসল যেন নষ্ট না হয়, সেজন্য দ্রুত ধান কাটার আহ্বান জানিয়ে হাওরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছে বড়লেখা উপজেলা কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখায় এবার ৪ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ হাজার মেট্টিক টন। বোরোর বেশিরভাগ আবাদ হয়েছে হাকালুকি হাওরপারের তালিমপুর, বর্ণি ও সুজানগর ইউনিয়ন এলাকায়। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখেও হাসি ফুটেছে।
এদিকে দ্রুত ধান কাটায় কৃষকদের উৎসাহ দিতে হাওরের বিভিন্ন এলাকায় ধান ক্ষেতে যান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ, ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দেবল সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এএসএম রাশেদুজ্জামান বিনহাফিজ, ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস, নছিব আলী প্রমুখ। এই সময় তারা কৃষকদের সাথে ধান কাটেন।
তালিমপুর ইউপির ডরের পার এলাকার কৃষক নকুল দাস জানান, ‘এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় ধান ভালো হয়েছে। গত বছর আড়াই কিয়ার ক্ষেত করছি। এবার তিন কিয়ার করছি। ভালো হয়েছে ধান। ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। এই জন্য দ্রুত ধান কাটছি।’
হাওর এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার বোরো ধান কাটার শ্রমিক সংকট নেই। তবে শ্রমিকের মজুরী বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দেবল সরকার জানান, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে বোরো ধান কাটা চলছে। ভাল ফলন হওয়ায় কৃষকরা অত্যন্ত খুশি। ইদিমধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। এবার কৃষক পর্যায়ে ধানের দাম ভালো আছে। কৃষকরা উপকৃত হবেন। দূর্যোগের আশংকা থাকায় মাঠে গিয়ে কৃষকদের দ্রুত ধান কাটা সম্পন্ন করতে পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রতিদিন মাইকিং করানো হচ্ছে। আশা করছেন ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হবে।’